মুম্বই, ২৬ নভেম্বর : মহারাষ্ট্রের মহানাটকের সমাপতন । মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার পদত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ । আজ সুপ্রিম কোর্টের মহারাষ্ট্র-পদক্ষেপের পরই নাটকীয় মোড় নেয় মারাঠা ভূমের রাজনীতি । বিকেল সাড়ে তিনটেয় সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন BJP-র দেবেন্দ্র ফড়নবিশ । সাংবাদিক বৈঠকের ঘণ্টাখানেক আগেই উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন অজিত পাওয়ার । সুপ্রিম কোর্ট আগামীকাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেয় । এরপরই BJP উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে । কিন্তু দুজনের পদত্যাগের পর অর্থহীন হয়ে পড়ল ফ্লোর টেস্ট ৷ নতুন সরকার গঠন এবং নতুন স্পিকার নির্বাচন পর্যন্ত সাংবিধানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রথা মতোই প্রোটেম স্পিকার নির্বাচিন করলেন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি । দায়িত্ব দেওয়া হল BJP বিধায়ক কালীদাস কোলম্বকরকে ৷
অজিত পাওয়ার ছিলেন BJP-এর অন্যতম ভরসা। কিন্তু অজিত পাওয়ার পদত্যাগ করার পরই দেবেন্দ্র ফড়নবিশও পদত্যাগ করলেন। ইস্তফাপত্র রাজভবনে জমাও দিয়ে আসেন তিনি ৷ মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ, মঙ্গলবার সকালেই সংসদের অভ্যন্তরে বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, দেবেন্দ্র ফড়নবিশের ইস্তফার সিদ্ধান্তও সেই সূত্রেই ৷ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন BJP-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও ৷
NCP-র অজিত পাওয়ারকে ঘিরে গত চারদিন মারাঠা ভূমের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি নানা খাতে বয়েছে। যেভাবে শনিবার ভোর রাতে অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতার ঘুম ভাঙার আগে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং অজিত পাওয়ার মন্ত্রিসভা গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন, তা ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর । বিষয়টিকে চক্রান্ত, অজিত পাওয়ারের বিশ্বাসঘাতকতা এমন অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে যায় NCP-কংগ্রেস-শিবসেনা জোট । পিঠ বাঁচাতে এবং এমন নিজের অতীত নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করতেই শরদ পাওয়ার ঘোষণা করেন, অজিতের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত। দল বা বিধায়কদের কোনও সম্পর্ক নেই । দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সেই সময় বলেছিলেন, '' BJP মহারাষ্ট্রের মানুষকে স্থায়ী সরকার দিতে চায়। শিবসেনা জনাদেশ মেনে নেয়নি। '' শপথগ্রহণের পর ফড়নবিশ ও পাওয়ারকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । কিন্তু স্থায়ী সরকারের মুখ দেখল না মহারাষ্ট্র । কার্যত সরকার গঠনের আগেই পদত্যাগ করলেন সদ্য শপথ নেওয়া মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী ।
আজ সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, আগামীকাল আস্থা ভোট করতে হবে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় । শীর্ষ আদালতের রায়ের পর দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠক হয় অজিত পাওয়ারের। তারপরই ইস্তফা দেন পাওয়ার । পাওয়ার পদত্যাগ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেবেন্দ্র ফড়নবিশও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান । এর ফলে আস্থা ভোটের আর কোনও গুরুত্বই রইল না ।
-
Mumbai: Devendra Fadnavis submits his resignation to Governor Bhagat Singh Koshyari #Maharashtra. pic.twitter.com/0oGLYJ7qrN
— ANI (@ANI) November 26, 2019 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">Mumbai: Devendra Fadnavis submits his resignation to Governor Bhagat Singh Koshyari #Maharashtra. pic.twitter.com/0oGLYJ7qrN
— ANI (@ANI) November 26, 2019Mumbai: Devendra Fadnavis submits his resignation to Governor Bhagat Singh Koshyari #Maharashtra. pic.twitter.com/0oGLYJ7qrN
— ANI (@ANI) November 26, 2019
আজ সাংবাদিক বৈঠকে ফড়নবিশ বলেন,
- শিবসেনা ভোটের আগে আমাদের বলেছিল, যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে দেবে, তাদের সঙ্গেই সেনা জোট গড়বে ।
- সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে মহাদ্যুতি । BJP ১০৫টি আসন পেয়েছে । শিবসেনার সঙ্গে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি । কিন্তু জনমত ছিল BJP-এর পক্ষে । কারণ এই দলই ৭০ শতাংশ আসন পেয়েছে ।
- আমরা শিবসেনার জন্য বহুদিন অপেক্ষা করেছি, কিন্তু জবাব পাইনি । বরং তারা কংগ্রেস-NCP জোটের সঙ্গে কথা বলেছে । যারা কখনওই বাল ঠাকরের বাড়ি (মাতশ্রী) থেকে বেরোয়নি, তারাই যার সঙ্গে পেরেছে দেখা করেছে দরজায় দরজায় ঘুরে, শুধুমাত্র কংগ্রেস-NCP জোটের সঙ্গে সরকার গড়বে বলে।
- মহারাষ্ট্রের মানুষের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে ছিল । তবে আমরা দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করব ।
- অজিত পাওয়ার ইস্তফা দেওয়ার পর আমাদের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই । তিনি আমাদের বলেছেন, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন।
- তিনি আমাদের সমর্থন করেছিলেন, তার ভিত্তিতেই বাকিটা এগিয়েছে ।
- ভোটের আগে আমরা শিবসেনাকে কোনও প্রতিশ্রুতি দিইনি ।
- রাজ্যপাল আমাদের সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান।