ETV Bharat / bharat

মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দিতে হবে, মকুব করতে হবে ঋণ; রাহুলকে পরামর্শ অভিজিতের - কোরোনা

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি । অর্থনীতির হাল ফেরাতে ছোটো শিল্পের উপর জোর দেওয়ার কথা বলেন অভিজিৎ । পাশাপাশি ঋণ মকুব, সাধারণ মানুষের অ্য়াকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার ও আকর্ষণীয় অর্থ প্যাকেজের বিষয়ে পরামর্শ দেন তিনি ।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : May 5, 2020, 10:17 AM IST

Updated : May 5, 2020, 1:45 PM IST

দিল্লি, 5 মে : দিল্লি, 5 মে : কোরোনার জেরে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি । পড়েছে শেয়ার বাজার । এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতি চাঙা করতে কী পদক্ষেপ করা যায়, সে নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি । গত সপ্তাহে তিনি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলোচনা করেন । এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় । লকডাউনের জেরে ভারতে পড়তে থাকা অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তাঁর পরামর্শ, "বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দিতে হবে । এক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে । পাশাপাশি ঋণ মকুবেরও ব্যবস্থা করতে হবে । এই সময় সকলের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া খুব জরুরি । তাই যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদের জন্য অস্থায়ী রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হোক ।"

ব্য়াঙ্ক ব্যবস্থা, রেশন বণ্টন, ছোটো শিল্প, সাধারণ মানুষকে আর্থিক সাহায্যসহ একাধিক বিষয়ে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয় রাহুল গান্ধির । দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একের পর এক ইশুতে কথা হয় তাঁদের । সেখানে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "লকডাউনে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু রাজ্য সরকারগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে । গরিবদের জন্য একাধিক নতুন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । পাশাপাশি ছোটো ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগপতিদের সাহায্য় করতে হবে ।"

দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, "এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন । আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন । কিন্তু যাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের কথা বেশি ভাবতে হবে । এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাতে হবে ।" পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, দেশের নিচুতলার 60 শতাংশ মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেওয়া যেতে পারে । কেন্দ্রের তরফে গরিবদের জন্য কিছু বিশেষ যোজনা চালু করা দরকার । পাশাপাশি রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে । গরিব মানুষদেরকে সরাসরি সাহায্য় করতে তাদের । এরপরই ইন্দোনেশিয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়ার সরকার সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দিচ্ছে । এদিকে আমাদের দেশে আজও এমন কিছু যোজনা রয়েছে যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্তরের সমস্ত মানুষ যুক্ত হতে পারেননি । এই সময়ে আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে । শুধুমাত্র কিছু মানুষের কথা না ভেবে সবাইকে সাহায্য করতে হবে । কারণ এটাই বর্তমান সময়ের দাবি ।"

ব্যাঙ্ক পরিস্থিতি নিয়েও আজ অভিজিতের সঙ্গে আলোচনা করেন রাহুল গান্ধি । এবিষয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, "এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা, জাপান ও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির মতো কিছু আকর্ষণীয় আর্থিক প্যাকেজ চালু করতে হবে । MSME (ক্ষুদ্র,অতি ক্ষুদ্র এবং ছোটো শিল্প) সেক্টরে অর্থাৎ ছোটো ব্যবসায়ী এবং ছোটো ছোটো উদ্যোগপতিদের সাহায্য় করতে হবে । যেহেতু লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্যবসার অবস্থা শোচনীয় তাই এই মুহূর্তে তাঁদের আর্থিক সাহায্য দিয়ে ফের বাঁচিয়ে তোলা খুব জরুরি । পাশাপাশি আগামী তিন মাসের জন্য তাঁদের ঋণ মকুব করার ব্যবস্থা করতে হবে ।"

আর্থিক পরিস্থিতির পাশাপাশি লকডাউন নিয়েও রাহুল গান্ধির সঙ্গে আলোচনা হয় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের । রাহুল গান্ধি বলেন, "যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে । কিন্তু তারপরও একটি যথাযথ পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে । নাহলে সমস্ত প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে যাবে ।" এপ্রসঙ্গে নোবেলজয়ীর বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে । লকডাউন বাড়িয়ে লাভ নেই । পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে । এছাড়াও লকডাউনের বিষয়ে রাজ্য়কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে ।

