দিল্লি, 16 জুন : আগামীকাল থেকে শুরু বাজেট অধিবেশন । তার আগে আজ সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তিনি টুইট করে জানিয়েছেন , "নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ও সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে আজকের সর্বদলীয় বৈঠক সফল হয়েছে । উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ তাঁদের মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ার জন্য । আমরা সকলে মিলে সুষ্ঠভাবে পার্লামেন্টের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব যাতে জনগণের আশা পূরণ করতে পারি । "
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান ও উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন । বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডেরেক জানান, তাঁরা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন ।
প্রথমত, গত পাঁচ বছরে মাত্র 25 শতাংশ বিল পার্লামেন্টারি কমিটি পাশের আগে যাচাই করেছে । তাই আমাদের দাবি, কমপক্ষে 75 শতাংশ বিল পাশের আগে পার্লামেন্টারি কমিটির যাচাই করা হোক । দ্বিতীয়ত, লোকসভা ও বিধানসভায় মহিলা সংরক্ষণের দাবি আগেও করা হয়েছে এবারও করা হবে । ডেরেক বলেন, "মহিলা সংরক্ষণ বিলটি তৈরি রয়েছে । সংসদে অধিবেশন শুরুর প্রথম দশ দিনের মধ্যেই বিলটি পাশ করতে হবে ।" তৃতীয়ত, নির্বাচনী সংস্কার, রাজ্য তহবিল ও পেপার ব্যালট নিয়েও সর্বদল নির্বিশেষে আলোচনা হওয়া উচিত । চতুর্থত, জরুরি অবস্থা ছাড়া কথায় কথায় অর্ডিন্যান্স জারি করাটা বন্ধ করা উচিত । সুদীপবাবু একটি সমীক্ষা তুলে ধরে বলেন, "স্বাধীনতার পর প্রথম 25 বছর (1950-75) প্রতি দশটা বিলের মধ্যে একটি অর্ডিন্যান্স হিসেবে পাশ করানো হত । পরবর্তী 25 বছরে প্রতি দশটা বিলের মধ্যে দুটি অর্ডিন্যান্স হিসেবে পাশ করানো হত । কিন্তু শেষ একবছরে প্রতি দশটা বিলের মধ্যে 4টি অর্ডিন্যান্স হিসাবে জরুরিভিত্তিতে পাশ করানো হয়েছে । আমাদের পরামর্শ অর্ডিন্যান্স শুধুমাত্র ইমারজেন্সি ক্ষেত্রেই পাশ করানো হোক ।"
বৈঠকে ওঠে, রাজ্যের কাজে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গও । এই প্রসঙ্গে সুদীপবাবু বলেন, "আমি বৈঠক শেষেও প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি যে বাংলার প্রতি যে অবিচার হচ্ছে সেটা যাতে না হয় । আমরা এও বলেছি বেকারত্ব নিয়ে কখনও পার্লামেন্টে বিবেচনা করা হয় না । সুতরাং কিছু সমস্যা রয়েছে যেখানে সরকারকে বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে ।" তিনি আরও বলেন, "আমরা বলেছি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বিলগুলো আগে পাঠানো হোক । সেগুলো আগে বিবেচিত হোক ।"
লোকসভায় NDA-এর প্রাপ্ত আসন 353 । কিন্তু রাজ্যসভায় NDA-এর আসন সংখ্যা কম । 245 আসনের মধ্যে মাত্র 102টি আসন । তাই যেকোনও বিল রাজ্যসভায় পাশ করাতে হলে সরকারের অন্যান্য দলের সহযোগিতা প্রয়োজন । আগেরবার তিন তালাক বিরোধী বিল এনেছিল কেন্দ্রীয় সরকার । লোকসভায় পাশ হলেও বিরোধিতার জেরে রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে পারেনি শাসক দল । শুধু বিরোধীরাই নয় NDA-এর শরিক দল নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডও বিলটির বিরোধিতা করেছিল ।