ETV Bharat / bharat

উন্নয়নের লক্ষ্যে কাদের ভরসা করছেন কেরালার মানুষ এবং কেন ?

কোনও পথে কেরালা ? কারা হতে পারে রাজ্যে আগামী দিনের চালিকাশক্তি ? আলোচনায় কে প্রবীণ কুমার

Kerala verdict
প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Dec 18, 2020, 10:43 AM IST

দেশের সাম্প্রতিক কিছু নির্বাচনের ভোটদানের রূপরেখায় যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাতি তথা ধর্মীয় মেরুকরণের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে, সেখানেই ব্যতিক্রমী থেকে স্বস্তি দিয়েছে কেরালার স্থানীয় নির্বাচনের ভোট-রূপরেখা । বিজেপি যে বিভাজনের রাজনীতি খেলেছে আর তাতে সমর্থন করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্র‌্যাটিক ফ্রন্ট, আদপে তা এই স্থানীয় নির্বাচনে কোনও ইতিবাচক ফলাফল তৈরি করতে পারেনি। কারণ মানুষ সেই রাজে্য সিপিআইএম-এর নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র‌্যাটিক ফ্রন্ট সরকারের আনা বিকাশমূলক কর্মকাণ্ডকে মাথায় রেখেই ভোট দিয়েছে । কেরালায় এলডিএফ-এর অসাধারণ জয় তাই এককথায় এলডিএফ সরকারের জন্য অতি-সহায়ক, যাদের আগামী চার-পাঁচ মাসের মধে্যই বিধানসভা ভোটেরও মুখোমুখি হতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নই ছিলেন এলডিএফ-এর ভোট প্রচারসূচির ‘পোস্টার ফিগার’ তথা প্রচারের মূল আকর্ষণ এবং তাদের স্লোগান ছিল ‘ভোট দিন উন্নয়নের পক্ষে’। কেরালার কোনও সরকার সাম্প্রতিককালে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে এমন জোটবদ্ধ আক্রমণের সম্মুখীন হয়নি । বিজেপি এবং কংগ্রেসের হয়ে যখন সংবাদমাধ্যমেরও একটা বড় অংশ ঘৃণা তথা বিদ্বেষমূলক প্রচারসূচি চালাচ্ছিল, যার বেশিরভাগই ছিল অর্ধ-সত্য এবং ভ্রান্ত তথে্য ভরা, তখন রাজ্য সরকারের তরফে ক্রমাগত চেষ্টা করে যাওয়া হয়েছে জনমানসের মধে্য তাদের বক্তব্য তুলে ধরার, বিশেষ করে যত স্থানীয় ভোটের তিন দফার তারিখ এগিয়ে এসেছে । যদিও শেষপর্যন্ত দেখা গিয়েছে, বিরোধী জোট, ভোটের ফলে, বর্তমান শাসক দলের আনা সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং বিকাশের কর্মসূচির সাফল্যকে ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ সাধারণ মানুষ তাদের দৈনিক জীবনে অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলিকেই প্রাধান্য দিয়েছে।

এলডিএফ ছ’টি কর্পোরেশনের মধে্য তিনটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শাসন ধরে রাখবে এবং আগামীতে তারা আরও দু’টি কর্পোরেশনের দখল নিতে পারে । এগুলি হল কোচি এবং ত্রিচূর । নির্দল এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থনেই তা হতে পারে । 14 টি জেলা পঞ্চায়েতের মধে্য এলডিএফ তাদের 2015 সালের ভোটের ফল আরও ভাল করেছে এবং 10 টিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে । 2015 সালে তারা মাত্র সাতটিতে জিতেছিল । পৌরসভা ভোটের কথা বিচার করলে, একমাত্র যে অংশে এলডিএফ সাফলে্যর মহান দাবি জানাতে পারেনি, তা ছিল তাদের 86 টি পুরসভার মধে্য 35 টিতেই জয় । 2015 সালের তুলনায় এবার এখানে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র‌্যাটিক অ্যালায়েন্স, আরও একটি পৌরসভা দখল করেছে, ফলে তাদের সংগ্রহে রয়েছে মোট দু’টি পৌরসভা । পৌরসভা ভোটের নিরিখে ইউডিএফ-এর কর্তৃত্ব রয়েছে কারণ তারা 45 টি দখল করতে পেরেছে তবে এখনও চারটি পৌরসভার ভাগ্য ঝুলে রয়েছে নির্দল প্রার্থীদের হাতে ।

