দিল্লি, 23 নভেম্বর : মাসখানেকের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর শেষমেশ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস । ভোটের ফল বের হওয়ার পর থেকেই তৈরি হয়েছিল একাধিক জল্পনা । গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল NCP-শিবসেনা জোটই সরকার গড়তে চলেছে । কিন্তু ভোররাতেই বদলে গেল সবকিছু । পুরো ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস যে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ, তা আজ ধরা পড়ল কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূরজেওয়ালার কথায় ।
আজ সাংবাদিক বৈঠকে সূরজেওয়ালা বলেন, "স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার সংবিধান ও রাজ্যপালকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হল । (মহারাষ্ট্রের) রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে অমিত শাহের হিটম্যান হিসেবে কাজ করলেন ।"
সাংবাদিক বৈঠকে মহারাষ্ট্রের পরিবর্তিত রাজনীতি নিয়ে সূরজেওয়ালাকে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় । প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সূরজেওয়ালা মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন ।
আজ ভোর 5টা 47 মিনিটে মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে নোটিফিকেশন জারি করা হয় ৷ তারপর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ৷ উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন NCP-র অজিত পাওয়ার ৷ রাজভবনে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান ৷ এই প্রসঙ্গে সূরজেওয়ালার প্রশ্ন,"BJP কখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, রাষ্ট্রপতি শাসন সরিয়ে সরকার গঠন করা হবে?BJP-NCP জোটের কতজন বিধায়ক দেবেন্দ্র ফড়নবিসকে সমর্থন করেছেন? রাতে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যপাল কীভাবে সমর্থনপত্র যাচাই করলেন? কখন রাষ্ট্রপতির শাসন সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল?"
পুরো প্রক্রিয়াটাই গোপনে হয়েছে বলে দাবি সূরজেওয়ালার । তাঁর প্রশ্ন, "কেন কোনও সংবাদমাধ্যমকে ডাকা হল না ? কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কখন সাক্ষাৎ করেছিল ? সেখানে কারা ছিলেন? তারা কখন রাষ্ট্রপতির শাসন সরানোর জন্য বলেছিলেন? রাজ্যপাল দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং অজিত পাওয়ারকে কখন ডেকেছিলেন ? কোনও বেসরকারি চ্যানেল, দূরদর্শন বা অন্য কোনও মিডিয়া সংস্থা, মহারাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি কাউকে ডাকা হল না কেন?"
কংগ্রেসের সব দাবি মেনেও শেষবেলায় একটি প্রশ্ন থেকে গেল । গতকাল যখন শরদ পাওয়ার শিবসেনা এবং কংগ্রেস নেতৃত্বকে পাশে বসিয়ে জোট-মুখ্যমন্ত্রীত্বের ঘোষণা করছিলেন, তখন একটি কথাও খরচ করেনি কংগ্রেস । রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন তাহলে কি তখনই কিছু অশনিসংকেত পেয়েছিল তারা ? তাই তখন থেকেই কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস ?