তিরুবনন্তপুরম, 25 মে : সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে যুবতির । ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা যুবতিকে রাতে ছোবল মারে সাপটি । সকালে বিষধর সাপটিকে উদ্ধারও করা হয় । ঘটনাটি সাধারণ মনে হলেও, এর পিছনে রয়েছে রহস্য । আর সেই রহস্য ভেদ করে অবশেষে যুবতির স্বামী ও তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনাটি কেরালার কোল্লামের ।
বছর কয়েক আগে উথরা নামে ওই যুবতির সঙ্গে বিয়ে হয় সূরজের । পণ হিসেবে ভারী ভারী গয়না ও নগদ টাকা নেয় সে । ভালোই চলছিল দু'জনের সম্পর্ক । 6 মে রাতে উথরাকে সাপে কামড়ায় । সকালে উথরার মা-বাবা উঠে দেখেন, তিনি মৃত । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় । হঠাৎ সাপ বাড়িতে ঢুকল কী করে ? সে সব প্রশ্নের মাঝেই উথরার বাবা-মার মনে উঁকি মারে, মার্চেও তাঁদের মেয়েকে একবার সাপে কামড়েছিল । সেবার তিনি বেঁচে যান । বিষয়টি মাথায় আসতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা ।
পুলিশও সমস্যায় পড়ে । সাপের ছোবলে মৃত্যু, এর আবার অন্য কী কারণ থাকতে পারে । কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশও চমকে যায় । উথরার মৃত্যুর পরই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামীকে আটক করে পুলিশ । চলে জিজ্ঞাসাবাদ । সেই সূত্র ধরেই উঠে আসে একাধিক তথ্য । আটক করা হয় সূরজের এক বন্ধুকেও । বেশ কিছুদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ভেঙে পড়ে দু'জন । উঠে আসে অন্য গল্প ।
উথরাকে প্রাণে মারতে ওইদিন রাতে ঘরে সাপ ঢুকিয়েছিল তাঁর স্বামী সূরজই । সে সাপটি কিনেছিল সুরেশ নামে এক বন্ধুর কাছ থেকে । 6 তারিখ সন্ধেয় সাপটিকে সবার আড়ালে একটি ব্যাগে ভরে নিয়ে আসে সূরজ । রাতে তার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে ব্যাগটি খুলে তার গায়ে ছুঁড়ে দেয় । এরপর সাপটি কী করে তা দেখার জন্য বসেছিল সূরজ । সে দেখে সাপটি দু'বার উথরাকে ছোবল মারে । এরপর ঘরেই কোথাও ঢুকে যায় । প্রমাণ লোপাটের জন্য সাপটিকে অন্যত্র ছেড়ে আসার পরিকল্পনা ছিল তার । কিন্তু তা সফল হয় না । এদিকে প্রাণের ভয়ে সারারাত জেগে বসে থাকে সূরজ । ভোর হতেই ঘর ছাড়ে ।
সকালে অনেক ডাকাডাকির পর উথরা না ওঠায়, তাঁর বাবা- মা ঘরে গিয়ে দেখেন মেয়ের জ্ঞান নেই । হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । বিষয়টিকে প্রথমে হালকাভাবে নিলেও পরে নানান প্রশ্ন মাথায় আসে তাঁদের । সাপটি কোথা থেকে এল, সূরয কোথায় এবং এর আগে মার্চের 2 তারিখেও উথরাকে সাপে কামড়ায় । সেই সূত্র ধরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা ।
পুলিশ তদন্তে নেমে সূরজকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে । জানা যায়, সূরজের বন্ধু সুরেশ সাপ ধরার বিশেষজ্ঞ । স্ত্রীকে মারতে তার থেকেই সাপটি কিনেছিল সূরজ । তার আগে সাপ ধরার বহু ভিডিয়ো দেখেছে সে । পুলিশ জানিয়েছে, সূরজ অনেক গয়না ও টাকা নিয়েছিল পণ হিসেবে । সেই গয়নার অর্ধেকই বেচে খেয়ে নিয়েছিল । স্ত্রীকে আর পছন্দ হচ্ছিল না । ফলে তাঁকে সরিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করার ধান্দায় ছিল এই যুবক ।