জিন্দ ও লুধিয়ানা, 10 জুন : শেষ দশকে জমিতে ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে । কৃষিকাজে ব্যবহৃত সামগ্রীর বাণিজ্যিকীকরণ হওয়ার পর দেশে কৃত্রিম রাসায়নিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে । আর এই কীটনাশক ও কৃত্রিম রাসায়নিক ব্যবহারে সর্বাগ্রে রয়েছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা । ফলে যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিল সেরকমটাই ঘটতে শুরু করল । জমিতে কীটনাশকের খারাপ প্রভাবগুলি প্রকট হতে শুরু করল ।
সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে 27 টি কীটনাশকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব করা হয়েছে । যার ফলে বিভিন্ন কীটনাশক উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত একাংশের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয় ।
চাল ও গম হরিয়ানায় উৎপাদিত প্রধান শস্য । এছাড়াও ভুট্টা, আখ, অড়হর ডাল, তিল, বিনস, বাদাম ও তুলো চাষ হয় হরিয়ানায় । রোগ ও জীবাণু থেকে ফসলকে বাঁচাতে 75 শতাংশ জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করেন এখানকার চাষিরা । উল্লেখযোগ্য বিষয় হল ব্যবহৃত কীটনাশকের মাত্র 1 শতাংশ কীট নাশ করে । আর বাকি 99 শতাংশ ফসলের সঙ্গে মিশে যায় । ফলে যাঁরা এই ফসল গ্রহণ করেন তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন ।
স্থানীয় এক চাষি রণধীরের মতে, সরকারের সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত হলেও কীটনাশক ছাড়া কৃষিকাজ করা অত্যন্ত কঠিন । যদি খেতে আগাছা থেকে যায় তাহলে তা বিশাল পরিমাণ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে । এই কীটনাশকগুলি নিষিদ্ধ করলে চাষিদের বোঝা আরও বাড়বে । ফলে উৎপাদনের খরচও বাড়বে ।
অপর এক চাষি রামফল কান্দেলা বলেন, "রাসায়নিকের নিষিদ্ধকরণ সঠিক । কিন্তু তার বিকল্প খুঁজে বের করাও জরুরি । সবার আগে আমাদের রাসায়নিকের বিকল্প দিতে হবে । সরকার ইচ্ছেকৃতভাবে ফসল নষ্ট করার চেষ্টা করছে । "
হিসারের চৌধুরি চরণ সিং হরিয়ানা এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির পতঙ্গ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান যোগেশ কুমার বলেন, "চাষিরা কীট নিয়ন্ত্রণে এই রাসায়নিকগুলি ব্যবহার করেন । যদি তাঁরা রাসায়নিক ব্যবহার না করে তাহলে উৎপাদনে প্রভাব পড়বে ।" যদিও তিনি জানিয়েছেন, এই রাসায়নিকগুলি যতটা সম্ভব কম মাত্রায় ব্যবহার করা উচিত ।
লুধিয়ানার মুখ্য কৃষি কর্মকর্তা নরিন্দর পাল সিং বেনিয়ালের মতে, সরকারি প্রকল্পের আওতায় যে কীটনাশকগুলিকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে সেগুলি মানুষের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে । ফলে সরকার সঠিক পদক্ষেপ করেছে । এর ফলে জৈব চাষে জোর দেওয়া যাবে ।
কীটনাশক নিষিদ্ধকরণের প্রস্তাব সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কৃষিমন্ত্রক ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারীদের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানানোর জন্য 45 দিনের সময় দিয়েছে ।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে কীটনাশগুলি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে অ্যাসফেট, আলট্রিজিন, ক্যাপ্টেন, ডাইকোফল, ডাইমথট, মানকোজেব, মিথোমিল, মোনোক্রোটোফস, অক্সিফ্লোরিন, জিনেব ও জিরাম ।