মালদ্বীপ সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারত হাম এবং রুবেলা প্রতিষেধক হিসেবে 30 হাজার ডোজ় সাহায্য পাঠাল। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে এই 30 হাজার ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে । মালদ্বীপ সরকারের আবেদনের মাত্র তিন দিনের মধ্যে এই সাহায্য সে দেশের রাজধানীতে পাঠায় ভারত সরকার । মালদ্বীপে ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিয়েছে হাম এবং রুবেলা । দ্রুত তা মহামারির আকার নিচ্ছে । গত সপ্তাহে চারজনের শরীরের রুবেলার জীবানু পাওয়া গিয়েছে । পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে মালদ্বীপ প্রশাসন ডেনমার্ক এবং UNICEF-এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছিল । যাই হোক, ভারতের কাছে সাহায্য চাওয়ার পর দ্রুত পদক্ষেপ করে সরকার ।
মালদ্বীপের অনুরোধে সাড়া দিয়ে দ্রুত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল দিল্লি । রাজধানী মালেতে গত বুধবার এই প্রতিষেধকগুলি সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হাতে তুলে দেন মালদ্বীপে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় সুধীর । ভারতের এই সাহায্য নিঃসন্দেহে দুই দেশের কূটনৈতিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে । দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অন্যতম হাতিয়ার স্বাস্থ্য পরিষেবা । এমন একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দিল্লি অতি সক্রিয়তা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য । প্রতিবেশি বন্ধু দেশ হিসেবে ভারতের এই ভূমিকা এবং প্রথম দেশ হিসেবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া অবশ্যই অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । প্রতিষেধক তুলে দেওয়ার পর ভারতের রাষ্ট্রদূতের তরফে জানানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য যে কোনও সাহায্য করতে প্রস্তুত দিল্লি । 2019 সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মালদ্বীপ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি মউ স্বাক্ষরিক হয় । সেই মউ অনুসারে ঠিক হয়েছিল, মালদ্বীপের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নয়নের জন্য সব রকম সাহায্য করবে দিল্লি । প্রয়োজনে চিকিত্সকদের
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে । হাসপাতাল তৈরি, ওষুধ-প্রতিষেধক দিয়ে ভারত যথাসম্ভব মালদ্বীপের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয় । ভারতের আর্থিক সহায়তায় সে দেশে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে । আবার টাটা মেমোরিয়াল ক্যানসার সেন্টার 100 শয্যা বিশিষ্ট একটা হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছে । এ ভাবে একাধিক ক্ষেত্রে মালদ্বীপকে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত । বহু বছর ধরেই ভারত-মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্ক । মাঝে কিছুটা সময় অল্প ভাঁটা পড়লেও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলির সময় থেকে ফের তা নতুন ভাবে গড়ে উঠতে শুরু করেছে । এটা প্রথমবার নয়, যখন মানবিকতার নিরিখে ভারত মালদ্বীপের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল । এর আগে 2015 সালেও এই ছবি দেখা গিয়েছিল । সে সময় রাজধানী মালেতে জল সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র RO প্ল্যান্ট বিকল হয়ে গিয়েছিল । এক ভয়ঙ্কর জল সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল । সে সময় সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লি ৷
জরুরিভিত্তিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লি । সুনামির ধাক্কা যখন মালদ্বীপের উপর এসে পড়েছিল, তখনই ভারত সবার আগে পাশে দাঁড়িয়েছিল । আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল মালদ্বীপ প্রশাসনের দিকে । 1988 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির আমলে সামরিক দিক থেকেই ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল মালদ্বীপের । উন্নত-প্রযুক্তির যুদ্ধ বিমান দিয়ে সাহায্যও করেছিল ।