ওড়িশার আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা ময়ূরভঞ্জের ড. দময়ন্তী বেসরাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে ৷ তাঁর পদ্মশ্রী প্রাপ্তির ঘোষণার পর নারী দিবস নিয়ে ড. দময়ন্তী বেসরার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি মৃত্যুঞ্জয় সেনাপতি ৷
রাষ্ট্রপতি হয়ত ড. দময়ন্তী বেসরাকে একজন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ হিসেবেই পদ্মশ্রী পুরস্কার দেবেন ৷ কিন্তু সাঁওতালি ভাষা নিয়ে তাঁর গবেষণা, পাণ্ডিত্য, কবিতা ও লেখা নিয়েও তিনি সমানভাবে বিখ্যাত হয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তিনি ওড়িয়া ভাষা নিয়েও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন ৷ ড. বেসরা জানিয়েছেন, শৈশব থেকেই তিনি সাঁওতালি এবং ওড়িয়া ভাষায় লেখালেখি শুরু করেন ৷ কিন্তু তাঁর বিয়ের পরই সেগুলো বই আকারে ছাপা হয় ৷ তাঁর এই সাফল্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তিনি বরাবর তাঁর পরিবার এবং স্বামীর কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেয়ে এসেছেন ৷
তাঁর কথায়, যেহেতু তিনি একটি আদিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই তাঁকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল ৷ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, একজন নারীর উচিত সবসময় নিজেকে দুর্বল না ভেবে জীবনে এগিয়ে চলা ৷ ড. দময়ন্তী বেসরা জানান, তিনি কখনওই ভাবেননি যে ভবিষ্যতে তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করছে ৷ বরং তিনি বর্তমানের কথা ভেবেই জীবনে বেঁচেছেন ৷ তিনি জানান, আদিবাসী মহিলারা যেহেতু শিক্ষা থেকে এখনও অনেক দূরে, তাই তাঁদেরকে এখনই শিক্ষার আলোয় আনা খুব জরুরি ৷
সাঁওতালি ভাষায় বই লেখা এবং সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদের কাজ করার জন্য 2010 সালে ড. দময়ন্তী বেসরাকে কেন্দ্রীয় সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল ৷ তাঁর পুরস্কার পাওয়া দু’টো গবেষণা - পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু এবং ‘চাইচেম্পিরু ইনজি দিশন’ প্রকাশিত হয়েছে ৷ এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে সাঁওতালি ভাষায় লেখা কবিতা সমগ্র, প্রবন্ধ, সমালোচনামূলক বই, ব্যকরণ এবং সাঁওতালি ভাষার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ৷ ড. দময়ন্তী বেসরা এখন মহারাজা পূর্ণচন্দ্র স্বশাসিত মহাবিদ্যালয়ে একজন সাহিত্যিক এবং ওড়িয়া বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজ করছেন ৷ 1962 সালের 18 ফেব্রুয়ারি আদিবাসী অধ্যুষিত ময়ূরভঞ্জ জেলার রাইরংপুর মহকুমার চোবেইজোড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ৷ বাবা রাজমালি মাঝি ও মা পুঙ্গি মাঝি ৷ ময়ূরভঞ্জ জেলার প্রথম আদিবাসী হিসেবে ড. দময়ন্তী বেসরা পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত হতে চলেছেন ৷