ETV Bharat / bharat

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মুখ্য ভূমিকায় থাকবে ভারত - দিল্লি

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত । 2006-07 সালে, যখন প্রথমবার শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন থেকেই এই অঞ্চল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় । আলোচনায় অরুণিম ভুইয়াঁ ৷

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল
author img

By

Published : Sep 2, 2020, 6:04 PM IST

দিল্লি, 2 সেপ্টম্বর: পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত চলছে । আর দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে বেজিং তাদের সম্প্রসারণবাদ নীতি নিয়ে আরও চাপ বৃদ্ধি করছে । এই পরিস্থিতিতেও ওয়াশিংয়টনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মুখ্য ভূমিকায় ভারত থাকবে । একজন বর্ষীয়ান কূটনীতিক এমনটাই জানিয়েছেন । US-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম (USISPF) এর আয়োজনে একটি একটি সপ্তাহব্যাপী আলোচনা সভা চলছে । যার মূল বিষয় "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত : একটি নতুন চ্যাঞ্জের দিকে এগিয়ে চলেছে ।" সেখানে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ বিদেশ সচিব স্টিফেন বেইগান । তিনি ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে জানান যে আধুনিক বিশ্বের বাস্তবতার উপর নির্ভর করে ওয়াশিংটনের নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল তৈরি করা হয়েছে । আর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গণতন্ত্র । সোমবার বেইগান বলেন, "এটা মুক্ত বাজারকে নজরে রেখেই তৈরি করা হয়েছে ।" তিনি আরও বলেন, "এটাতে নজর দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের নীতি এবং ভারতের বাসিন্দাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে । এটাকে সফল করতে গেলে এই অঞ্চলে আমাদের সর্বত্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে । এর মধ্যেই রয়েছে অর্থনীতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়টিও । আর এই কৌশল ভারতকে ছাড়া সম্পূর্ণ করা অসম্ভব হবে । সুতরাং গুরুত্বরপূর্ণ বিষয় হলে আমি মনে করি যে ভারতের সঙ্গে আমরা পাশাপাশি না দাঁড়ালে এটা সফল হবে না ।"

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত । 2006-07 সালে, যখন প্রথমবার শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন থেকেই এই অঞ্চল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় । গত জুনে লাদাখে ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় । তার ফলে দুই পক্ষেই বেশ কয়েকজন নিহত হন । প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর গত 45 বছরে প্রথমবার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল । সেই পরিস্থিতিতেই বেইগান এই মন্তব্য করেছেন । প্রসঙ্গত, গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চিনের নাগরিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে । পাশাপাশি চিনা সংস্থাগুলির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে চিনের আধিপত্যবাদী মনোভাবের জন্যই তারা এই সিদ্ধান্ত নেয় । জুলাই মাসে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি (PLA) উভচর হামলা কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ মহড়া দেওয়া শুরু করেছে । চিনের গতিবিধি নজরে রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে দক্ষিণ চিন সাগরের দিকে তিনটি পারমানবিক ক্ষমতা সম্পন্ন এয়ারক্রাফট মোতায়েন করেছে । দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলের অন্য দেশগুলির সঙ্গে চিন স্পার্টলি ও পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অধিকার নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে ।

অন্যদিকে ব্রুনেই, মালেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জের অধিকার দাবি করেছে । আর পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অধিকারের দাবি করেছে ভিয়েতনাম ও তাইওয়ান । 2016 সালে দ্য হেগ শহরে অবস্থিত স্থায়ী সালিশি আদালত রায় দেয় যে দক্ষিণ চিন সাগরে ফিলিপিন্সের অধিকার লঙ্ঘন করেছে চিন । ওই এলাকা হল বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের পথ । চিনকে অভিযুক্ত করে আদালত জানিয়েছিল যে ওই এলাকায় ফিলিপিন্সের মাছ ধরা ও পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত কাজে নাক গলাচ্ছে চিন । সেখানে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করছে, যাতে সেখানে কেউ চিনা মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার কাজে বাধা দিতে না পারে সেই কারণে ৷ দক্ষিণ চিন সাগরে সমুদ্র সংক্রান্ত আইন বারবার ভাঙছে চিন । এই অভিযোগ তুলে জুলাই মাসে ফের সরব হয়েছে ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স ।

এছাড়াও বেজিং সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়েও টোকিওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে । ওই দ্বীপপুঞ্জ পূর্ব চিন সাগরে অবস্থিত। ওই দ্বীপপুঞ্জকে চিন ডিয়ায়ু দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকে । বেইগান বলেন, "ভারত অসাধারণ নেতৃত্ব ক্ষমতা দেখিয়েছে । আর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে আমাদের অগ্রগতির জন্য ভারত নিজেদের অধিকাররের জন্য অবদান রাখতে আগ্রহ দেখিয়েছে ।" তিনি আরও বলেন, "ভারত ও অ্যামেরিকার মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও গভীর হয়েছে । আমাদের মধ্যে যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তাকে আরও বড় আকারে করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি আমরা । বাণিজ্য সংক্রান্ত কিছু উদারবাদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যেও এগিয়ে চলেছি ।" আরও বলেন, "এছাড়া আমরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়েও খুব নিবিড় ভাবে কাজ করছি ৷ খুব সাম্প্রতিক কালে ভারত মালাবার মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছে । এই পদক্ষেপ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাগরের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক অসাধারণ পদক্ষেপ ।"

