দিল্লি, ১৪ ফেব্রুয়ারি : রাফাল চুক্তিতে বিনিয়োগ করার অর্থ আছে। কিন্তু, তাদের বকেয়া ৫৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করছে না। সুপ্রিম কোর্টে রিলায়েন্স গ্রুপের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলল টেলিকম যন্ত্রাংশ উৎপাদক সংস্থা এরিকসন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে অনিল আম্বানির সংস্থা।
রিলায়েন্স গ্রুপের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, দাদা মুকেশ আম্বানির সংস্থা রিলায়েন্স জিও-র সঙ্গে সম্পত্তি বিক্রির বিষয়টি ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, ওই তহবিলে তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। যে কারণে তাদের দেউলিয়া অবস্থা। এরিকসনের বকেয়া মেটানোর জন্য তারা সার্বিকভাবে চেষ্টা করেছে, কিন্তু ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি।
এদিকে আবমাননার অভিযোগ ওঠায় গতকাল আদালতে উপস্থিত থাকতে হয় অনিল আম্বানি, রিলায়েন্স টেলিকম চেয়ারম্যান সতীশ শেঠ এবং রিলায়েন্স ইনফ্রাটেল চেয়ারপার্সন ছায়া ভিরানিকে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনে বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিনিত সরনের বেঞ্চ। যদিও এখনও রায় ঘোষণা করেনি আদালত। এদিকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সরগরম হয়ে ওঠে আদালত। এরিকসনের তরফে আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে বলেন, "ওদের রাফালে বিনিয়োগ করার অর্থ আছে, কিন্তু আমাদের ৫৫০ কোটি বকেয়া টাকা মেটানোর ক্ষমতা নেই। ওরা সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করতে চায় না।"
যদিও অনিল আম্বানির তরফে আইনজীবী মুকুল রোহতগি দাবি করেন, শীর্ষ আদালতে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কোনও লঙ্ঘন হয়নি। এবং ন্যাশনাল কম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল গতবছর ৩০ মে যে নির্দেশ দিয়েছিল সেটা ছিল শর্তাধীন। এবং বলা হয়েছিল, যদি রিলায়েন্স গ্রুপ ১২০ দিনের মধ্যে এরিকসনকে ৫৫০ কোটি টাকা মেটাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়ে যাবে। এরিকসনকে ৫৫০ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়টি এখন রিলায়েন্স জিও-র কাছে সম্পত্তি বিক্রির উপর নির্ভর করছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, টাওয়ার এবং একাধিক পরিকাঠামো বিক্রির পর, কম্পানি ৭৮০ কোটি টাকা পেয়েছে। যেই টাকাটা সরাসরি চলে গেছে অ্যাসেটস মানিটাইজেশন এক্রো অ্যাকাউন্টে। যার দেখভাল করে SBI। ওই টাকা স্পেকট্রাম লাইসেন্স জিইয়ে রাখার জন্য বার্ষিক সাবসক্রিপশন বাবদ টেলিকম দপ্তর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রিলায়েন্স জিও-র কাছে ৯৭৫ কোটি টাকার স্পেকট্রাম বিক্রি করে এরিকসনের বকেয়া মেটানোর কথা। কিন্তু, সেই চুক্তি ফলপ্রসূ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আদালত মনে করলে এরকিসনকে টাকা দেওয়ার জন্য SBI-কে নির্দেশ দিতে পারে।
এদিকে সতীশ শেঠ এবং ছায়া ভিরানির তরফে আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, স্টক থেকে আমরা ২ শতাংশ লাভ করেছি বলে এরিকসন অভিযোগ করেছে, সেক্ষেত্রে জানাই ওইদিনই ১৫ হাজার কোটি টাকা হারিয়ে দেউলিয়া হয়েছি আমরা। প্রসঙ্গত, ২৩ অক্টোবর রিলায়েন্সকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১৮-র ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া মিটিয়ে দিতে। বকেয়া মেটাতে দেরি হলে প্রতি বছরে ১২ শতাংশ করে সুদ দিতে হবে।