দিল্লি, 2 জুন : জোর করে কোনও ভাষাকেই কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হবে না । ত্রি-ভাষা ইশু নিয়ে তামিলনাড়ুজুড়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে গতকাল এই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল ।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, "নয়া শিক্ষাব্যবস্থার খসড়া তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । কমিটি ত্রি-ভাষা ইশু নিয়ে আগে একটি রিপোর্ট জমা করেছে । সেটা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । কিন্তু এই রিপোর্টই নয়া ব্যবস্থা নয় । কোনও একটি ভাষা কোনও একটি রাজ্য বা প্রদেশে বাধ্যতামূলক করা হবে না ।" নয়া শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল আরও বলেন, "আমরা শুধুমাত্র একটি খসড়া রিপোর্ট পেয়েছি । সেটা নিয়ে জনসাধারণের কাছে মতামত চাওয়া হবে । তবে কোথাও একটা ভুল হয়েছে । অনেকে এই রিপোর্টকেই নতুন ব্যবস্থা হিসেবে ভুল করছেন ।"
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী আরও দাবি করেন, "আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও NDA-2 সরকারের সিদ্ধান্ত, ভারতের প্রতিটি ভাষাকেই যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং সেই ভাষাগুলোর বিকাশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।"
উল্লেখ্য, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরই নয়া শিক্ষাব্যবস্থা সংক্রান্ত একটি খসড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে পাঠায় শিক্ষা বিষয়ক কমিটি । কমিটির রিপোর্টে হিন্দির উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যে ক্লাস এইট পর্যন্ত হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয় । নয়া শিক্ষানীতি সম্পর্কিত এই রিপোর্ট কস্তুরীরাঙ্গন কমিটি কেন্দ্রীয়মন্ত্রকে জমা করে । তারপরই রিপোর্ট নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে ।
তামিলনাড়ুর DMK নেতা স্ট্যালিন বলেন, "কেন্দ্রের নয়া BJP সরকার একবারও ভাবছে না তামিলনাড়ুতে নয়া শিক্ষানীতির ফলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে । এরাজ্যে দ্বি-ভাষা সূত্রই প্রচলিত । কিন্তু BJP-সরকার এই মউচাকে ঢিল মারার কাজটি করতে চাইছে । ভবিষ্যতে এই ভুল নীতি বিপর্যয় ডেকে আনবে ।" এরই পাশাপাশি TNCC, MDMK- র মতো আঞ্চলিক দলের নেতারাও কেন্দ্রের এই নয়া শিক্ষানীতি সংক্রান্ত রিপোর্টের সমালোচনা করেছে ।
সমালোচনার ঝড় উঠতেই কেন্দ্রীয় শিক্ষাসচিব আর সুব্রমনিয়মও গতকাল জানান, শুধুমাত্র একটি খসড়া রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে জমা করেছে কমিটি । এটাই কেন্দ্রীয় নীতি নয় । এই নীতি সরকার এখনও ঘোষণা করেনি, এটা বিবেচনাধীন বিষয় । সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া জানার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।
এদিকে, কস্তুরীরাঙ্গন কমিটির রিপোর্টের সমালোচনা করে সোশাল মিডিয়ায় প্রচার চালানো হয় । যেখানে বলা হয়, তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দিকে কখনওই কোনও স্কুলে বাধ্যতামূলক করা উচিত নয় । টুইটারেও এর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ প্রতিক্রিয়া জমা পড়ে ।