ভারত, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সঙ্গে মিলে একটি কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগের অংশীদার । যা কোয়াড নামেও পরিচিত । এটা একটি আনুষ্ঠানিক নয় এমন কৌশলগত ফোরাম, যেখানে নিয়মিত সম্মেলন হয়, আলোচনা হয় এবং সদস্য দেশগুলির মধ্যে সেনা মহড়াও হয় । চিন যেভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে, তা আটকাতে ওই অঞ্চলে ওই ফোরাম শান্তি, স্থিতাবস্থা ও সমুদ্র এলাকায় খুলে রাখার কাজ করে । ওই ফোরাম পাশাপাশি যৌথ সেনা মহড়াও নজিরবিহীন ভাবে করে । যার না মালাবার মহড়া । এই কূটনৈতিক ও সেনা ব্যবস্থা আসলে চিনের অর্থনৈতিক ও সেনা শক্তির মোকাবিলা করতেই তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয় । এই কোয়াডের বিরুদ্ধে সদস্য দেশগুলির কাছে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে ।

2018 সালে সিঙ্গাপুরের শাংগ্রি লা ডায়লগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিবৃতি দিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কেন্দ্রে থাকবে 10 দেশের অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (ASEAN) । তার প্রেক্ষিতেই বেইগান এই মন্তব্য করেছেন যে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত মুখ্য ভূমিকায় থাকবে । রাজীব ভাটিয়া গেটওয়ে হাউজ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সম্মানীয় ফেলো । তিনি মায়ানমারে ভারতের রাষ্ট্রদূতও ছিলেন । তিনি ETV Bharat-কে বলেন, "শুধু ভারত নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ASEAN দেশগুলিকেই কেন্দ্রীয় অবস্থানে রাখা হয় । এর অর্থ হল এই অঞ্চলের সমস্যা ASEAN দেশগুলির দ্বারা সমাধান করতে হবে ।"

ভাটিয়া প্রায়ই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে মন্তব্য করেন । তিনি বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে বলেন, "কিন্তু অন্যদিকে কোনও মার্কিন আধিকারিক যখন বলেন যে অ্যামেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মুখ্য অবস্থানে রয়েছে ভারত । তখন তার মানে হয় যে এই অঞ্চলে চিনকে মোকাবিলা করার জন্য ওয়াশিংটনের নীতি তৈরির ক্ষেত্রে ভারতকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ।"

দিল্লি, 2 সেপ্টম্বর: পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত চলছে । আর দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে বেজিং তাদের সম্প্রসারণবাদ নীতি নিয়ে আরও চাপ বৃদ্ধি করছে । এই পরিস্থিতিতেও ওয়াশিংয়টনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মুখ্য ভূমিকায় ভারত থাকবে । একজন বর্ষীয়ান কূটনীতিক এমনটাই জানিয়েছেন । US-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম (USISPF) এর আয়োজনে একটি একটি সপ্তাহব্যাপী আলোচনা সভা চলছে । যার মূল বিষয় "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত : একটি নতুন চ্যাঞ্জের দিকে এগিয়ে চলেছে ।" সেখানে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ বিদেশ সচিব স্টিফেন বেইগান । তিনি ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে জানান যে আধুনিক বিশ্বের বাস্তবতার উপর নির্ভর করে ওয়াশিংটনের নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল তৈরি করা হয়েছে । আর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গণতন্ত্র । সোমবার বেইগান বলেন, "এটা মুক্ত বাজারকে নজরে রেখেই তৈরি করা হয়েছে ।" তিনি আরও বলেন, "এটাতে নজর দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের নীতি এবং ভারতের বাসিন্দাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে । এটাকে সফল করতে গেলে এই অঞ্চলে আমাদের সর্বত্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে । এর মধ্যেই রয়েছে অর্থনীতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়টিও । আর এই কৌশল ভারতকে ছাড়া সম্পূর্ণ করা অসম্ভব হবে । সুতরাং গুরুত্বরপূর্ণ বিষয় হলে আমি মনে করি যে ভারতের সঙ্গে আমরা পাশাপাশি না দাঁড়ালে এটা সফল হবে না ।"

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত । 2006-07 সালে, যখন প্রথমবার শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন থেকেই এই অঞ্চল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় । গত জুনে লাদাখে ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় । তার ফলে দুই পক্ষেই বেশ কয়েকজন নিহত হন । প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর গত 45 বছরে প্রথমবার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল । সেই পরিস্থিতিতেই বেইগান এই মন্তব্য করেছেন । প্রসঙ্গত, গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চিনের নাগরিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে । পাশাপাশি চিনা সংস্থাগুলির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে চিনের আধিপত্যবাদী মনোভাবের জন্যই তারা এই সিদ্ধান্ত নেয় । জুলাই মাসে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি (PLA) উভচর হামলা কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষিণ চিন সাগরে নৌ মহড়া দেওয়া শুরু করেছে । চিনের গতিবিধি নজরে রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে দক্ষিণ চিন সাগরের দিকে তিনটি পারমানবিক ক্ষমতা সম্পন্ন এয়ারক্রাফট মোতায়েন করেছে । দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলের অন্য দেশগুলির সঙ্গে চিন স্পার্টলি ও পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অধিকার নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে ।

