পেরুম্বাভুর (কেরালা) , 16 নভেম্বর : বাসে উঠেই প্রায়ই চমকে যান যাত্রীরা ৷ বাসচালকের সিটের দিকে তাকিয়ে থাকেন ৷ এরকম সচরারচর দেখা যায় না ৷ বাসচালকের সিটে স্টিয়ারিং হাতে একজন মহিলা ৷ ভি পি শীলা ৷ KSRTC প্রথম মহিলা বাস ড্রাইভার ৷
ভোর হওয়ার আগেই ঘুম থেকে উঠে পড়েন 46 বছরের শীলা ৷ প্রতিদিন ভোর 5টায় কর্মস্থলে পৌঁছে যান ৷ তাঁর কাজের সম্বন্ধে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন , "কাজটি ভালো লাগে তাঁর ৷"
শৈশব থেকেই গাড়ি চালানোর শখ শীলার ৷ তিনি বলেন, " আমার ভাইরা আমায় স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করেছে ৷ আমি লক্ষ্য থেকে সরে আসিনি ৷ আমি চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি ৷ আমি জানতাম এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হবে ৷ কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি ৷ "
শীলার বিশ্বাস একজন মানুষের জীবনেই লক্ষ্যই সব ৷ স্বপ্ন সত্যি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার প্রয়োজন ৷ বাধা আসবে কিন্তু ভেঙে পড়লে হবে না ৷ শীলার বন্ধুরা KSRTC (কেরালা রাজ্য পরিবহন নিগম) -র চালকের পরীক্ষার বিষয়টি তাঁকে জানান ৷ নিয়োগের সময় শংসাপত্র যাচাইয়ের পাশাপাশি গাড়ি চালানোর এবং লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয় ৷ তিনি চারবার ব্যর্থ হন ৷ ব্যর্থ হওয়ার পর আরও কঠিন পরিশ্রম করেন তিনি ।
শীলা বলেন, "আমি দশম শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করেছি ৷ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের সঙ্গে আমায় চাকরির পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল ৷ কিন্তু হাল ছাড়িনি ৷ " শেষ অবধি 2010 সালে তিনি উত্তীর্ণ হন ৷
তাঁর এক সহকর্মী সাদিকি বলেন , "আমার ওঁর সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে ৷ শীলা তাঁর কাজে দক্ষ ৷"
মহিলা বলে কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে ? এই প্রশ্নের উত্তরে শীলা জানান, না, লিঙ্গবৈষম্যমূলক কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি তাঁকে ৷ তিনি যুবসমাজের উদ্দেশে বলেন , "সমাজের পরোয়া করো না ৷ নিজের পছন্দ মত কাজটি মন দিয়ে করো ৷ পরিবারের সমর্থনটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৷ "
শীলা বলেন, "আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হলে জীবনে সবকিছু ঠিক থাকে ৷"