দিল্লি, 3 এপ্রিল : কোরোনা মোকাবিলায় দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী । 5 এপ্রিল (রবিবার) রাত 9টায় 9 মিনিটের জন্য বৈদ্যুতিন আলো বন্ধ রাখার জন্য আবেদন জানান তিনি ।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বললেন, "আলো বন্ধ রাখুন রবিবার । রাত 9টায় 9 মিনিটের জন্য । হয় মোমবাতি জ্বালান, অথবা প্রদীপ, অথবা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালান ।"
দেশজুড়ে যে তিন সপ্তাহ ব্যাপী লকডাউন চলছে, তা ইতিমধ্যে ন'দিন পেরিয়ে গেছে । কোটি কোটি মানুষ ঘরবন্দী হয়ে রয়েছেন । আমাদের মধ্যে অনেকে এমনটা ভাবতেই পারেন যে, তাঁরা কোরোনার বিরুদ্ধে এই লড়াই একা একা কীভাবে লড়বেন ? কতদিনই বা চলবে এভাবে? দেশের আমজনতার মনের আনাচে কানাচে এখন ঘোরাফেরা করছে এমনই সব প্রশ্ন । কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সকল দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, "এটা লকডাউনের সময় ঠিকই । আমরা যে ঘরে আটকে রয়েছি, তাও ঠিক । কিন্তু মনে রাখবেন, আমাদের কেউ একা নই । 130 কোটি ভারতীয়র শক্তি আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আছে ।"
22 মার্চ প্রধানমন্ত্রী আহ্বানে জনতা কারফিউতে ব্যাপক সারা মিলেছিল গোটা দেশ থেকে । সেদিন বিকেল পাঁচটায় জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত যেসব মানুষরা কোরোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে নিজেদের সবটুকু উজার করে দিচ্ছেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানায় গোটা ভারত । প্রধানমন্ত্রী বলেন, " জনতা কারফিউ, ঘণ্টা বাজানো, বাসন বাজানো, এই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে গোটা দেশ জানিয়ে দিয়েছে, এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা একসঙ্গে রয়েছি । এই মডেল এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও অনুকরণ করছে ।"
জনতা কারফিউ ও বাসন, ঘণ্টা বাজানোর আহ্বানে ব্যাপক সাড়া মেলার পর এবার 5 এপ্রিল রবিবার রাত ন'টায় ন'মিনিটের জন্য ঘরের সব আলো বন্ধ রাখার আহ্বান জানান তিনি । তবে আগের বার দেশের বেশকিছু মানুষ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে অত্যুৎসাহী হয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েছিলেন ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে । এবার যাতে এমন কোনও ঘটনা আর না হয়, সেই আবেদনও করেন তিনি । বলেন, "রবিবার ওই সময়ে জমায়েত থেকে দূরে থাকুন । আপনাদের রাস্তায় বেড়িয়ে আসার, বা কলোনির মধ্যে বেড়িয়ে আসার দরকার নেই । আপনাদের ঘরের দরজার সামনে অথবা ব্যালকনি থেকেই এই যুদ্ধে সামিল হোন ।"
পাশাপাশি, লকডাউনের দিনগুলিতে যেভাবে প্রশাসন ও আমজনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী । বললেন, "আমাদের এখানে আমজনতাকে ঈশ্বরের স্থান দেওয়া হয় । জনতারূপী এই মহাশক্তি আমাদের মনোবল দেয়, লক্ষ্য ঠিক করে দেয় এবং সেই লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছানোর পথও দেখায় ।"
সরকারি হিসেব বলছে, দেশে এখনও পর্যন্ত ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছিল, এমন কমপক্ষে 155 জন সুস্থ হয়ে উঠেছে । চিকিৎসাধীন রয়েছে প্রায় 1800 মানুষ । সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে দেশের গরীব খেটে খাওয়া মানুষরা । এই কথা আগেও স্বীকার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । আজ নরেন্দ্র মোদির বার্তায় আরও একবার উঠে তাদের কথা । বললেন, " কোরোনার কারণে সবথেকে বেশি নৈরাশ্যে রয়েছে দেশের গরীব মানুষরা । তাদেরকে আবার আশার আলো দেখাব আমরা । কোরোনার কারণে যে অন্ধকারময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে আমরা আবার আলোর দিশায় এগোব ।"