দিল্লি, 1 এপ্রিল : কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন ৷ তিনসপ্তাহ ব্যাপী লকডাউনের আজ অষ্টম দিন ৷ লকডাউনে কোরোনা পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে আসবে সে উত্তর তো সময়ই দেবে, কিন্তু এই লকডাউনের দিনগুলিতে মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়েছে গার্হস্থ্য হিংসা ৷ জাতীয় মহিলা কমিশনের পরিসংখ্যান কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে ৷ 23 মার্চ থেকে শুরু করে 30 মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জমা পড়েছে 58 টি লিখিত অভিযোগ ৷
কোরোনা ভয়ে এখন জর্জরিত গোটা দেশ ৷ চলছে লকডাউন ৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পাওয়া সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ভাইরাসের কবলে প্রাণ হারিয়েছে 35 জন ৷ সংক্রমিত প্রায় প্রায় দেড় হাজারের আশেপাশে ৷ তিন সপ্তাহ ব্যাপী এই লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়ছে আমজনতা ৷ বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, নিত্যদিনের এই নৈরাশ্য থেকেই বাড়িতে থাকা মহিলাদের উপর বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসা ৷
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন, লকডাউনের সময়ে যেসব অভিযোগগুলি জমা পড়েছে, তার বেশিরভাগটাই এসেছে উত্তরের রাজ্যগুলি থেকে ৷ সবথেকে বেশি অভিযোগ সামনে এসেছে পঞ্জাব থেকে ৷
সর্বভারতীয় এক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেখা শর্মা বলেছেন, "গার্হস্থ্য হিংসা বাড়ছে ৷ বাড়িতে বসে বসে পুরুষদের মধ্যে নৈরাশ্য তৈরি হচ্ছে ৷ আর সেই নৈরাশ্যের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বাড়িতে থাকা মহিলাদের উপর ৷ এই প্রবণতা সবথেকে বেশি দেখা যাচ্ছে পঞ্জাবে ৷"
দেশে লকডাউনের সময়ে ঠিক কতজন মহিলা এই ধরনের নির্যাতনের শিকার, সেই সঠিক সংখ্যাটা এই মুহূর্তে মহিলা কমিশনের হাতে না থাকলেও, নথিভুক্ত অভিযোগের থেকে আসল সংখ্যাটা আরও বেশি বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ রেখা শর্মা জানিয়েছেন, "যে 58 টি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে, সবগুলি ই-মেল মারফত এসেছে ৷
যে অভিযোগগুলি ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে কমিশনের কাছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে রাজস্থানের একটি ঘটনা ৷ রাজস্থানের সিকারের এক বৃদ্ধ অভিযোগ করেছেন, তার মেয়েকে নৃশংসভাবে মারা হয়েছে ৷ অভিযোগ রয়েছে মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধে ৷ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি পেশায় শিক্ষক বলে সর্বভারতীয় এক সংবাদসংস্থায় প্রকাশ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, লকডাউনের পর থেকে মহিলাকে ঠিকভাবে খেতেও দেওয়া হচ্ছে না ৷
মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলছেন, "চিঠি মারফত যে অভিযোগগুলি করা হয়েছে, সেগুলি এখন বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছে ৷ ওই অভিযোগগুলি এসে পৌঁছালেই নির্যাতনের শিকার হওয়া প্রকৃত পরিসংখ্যানটি জানা যাবে ৷" এই পরিস্থিতি দেশের মহিলাদের প্রতি তিনি আবেদন জানিয়েছেন, আগামীদিনে এই ধরনের হেনস্থার শিকার হলে তাঁরা যেন সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানা বা রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেন ৷ প্রসঙ্গত, ফ্রান্সেও একইধরনের অভিযোগ এসেছে লকডাউনের সময়ে ৷