অন্যদিকে ব্রুনেই, মালেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জের অধিকার দাবি করেছে । আর পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অধিকারের দাবি করেছে ভিয়েতনাম ও তাইওয়ান । 2016 সালে দ্য হেগ শহরে অবস্থিত স্থায়ী সালিশি আদালত রায় দেয় যে দক্ষিণ চিন সাগরে ফিলিপিন্সের অধিকার লঙ্ঘন করেছে চিন । ওই এলাকা হল বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের পথ । চিনকে অভিযুক্ত করে আদালত জানিয়েছিল যে ওই এলাকায় ফিলিপিন্সের মাছ ধরা ও পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত কাজে নাক গলাচ্ছে চিন । সেখানে কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করছে, যাতে সেখানে কেউ চিনা মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার কাজে বাধা দিতে না পারে সেই কারণে ৷ দক্ষিণ চিন সাগরে সমুদ্র সংক্রান্ত আইন বারবার ভাঙছে চিন । এই অভিযোগ তুলে জুলাই মাসে ফের সরব হয়েছে ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স ।

এছাড়াও বেজিং সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়েও টোকিওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে । ওই দ্বীপপুঞ্জ পূর্ব চিন সাগরে অবস্থিত। ওই দ্বীপপুঞ্জকে চিন ডিয়ায়ু দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকে । বেইগান বলেন, "ভারত অসাধারণ নেতৃত্ব ক্ষমতা দেখিয়েছে । আর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে আমাদের অগ্রগতির জন্য ভারত নিজেদের অধিকাররের জন্য অবদান রাখতে আগ্রহ দেখিয়েছে ।" তিনি আরও বলেন, "ভারত ও অ্যামেরিকার মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও গভীর হয়েছে । আমাদের মধ্যে যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তাকে আরও বড় আকারে করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি আমরা । বাণিজ্য সংক্রান্ত কিছু উদারবাদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যেও এগিয়ে চলেছি ।" আরও বলেন, "এছাড়া আমরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়েও খুব নিবিড় ভাবে কাজ করছি ৷ খুব সাম্প্রতিক কালে ভারত মালাবার মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছে । এই পদক্ষেপ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাগরের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক অসাধারণ পদক্ষেপ ।"

ভারত, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সঙ্গে মিলে একটি কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগের অংশীদার । যা কোয়াড নামেও পরিচিত । এটা একটি আনুষ্ঠানিক নয় এমন কৌশলগত ফোরাম, যেখানে নিয়মিত সম্মেলন হয়, আলোচনা হয় এবং সদস্য দেশগুলির মধ্যে সেনা মহড়াও হয় । চিন যেভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে, তা আটকাতে ওই অঞ্চলে ওই ফোরাম শান্তি, স্থিতাবস্থা ও সমুদ্র এলাকায় খুলে রাখার কাজ করে । ওই ফোরাম পাশাপাশি যৌথ সেনা মহড়াও নজিরবিহীন ভাবে করে । যার না মালাবার মহড়া । এই কূটনৈতিক ও সেনা ব্যবস্থা আসলে চিনের অর্থনৈতিক ও সেনা শক্তির মোকাবিলা করতেই তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয় । এই কোয়াডের বিরুদ্ধে সদস্য দেশগুলির কাছে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে ।

2018 সালে সিঙ্গাপুরের শাংগ্রি লা ডায়লগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিবৃতি দিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের কেন্দ্রে থাকবে 10 দেশের অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (ASEAN) । তার প্রেক্ষিতেই বেইগান এই মন্তব্য করেছেন যে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত মুখ্য ভূমিকায় থাকবে । রাজীব ভাটিয়া গেটওয়ে হাউজ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সম্মানীয় ফেলো । তিনি মায়ানমারে ভারতের রাষ্ট্রদূতও ছিলেন । তিনি ETV Bharat-কে বলেন, "শুধু ভারত নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ASEAN দেশগুলিকেই কেন্দ্রীয় অবস্থানে রাখা হয় । এর অর্থ হল এই অঞ্চলের সমস্যা ASEAN দেশগুলির দ্বারা সমাধান করতে হবে ।"

ভাটিয়া প্রায়ই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে মন্তব্য করেন । তিনি বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে বলেন, "কিন্তু অন্যদিকে কোনও মার্কিন আধিকারিক যখন বলেন যে অ্যামেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মুখ্য অবস্থানে রয়েছে ভারত । তখন তার মানে হয় যে এই অঞ্চলে চিনকে মোকাবিলা করার জন্য ওয়াশিংটনের নীতি তৈরির ক্ষেত্রে ভারতকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.