আরও পড়ুন : সিপিএমের প্রতীক লাগানো মাস্ক পরে বুথে, দায়িত্ব থেকে সরাল কমিশন

152 টির মধে্য 112 টি ব্লক পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছে এলডিএফ। এলডিএফ 2015 সালের ভোটে মাত্র 89 টি ব্লক পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছিল । ইউডিএফ এখনও পর্যন্ত মাত্র 40 টি ব্লক পঞ্চায়েত জিততে পেরেছে আর বাকি আসনগুলির ফল এখনও ঘোষণা হয়নি । 941 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধে্য 514 টি আসনে জিতেছে এলডিএফ আর ইউডিএফ দখল করেছে 377 টি, এনডিএ-র ঘরে গিয়েছে 22 টি । নির্দল এবং অন্য ছোটো ছোটো দলগুলি 28 টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে রেখেছে।

দেশের মধে্য সেরা স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা রয়েছে কেরলেই কারণ এখানে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীয়করণ নিখুঁত দক্ষতা এবং প্রচেষ্টা দিয়ে প্রতিপালন করা হয় । রাজনৈতিক মেরুকরণ নির্বিশেষে স্থানীয় সমস্ত কর্তৃপক্ষই এতে অংশগ্রহণ করে এবং নিজেদের ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে তখন, যখন রাজ্য কোনও রকম সংকটের মুখে এসে দাঁড়ায়। এই ধরনের বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসন ব্যবস্থার সক্রিয়তা জনগণ তখন দেখেছিল যখন এই রাজে্য প্রথম নিপা ভাইরাসের আক্রমণ ঘটেছিল। স্থানীয় সরকারের তরফে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম দিকেও হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল যখন রাজে্য ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল । এই সবের ফলেই রাজ্যবাসীর মনে বর্তমান সরকারের কর্মনিষ্ঠা সম্পর্কে আস্থা আরও মজবুত হয়ে পড়ে । যখন গোটা দুনিয়া বুঝতে পারছিল না কীভাবে কোভিড প্যানডেমিকের সঙ্গে লড়াই করবে, তখনও এই কেরলই নিখুঁত আয়োজনের মাধ্যমে প্যানডেমিক নিয়ন্ত্রণ করে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিল ।

আরও পড়ুন : "একে অন্যকে বাঁচাতে মরিয়া বিজয়ন ও শিবশংকর", আক্রমণ কেরালা কংগ্রেসের

সেই সমস্ত কঠিন সময়ে যে সমস্ত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছিল, বর্তমানে রাজে্যর শাসকদল এখন তারই সুফল ভোগ করছে । কেরালাই সেই প্রথম রাজ্য যারা ফেব্রুয়ারি মাসের মতো এত আগেই 20 হাজার কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, দেশে প্রথম কোভিড আক্রান্তের হদিশ মেলার কিছু সপ্তাহের মধ্যেই । কেরালার সরকার এটা নিশ্চিত করেছিল যে সেই রাজে্য বসবাসকারী কেউ যেন লকডাউনে এবং কাজের অভাবে ক্ষুধার্ত না থাকে । এর জন্য রাজ্যজুড়ে কমিউনিটি কিচেনও তৈরি করা হয়েছিল । অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে প্রতিটি বাড়িতে যাতে পর্যাপ্ত খাবারের যোগান থাকে, তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারিও চালানো হয়েছিল । বয়স্কদের পেনসনের অঙ্কও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং আরও একাধিক সমাজ-কল্যাণমূলক প্রকল্প এবং নানা ধরনের কর্মরত শ্রেণির মানুষদের জন্য ত্রাণ তহবিল মডেলও চালু করা হয়েছিল । সামাজিক সংগঠন, মানবহিতৈষীমূলক উদে্যাগপতি এবং এনজিওগুলিকে একই ছাতার তলায় আনা হয়েছিল এবং সমস্ত ত্রাণমূলক উদে্যাগের উপর কড়া নজরও রাখা হয়েছিল । রাজ্য সরকারের তরফে এত বিরাট কর্মকাণ্ডে শরিক থাকা কোনও ভোটারেরই নজর এড়ায়নি । যার জন্য স্থানীয় ভোটে এলডিএফ সরকারের খারাপ ফল করা কার্যত কঠিনই ছিল ।

স্থানীয় ভোটের ফলাফল কেরালায় অভাবনীয় রাজনৈতিক প্রহেলিকার সূচনা করেছে । ভোটের ফলকে যখন প্রশাসনিক স্তরে এবং কিছুটা রাজনৈতিক স্তরেও স্বাগত জানানো হয়, তখন এটি সেই প্রবণতার ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠে, যা বর্তমানে ভারতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির উত্থানের মধ্যে দিয়ে । যদিও বিজেপি কেরালার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধে্য নিজেদের পথ তৈরি করতে পারেনি, তবুও কেরালার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের মধে্য নিজেদের অস্তিত্ব ক্রমশ তারা যে বাড়িয়ে তুলছে, তা কিন্তু দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে । অন্যদিকে আবার, কংগ্রেসের পতন যা সাম্প্রতিক কালে দেশের একাধিক কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে দেখা গিয়েছে, তাও সহজে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় ।

