দিল্লি, 21 অগাস্ট : INX মিডিয়া মামালায় পি চিদম্বরমকে গ্রেপ্তার করেছে CBI । অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে CBI । 2017 সালের মে মাসে একটি FIR দায়ের করা হয় । অভিযোগে বলা হয় ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ড 2007 সালে বিদেশ থেকে 305 কোটি টাকার বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য INX মিডিয়াকে ছাড়পত্র দিয়েছিল । তাতেই বেনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ । যে সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেইসময়ে অর্থমন্ত্রীর আসনে ছিলেন পি চিদম্বরম । 2018 সালে একই অভিযোগ তুলে FIR দায়ের করে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ED) ।
একনজরে এই মামলা । কোনও পথে গ্রেপ্তার হলেন চিদম্বরম...
- 2017 সাল :
- মে 15 : CBI এই মামলায় FIR দায়ের করে ।
- জুন 16 : ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে ।
- অগাস্ট 10 : কার্তি চিদম্বরম সহ অন্য চারজনের বিরুদ্ধে জারি করা লুক আউট নোটিশ খারিজ করে মাদ্রাজ় হাইকোর্ট । আদালত জানায়, লুক আউট নোটিশ জারি করা ঠিক হয়নি ।
- অগাস্ট 14 : সুপ্রিম কোর্ট মাদ্রাজ় হাইকোর্টের সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় ।
- অগাস্ট 18 : সুপ্রিম কোর্ট কার্তি চিদম্বরমকে 23 অগাস্টের মধ্যে CBI দপ্তরে হাজিরা দিতে বলে ।
- সেপ্টেম্বর 11 : সুপ্রিম কোর্টে মুখবন্ধ খামে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জমা দেয় CBI । তাতে ছিল বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও কার্তি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে 25 টা বেআইনি সম্পত্তির উল্লেখ ।
- সেপ্টেম্বর 22 : CBI সুপ্রিমকোর্টে জানায় কার্তি চিদম্বরমের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল । কারণ তাঁর বিদেশে থাকা কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছিলেন ।
- অক্টোবর 9 : এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কার্তি চিদম্বরম । মেয়েকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি করাতে ইংল্যান্ড যেতে চেয়েছিলেন তিনি । সুপ্রিম কোর্টে তিনি জানান, ইংল্যান্ডে গেলেও সেখানকার কোনও ব্যাঙ্কে তিনি যাবেন না । পি চিদম্বরম সুপ্রিম কোর্টে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাইছে ।
- নভেম্বর 20 : সুপ্রিমকোর্ট কার্তি চিদম্বরমের ইংল্যান্ড সফরে অনুমতি দেয় ।
- ডিসেম্বর 8 : এয়ারটেল ম্যাক্সিস মামলায় CBI-র সমনের বিরুদ্ধ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কার্তি চিদম্বরম ।
- 2018 সাল :
- জানুয়ারি 31 : কার্তি চিদম্বরম ও চারজনের বিরুদ্ধে জারি করা লুক আউট নোটিশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার মাদ্রাজ় হাইকোর্টের উপরই দেয় সুপ্রিম কোর্ট ।
- ফেব্রুয়ারি 16 : গ্রেপ্তার করা হয় কার্তি চিদম্বরমের সংস্থার চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এস ভাস্কারা রামনকে ।
- ফেব্রুয়ারি 28 : চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কার্তি চিদম্বরমকে । তাঁকে দিল্লি নিয়ে আসা হয় । আদালত তাঁকে 1 দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেয় ।
- মার্চ 23 : 23 দিন জেলে থাকার পর কার্তি চিদম্বরম জামিনে মুক্ত হন ।
- জুলাই 25 : দিল্লি হাইকোর্ট পি চিদম্বরমের গ্রেপ্তারির উপর আগাম রক্ষাকবচ দেয় ।
- অক্টোবর 11 : স্পেন, ইংল্যান্ড ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কার্তি চিদম্বরমের 54 কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয় ।
- 2019 সাল :
- জুলাই 11 : এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ইন্দ্রাণী মুখার্জি রাজসাক্ষী হওয়ার কথা জানান । তিনি জানান, তাঁকে আদালতে পেশ করা হোক । বিচারকের সামনে বয়ান দেওয়ার শর্ত তিনি মেনে নেন ।
- অগাস্ট 1 : দিল্লি জোর বাগের বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেয় ED । কারণ ওই বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি ।
- অগাস্ট 20 : পি চিদম্বরমের গ্রেপ্তারির উপর থেকে রক্ষাকবচ সরিয়ে নেয় দিল্লি হাইকোর্ট । দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ আসতেই পি চিদম্বরমের বাড়িতে পৌঁছায় CBI ও ED-র আধিকারিকরা । সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়নি । রাতেই পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে CBI ।
- অগাস্ট 21 : রাত 8 টা নাগাদ কংগ্রেস সদর দপ্তরে পৌঁছান পি চিদম্বরম । সেখানে অভিষেক মনুসিংভি, গুলাম নবি আজ়াদ, কপিল সিব্বলের সঙ্গে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন । সাংবাদিক বৈঠকের ছবি টিভিতে দেখেই সেখানে যান CBI ও ED-র আধিকারিকরা । যদিও চিদম্বরমের নাগাল পায়নি তাঁরা । কারণ তার আগেই কংগ্রেসের সদর দপ্তর ছাড়েন পি চিদম্বরম । এরপর CBI ও ED-র আধিকারিকরা পি চিদম্বরমের বাড়িতে আসেন । পাঁচিল টপকে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন । প্রায় ঘণ্টাখানেক নাটক চলার পর পি চিদম্বরমকে গ্রেপ্তার করে দিল্লির CBI দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয় । আগামীকাল তাঁকে কোর্টে তোলা হবে ।