কলা এমন একটি ফল যা সারা বছরই পাওয়া যায় এবং সবাই এটি খেতে পছন্দ করে ৷ কিন্তু পাকা কলা নয় বরং কাঁচা কলা নিয়ে জেনে রাখা ভালো । বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি অনেক ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ এবং ওজন কমানোর পাশাপাশি ডায়াবেটিস এবং ডায়রিয়ার ক্ষেত্রেও খুব ভালো কাজ করে ।
ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সবসময়ই খুবই উপকারী । বাজারে পাওয়া বিভিন্ন ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকার করে । এই কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে ডাক্তার সকলেই আমাদের ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন । কলা এই ফলের মধ্যে একটি, যা অনেক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ । এটি খেলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় । আমরা সকলেই পাকা কলার উপকারিতা সম্পর্কে জানি কিন্তু আপনি কি জানেন যে কাঁচা কলারও অনেক উপকারিতা রয়েছে ?
কাঁচা কলা স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে উপকারী ৷ যা খুব কম মানুষই জানেন । এগুলি হজম করা সহজ এবং স্বাস্থ্যকর সবজির মধ্যে একটি ৷ ফাইবার, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে সমৃ দ্ধ। যদি আপনি এখনও এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত না থাকেন, তাহলে জেনে নিন কাঁচা কলার উপকারিতা সম্বন্ধে ৷

ওজন কমাতে সাহায্য় করে: কাঁচা কলা ফাইবার সমৃদ্ধ, তাই এটি আপনার পেট দীর্ঘ সময় ধরে ভরা রাখে এবং আপনি অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে পারেন ৷ দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা থাকার কারণে আপনি অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকেও দূরে থাকতে পারেন । ফলে এটি আপনাকে অনেক উপায়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
ডায়রিয়ায় উপকারী: গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ার সমস্যা বেশি দেখা যায় । কাঁচা কলা খাওয়া খুবই উপকারী ৷ এতে উপস্থিত পুষ্টিগুণ ডায়রিয়া থেকে মুক্তি দিতে পারে । এছাড়াও এটি বমি, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব এবং মাথাব্যথা কমাতে অত্যন্ত কার্যকর বলে বিবেচিত হয় ।

হার্টের জন্য উপকারী: ওজন কমানোর পাশাপাশি, কাঁচা কলা আপনার হার্টের জন্যও খুবই উপকারী । এতে অনেক হার্টের স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় ৷ যা আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । এতে প্রাকৃতিক ভাসোডিলেটর রয়েছে এবং এটি পটাশিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস ৷ ফলে হৃদস্পন্দন বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ।
পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে: কাঁচা কলা থেকে অনেক ধরণের খাবার তৈরি করা যায় ৷ এগুলি খেলে পাচনতন্ত্রও সুস্থ থাকে । যদি আপনারও বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থাকে তাহলে আপনি এটি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন । এর ফলে খাবার দ্রুত হজম হতে শুরু করবে এবং পেটে ভারী ভাব অনুভব হবে না ।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা কলা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওষুধের চেয়ে কম নয় । এতে গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকার কারণে, ইনসুলিন হরমোন ধীরে ধীরে নিঃসৃত হয়, যা সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে । এছাড়াও, সবুজ কলার গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে । কাঁচা কলায় উপস্থিত পেকটিন এবং প্রতিরোধী স্টার্চ রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বিপাক বৃদ্ধি করে: কাঁচা কলা ভিটামিন সি, ই, বি6 এবং কে সমৃদ্ধ । এর ব্যবহার শরীরকে অনেক এনজাইমেটিক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে ৷ যা বিপাককেও বাড়িয়ে তোলে । এমন পরিস্থিতিতে পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং খাবার দ্রুত হজম হয় ।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ: কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে ৷ যা একটি কার্যকর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফলে বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণ এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে । এটি খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং এটি আমাদের ত্বককে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে ।
প্রদাহ কমানো: কাঁচা কলায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে । এছাড়াও এটি সুস্থ কোষগুলিকে জারণজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে । কাঁচা কলায় ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিনের মতো জৈব-সক্রিয় পদার্থ এবং লুটেইন এবং জিয়াক্সানথিনের মতো অন্যান্য ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা প্রদাহ কমায় ।
https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC6627159/
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)