দেশের সাম্প্রতিক কিছু নির্বাচনের ভোটদানের রূপরেখায় যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাতি তথা ধর্মীয় মেরুকরণের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে, সেখানেই ব্যতিক্রমী থেকে স্বস্তি দিয়েছে কেরালার স্থানীয় নির্বাচনের ভোট-রূপরেখা । বিজেপি যে বিভাজনের রাজনীতি খেলেছে আর তাতে সমর্থন করেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্র‌্যাটিক ফ্রন্ট, আদপে তা এই স্থানীয় নির্বাচনে কোনও ইতিবাচক ফলাফল তৈরি করতে পারেনি। কারণ মানুষ সেই রাজে্য সিপিআইএম-এর নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র‌্যাটিক ফ্রন্ট সরকারের আনা বিকাশমূলক কর্মকাণ্ডকে মাথায় রেখেই ভোট দিয়েছে । কেরালায় এলডিএফ-এর অসাধারণ জয় তাই এককথায় এলডিএফ সরকারের জন্য অতি-সহায়ক, যাদের আগামী চার-পাঁচ মাসের মধে্যই বিধানসভা ভোটেরও মুখোমুখি হতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নই ছিলেন এলডিএফ-এর ভোট প্রচারসূচির ‘পোস্টার ফিগার’ তথা প্রচারের মূল আকর্ষণ এবং তাদের স্লোগান ছিল ‘ভোট দিন উন্নয়নের পক্ষে’। কেরালার কোনও সরকার সাম্প্রতিককালে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে এমন জোটবদ্ধ আক্রমণের সম্মুখীন হয়নি । বিজেপি এবং কংগ্রেসের হয়ে যখন সংবাদমাধ্যমেরও একটা বড় অংশ ঘৃণা তথা বিদ্বেষমূলক প্রচারসূচি চালাচ্ছিল, যার বেশিরভাগই ছিল অর্ধ-সত্য এবং ভ্রান্ত তথে্য ভরা, তখন রাজ্য সরকারের তরফে ক্রমাগত চেষ্টা করে যাওয়া হয়েছে জনমানসের মধে্য তাদের বক্তব্য তুলে ধরার, বিশেষ করে যত স্থানীয় ভোটের তিন দফার তারিখ এগিয়ে এসেছে । যদিও শেষপর্যন্ত দেখা গিয়েছে, বিরোধী জোট, ভোটের ফলে, বর্তমান শাসক দলের আনা সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং বিকাশের কর্মসূচির সাফল্যকে ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ সাধারণ মানুষ তাদের দৈনিক জীবনে অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলিকেই প্রাধান্য দিয়েছে।

এলডিএফ ছ’টি কর্পোরেশনের মধে্য তিনটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শাসন ধরে রাখবে এবং আগামীতে তারা আরও দু’টি কর্পোরেশনের দখল নিতে পারে । এগুলি হল কোচি এবং ত্রিচূর । নির্দল এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থনেই তা হতে পারে । 14 টি জেলা পঞ্চায়েতের মধে্য এলডিএফ তাদের 2015 সালের ভোটের ফল আরও ভাল করেছে এবং 10 টিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে । 2015 সালে তারা মাত্র সাতটিতে জিতেছিল । পৌরসভা ভোটের কথা বিচার করলে, একমাত্র যে অংশে এলডিএফ সাফলে্যর মহান দাবি জানাতে পারেনি, তা ছিল তাদের 86 টি পুরসভার মধে্য 35 টিতেই জয় । 2015 সালের তুলনায় এবার এখানে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র‌্যাটিক অ্যালায়েন্স, আরও একটি পৌরসভা দখল করেছে, ফলে তাদের সংগ্রহে রয়েছে মোট দু’টি পৌরসভা । পৌরসভা ভোটের নিরিখে ইউডিএফ-এর কর্তৃত্ব রয়েছে কারণ তারা 45 টি দখল করতে পেরেছে তবে এখনও চারটি পৌরসভার ভাগ্য ঝুলে রয়েছে নির্দল প্রার্থীদের হাতে ।

আরও পড়ুন : সিপিএমের প্রতীক লাগানো মাস্ক পরে বুথে, দায়িত্ব থেকে সরাল কমিশন

152 টির মধে্য 112 টি ব্লক পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছে এলডিএফ। এলডিএফ 2015 সালের ভোটে মাত্র 89 টি ব্লক পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছিল । ইউডিএফ এখনও পর্যন্ত মাত্র 40 টি ব্লক পঞ্চায়েত জিততে পেরেছে আর বাকি আসনগুলির ফল এখনও ঘোষণা হয়নি । 941 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধে্য 514 টি আসনে জিতেছে এলডিএফ আর ইউডিএফ দখল করেছে 377 টি, এনডিএ-র ঘরে গিয়েছে 22 টি । নির্দল এবং অন্য ছোটো ছোটো দলগুলি 28 টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে রেখেছে।

