হায়দরাবাদ, 14 জুলাই : প্যানডেমিক বহু দেশের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে । কোরোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । বর্তমান সংকট সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রশাসনিত পদ্ধতির পথ প্রস্তুত করেছে । অতীতে তেলেঙ্গানা সরকার এমন এক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় সম্মতি দিয়েছিল, যা রাজ্যজুড়ে সমস্ত কালেক্টরেট এবং সরকারি অফিসের উপর নজরদারি করবে । আজ কোভিড-19 সরকারকে বাধ্য করেছে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ই-গভর্ন্যান্সকে গ্রহণ করতে । পাশাপাশি, ডিজিটাল মডেল গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বচ্ছতাও নিয়ে আসে । বেশিরভাগ রাজ্যই জ়োনাল অফিস এবং সচিবালয়ে অনলাইন গভর্ন্যান্স ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
কেরালাই হচ্ছে প্রথম রাজ্য, যারা সমস্ত সরকারি এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে ই-লার্নিং চালু করেছে, যা 40 লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে ডিজিটাল শিক্ষা প্রদান করছে । 2014 সালে কেরালা ই-অফিস চালু করে । এটা একটা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, যা সরকারের সম্পূর্ণ কাজকে স্বয়ংচালিত করার সক্ষমতা দেয় সরকারকে । হরিয়ানা সরকারও ধাপে ধাপে ই-অফিস ব্যবস্থা প্রয়োগ করছে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির "মিনিমাম গভার্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্নেন্স"-র ভাবনাকে কার্যকর করতে, কেন্দ্র উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে ই-অফিস চালু করতে চলেছে । ই-অফিস ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজের মান উন্নত হয়, এবং তাতে সময়ও কমে । নাগরিকরা সরকারি অফিসের লম্বা লাইন আর ঘুষের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন । একে বাস্তবায়িত করতে প্রতিটি নাগরিকের নাগালে ইন্টারনেট থাকা দরকার ।
2015 সালে ভারত সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রচার শুরু করে, যার লক্ষ্য ভারতকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় শক্তিমান সমাজ এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করা । নতুন খসড়া টেলিকম নীতিতে, 2022 সালের মধ্যে প্রতিটি নাগরিকের কাছে 50 MBPS গতির ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ধার্য করা হয়েছে । এই বছরের শুরুর দিকে কেন্দ্র ঘোষণা করে যে ভারতনেট প্রকল্পের আওতায় এক লাখ 30 হাজার গ্রাম এবং 48 হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতকে ডিজিটালি সংযুক্ত করা হয়েছে ।
কিন্তু বাস্তব ছবিটা অন্য । সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোর মাত্র আট শতাংশই ডিজিটালি সক্রিয়। বর্তমানে ভারতে 50 কোটিরও বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছেন । একটি জাতীয় সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের 11 শতাংশ বাড়িতে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে । ভারতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যায়, 56 কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে । কিন্তু উকলা-র মোবাইল ব্রডব্যান্ড স্পিড ইনডেক্স অনুযায়ী, বিশ্বে ভারতের স্থায় 132 নম্বরে । শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং নেপালও তালিকায় ভারতের থেকে ভালো জায়গায় রয়েছে । উপত্যকায় কড়াকড়ি নিয়ে বহু অভিযোগ পাওয়ার পর, সুপ্রিম কোর্ট জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে জানিয়েছিল যে 19 নম্বর ধারার আওতায় ইন্টারনেট পরিষেবা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে । একইরকমভাবে, ডিজিটাল ভারতের স্বপ্নপূরণের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলোকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতেই হবে । ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে নিরবিচ্ছিন্ন ই-প্রশাসন এবং ই-শিক্ষা অনেকদূর সহায়তা করবে ।