সবশেষে রাহুল বলেন, "রেশন কার্ড কম থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে রেশন পৌঁছাচ্ছে না । মানুষজন খেতে পাচ্ছেন না ।" এপ্রসঙ্গে নোবেলজয়ী পরামর্শ দেন, এই পরিস্থিতিতে সরকারের অস্থায়ী রেশনকার্ড করা উচিত । যা তিন মাস কার্যকর থাকবে । এবং প্রতিটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন কার্ড পাবেন ।

দিল্লি, 5 মে : দিল্লি, 5 মে : কোরোনার জেরে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি । পড়েছে শেয়ার বাজার । এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতি চাঙা করতে কী পদক্ষেপ করা যায়, সে নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি । গত সপ্তাহে তিনি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলোচনা করেন । এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় । লকডাউনের জেরে ভারতে পড়তে থাকা অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তাঁর পরামর্শ, "বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দিতে হবে । এক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে । পাশাপাশি ঋণ মকুবেরও ব্যবস্থা করতে হবে । এই সময় সকলের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া খুব জরুরি । তাই যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদের জন্য অস্থায়ী রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা হোক ।"

ব্য়াঙ্ক ব্যবস্থা, রেশন বণ্টন, ছোটো শিল্প, সাধারণ মানুষকে আর্থিক সাহায্যসহ একাধিক বিষয়ে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয় রাহুল গান্ধির । দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একের পর এক ইশুতে কথা হয় তাঁদের । সেখানে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "লকডাউনে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু রাজ্য সরকারগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে । গরিবদের জন্য একাধিক নতুন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । পাশাপাশি ছোটো ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগপতিদের সাহায্য় করতে হবে ।"

দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, "এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন । আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন । কিন্তু যাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের কথা বেশি ভাবতে হবে । এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাতে হবে ।" পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, দেশের নিচুতলার 60 শতাংশ মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেওয়া যেতে পারে । কেন্দ্রের তরফে গরিবদের জন্য কিছু বিশেষ যোজনা চালু করা দরকার । পাশাপাশি রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে । গরিব মানুষদেরকে সরাসরি সাহায্য় করতে তাদের । এরপরই ইন্দোনেশিয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়ার সরকার সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দিচ্ছে । এদিকে আমাদের দেশে আজও এমন কিছু যোজনা রয়েছে যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্তরের সমস্ত মানুষ যুক্ত হতে পারেননি । এই সময়ে আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে । শুধুমাত্র কিছু মানুষের কথা না ভেবে সবাইকে সাহায্য করতে হবে । কারণ এটাই বর্তমান সময়ের দাবি ।"

ব্যাঙ্ক পরিস্থিতি নিয়েও আজ অভিজিতের সঙ্গে আলোচনা করেন রাহুল গান্ধি । এবিষয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, "এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা, জাপান ও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির মতো কিছু আকর্ষণীয় আর্থিক প্যাকেজ চালু করতে হবে । MSME (ক্ষুদ্র,অতি ক্ষুদ্র এবং ছোটো শিল্প) সেক্টরে অর্থাৎ ছোটো ব্যবসায়ী এবং ছোটো ছোটো উদ্যোগপতিদের সাহায্য় করতে হবে । যেহেতু লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্যবসার অবস্থা শোচনীয় তাই এই মুহূর্তে তাঁদের আর্থিক সাহায্য দিয়ে ফের বাঁচিয়ে তোলা খুব জরুরি । পাশাপাশি আগামী তিন মাসের জন্য তাঁদের ঋণ মকুব করার ব্যবস্থা করতে হবে ।"

আর্থিক পরিস্থিতির পাশাপাশি লকডাউন নিয়েও রাহুল গান্ধির সঙ্গে আলোচনা হয় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের । রাহুল গান্ধি বলেন, "যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে । কিন্তু তারপরও একটি যথাযথ পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে । নাহলে সমস্ত প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে যাবে ।" এপ্রসঙ্গে নোবেলজয়ীর বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে । লকডাউন বাড়িয়ে লাভ নেই । পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে । এছাড়াও লকডাউনের বিষয়ে রাজ্য়কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে ।

সবশেষে রাহুল বলেন, "রেশন কার্ড কম থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে রেশন পৌঁছাচ্ছে না । মানুষজন খেতে পাচ্ছেন না ।" এপ্রসঙ্গে নোবেলজয়ী পরামর্শ দেন, এই পরিস্থিতিতে সরকারের অস্থায়ী রেশনকার্ড করা উচিত । যা তিন মাস কার্যকর থাকবে । এবং প্রতিটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন কার্ড পাবেন ।

Last Updated : May 5, 2020, 1:45 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.