দেশের মধে্য সেরা স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা রয়েছে কেরলেই কারণ এখানে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীয়করণ নিখুঁত দক্ষতা এবং প্রচেষ্টা দিয়ে প্রতিপালন করা হয় । রাজনৈতিক মেরুকরণ নির্বিশেষে স্থানীয় সমস্ত কর্তৃপক্ষই এতে অংশগ্রহণ করে এবং নিজেদের ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে তখন, যখন রাজ্য কোনও রকম সংকটের মুখে এসে দাঁড়ায়। এই ধরনের বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসন ব্যবস্থার সক্রিয়তা জনগণ তখন দেখেছিল যখন এই রাজে্য প্রথম নিপা ভাইরাসের আক্রমণ ঘটেছিল। স্থানীয় সরকারের তরফে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম দিকেও হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল যখন রাজে্য ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল । এই সবের ফলেই রাজ্যবাসীর মনে বর্তমান সরকারের কর্মনিষ্ঠা সম্পর্কে আস্থা আরও মজবুত হয়ে পড়ে । যখন গোটা দুনিয়া বুঝতে পারছিল না কীভাবে কোভিড প্যানডেমিকের সঙ্গে লড়াই করবে, তখনও এই কেরলই নিখুঁত আয়োজনের মাধ্যমে প্যানডেমিক নিয়ন্ত্রণ করে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিল ।

আরও পড়ুন : "একে অন্যকে বাঁচাতে মরিয়া বিজয়ন ও শিবশংকর", আক্রমণ কেরালা কংগ্রেসের

সেই সমস্ত কঠিন সময়ে যে সমস্ত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছিল, বর্তমানে রাজে্যর শাসকদল এখন তারই সুফল ভোগ করছে । কেরালাই সেই প্রথম রাজ্য যারা ফেব্রুয়ারি মাসের মতো এত আগেই 20 হাজার কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, দেশে প্রথম কোভিড আক্রান্তের হদিশ মেলার কিছু সপ্তাহের মধ্যেই । কেরালার সরকার এটা নিশ্চিত করেছিল যে সেই রাজে্য বসবাসকারী কেউ যেন লকডাউনে এবং কাজের অভাবে ক্ষুধার্ত না থাকে । এর জন্য রাজ্যজুড়ে কমিউনিটি কিচেনও তৈরি করা হয়েছিল । অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে প্রতিটি বাড়িতে যাতে পর্যাপ্ত খাবারের যোগান থাকে, তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারিও চালানো হয়েছিল । বয়স্কদের পেনসনের অঙ্কও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং আরও একাধিক সমাজ-কল্যাণমূলক প্রকল্প এবং নানা ধরনের কর্মরত শ্রেণির মানুষদের জন্য ত্রাণ তহবিল মডেলও চালু করা হয়েছিল । সামাজিক সংগঠন, মানবহিতৈষীমূলক উদে্যাগপতি এবং এনজিওগুলিকে একই ছাতার তলায় আনা হয়েছিল এবং সমস্ত ত্রাণমূলক উদে্যাগের উপর কড়া নজরও রাখা হয়েছিল । রাজ্য সরকারের তরফে এত বিরাট কর্মকাণ্ডে শরিক থাকা কোনও ভোটারেরই নজর এড়ায়নি । যার জন্য স্থানীয় ভোটে এলডিএফ সরকারের খারাপ ফল করা কার্যত কঠিনই ছিল ।

স্থানীয় ভোটের ফলাফল কেরালায় অভাবনীয় রাজনৈতিক প্রহেলিকার সূচনা করেছে । ভোটের ফলকে যখন প্রশাসনিক স্তরে এবং কিছুটা রাজনৈতিক স্তরেও স্বাগত জানানো হয়, তখন এটি সেই প্রবণতার ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠে, যা বর্তমানে ভারতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির উত্থানের মধ্যে দিয়ে । যদিও বিজেপি কেরালার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধে্য নিজেদের পথ তৈরি করতে পারেনি, তবুও কেরালার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের মধে্য নিজেদের অস্তিত্ব ক্রমশ তারা যে বাড়িয়ে তুলছে, তা কিন্তু দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে । অন্যদিকে আবার, কংগ্রেসের পতন যা সাম্প্রতিক কালে দেশের একাধিক কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে দেখা গিয়েছে, তাও সহজে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.