ETV Bharat / bharat

ফ্লু না কোরোনা, বুঝবেন কীভাবে ?

author img

By

Published : Jun 25, 2020, 10:52 AM IST

সাধারণ সর্দি-কাশি আর ইনফ্লুয়েঞ্জ়া (ফ্লু) বর্ষাকালের অতিপরিচিত রোগ । কিন্তু, এখন হাঁচি, কাশি, সর্দি হলেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক । ফ্লু না কোরোনা ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ?

Flu or COVID
Flu or COVID

হায়দরাবাদ, 25 জুন : বর্ষায় দেশে ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব নতুন নয় । কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাঁচি, কাশি, সর্দি হলেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক । সামান্য জ্বর হলেও COVID-১৯-এর সংক্রমণ বলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মানুষের মনে । অনেকেই ভাবছেন, একবার কোরোনা পরীক্ষা করিয়ে নেবেন কি না ! এর প্রভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যেই দেশে বর্ষা এসেছে । আর তার সঙ্গেই এসেছে ঋতুকালীন পরিবর্তন এবং সংক্রমণ । সাধারণ সর্দি-কাশি আর ইনফ্লুয়েঞ্জ়া (ফ্লু) বর্ষাকালের অতিপরিচিত রোগ । কিন্তু, এ'বার কোরোনা সংক্রমণের জেরে কারও সর্দি হয়েছে দেখলেই ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ । যদিও উপসর্গের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাদৃশ্য রয়েছে, তবুও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, COVID-19-এর কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ রয়েছে । কোনও সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোরোনা হয়েছে না ফ্লু, তা নির্ধারণ করতে তিন থেকে চারদিন সময় লাগে । কিন্তু যাদের প্রাণের ঝুঁকি বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে সর্দি, কাশি বা জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।

মরশুমি রোগের তালিকায় সর্দি, কাশিই সবচেয়ে সাধারণ । একাধিক ভাইরাস যেমন, রাইনো ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগগুলি হয় । সাধারণত উপসর্গ কমতে শুরু করে পাঁচদিন পর থেকে । যদিও সর্দি, কাশির থেকে নিরাময় কোনও ওষুধই দিতে পারে না । তবু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এর সঙ্গে লড়াই করতে পারদর্শী ।

ইনফ্লুয়েঞ্জ়া বা ফ্লু হল আরও একটি ঋতুকালীন শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণ । ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার এক থেকে চারদিনের মধ্যে এর লক্ষণগুলি ধরা পড়ে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাঁচ-সাতদিন পর সংক্রমণ দূর হয় । ফ্লু-তে আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং তরল খাবার উপকারী । বেশি অসুস্থ হলে ওষুধের দোকানে সহজেই পাওয়া যায় এমন (ওভার দা কাউন্টার তথা OTC) ওষুধ খেতে বলা হয় । সাধারণত এক্ষেত্রে খুব কম সংখ্যক রোগীকেই হাসপাতালে ভরতি করতে হয় ।

কোরোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের 1 থেকে 14 দিনের মাথায় উপসর্গ দেখা দেয় । বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে, COVID-19 আক্রান্তদের মধ্যে 95 শতাংশেরই লক্ষণ দেখা গিয়েছে 11 দিনের মাথায় । 85 শতাংশ রোগীর কোনও জটিলতাই হয়নি । আর বাকি 15 শতাংশের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে । এই 15 শতাংশের মধ্যে আবার মাত্র পাঁচ শতাংশের ক্ষেত্রে ICU বা আপৎকালীন চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে । মানবহ দেহের ফুসফুসে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয় । যারা আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা ক্যানসারের মতো রোগে ভুগছে, তাদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ তখনই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, যদি তা যথাসময়ে নির্ধারণ না করা হয় এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হয় । অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এম ভি রাও বলেন, "কোরোনা এবং ফ্লু-এর উপসর্গ এক । ফ্লু-এর ক্ষেত্রে রোগীদের 101 ডিগ্রির উপরে জ্বর আসতে পারে । কিন্তু, কোরোনার ক্ষেত্রে সাধারণত তা হয় না । আবার, COVID-19-এর প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ গ্রহণ করার ক্ষমতা কমে আসাও অন্যতম । আক্রান্তরা অল্পেই খুব ক্লান্ত হয়ে যান । আর যাঁদের ফুসফুস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা ক্যানসার আছে অথবা যাদের বয়স 10 বছরের নিচে, তাঁদের কোরোনা হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি । কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই অবিলম্বে তাদের চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত ।"

জনস্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের ডিরেক্টর ডা. জি শ্রীনিবাস রাও বলেন, "প্রতি মাসে তেলাঙ্গানায় অন্তত 15 থেকে 20 হাজার মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে । জুন থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে যায় । সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুত । সমাজ তথা তৃণমূল স্তরে কর্মীরা ফুসফুসে সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের সম্পর্কে ইতিমধ্যেই তথ্য সংগ্রহে নেমে পড়েছেন । কোরোনা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জেরে সার্জিকাল ফেস মাস্কের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে । এমনকী বায়ুবাহিত রোগ প্রতিরোধেও ফেস মাস্ক কার্যকরী । চলতি মাসে তেলাঙ্গানায় মাত্র 6 হাজার ফুসফুসে সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে ।"

হায়দরাবাদ, 25 জুন : বর্ষায় দেশে ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব নতুন নয় । কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাঁচি, কাশি, সর্দি হলেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক । সামান্য জ্বর হলেও COVID-১৯-এর সংক্রমণ বলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মানুষের মনে । অনেকেই ভাবছেন, একবার কোরোনা পরীক্ষা করিয়ে নেবেন কি না ! এর প্রভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যেই দেশে বর্ষা এসেছে । আর তার সঙ্গেই এসেছে ঋতুকালীন পরিবর্তন এবং সংক্রমণ । সাধারণ সর্দি-কাশি আর ইনফ্লুয়েঞ্জ়া (ফ্লু) বর্ষাকালের অতিপরিচিত রোগ । কিন্তু, এ'বার কোরোনা সংক্রমণের জেরে কারও সর্দি হয়েছে দেখলেই ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ । যদিও উপসর্গের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সাদৃশ্য রয়েছে, তবুও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, COVID-19-এর কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ রয়েছে । কোনও সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোরোনা হয়েছে না ফ্লু, তা নির্ধারণ করতে তিন থেকে চারদিন সময় লাগে । কিন্তু যাদের প্রাণের ঝুঁকি বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে সর্দি, কাশি বা জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।

মরশুমি রোগের তালিকায় সর্দি, কাশিই সবচেয়ে সাধারণ । একাধিক ভাইরাস যেমন, রাইনো ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগগুলি হয় । সাধারণত উপসর্গ কমতে শুরু করে পাঁচদিন পর থেকে । যদিও সর্দি, কাশির থেকে নিরাময় কোনও ওষুধই দিতে পারে না । তবু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এর সঙ্গে লড়াই করতে পারদর্শী ।

ইনফ্লুয়েঞ্জ়া বা ফ্লু হল আরও একটি ঋতুকালীন শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণ । ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার এক থেকে চারদিনের মধ্যে এর লক্ষণগুলি ধরা পড়ে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাঁচ-সাতদিন পর সংক্রমণ দূর হয় । ফ্লু-তে আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং তরল খাবার উপকারী । বেশি অসুস্থ হলে ওষুধের দোকানে সহজেই পাওয়া যায় এমন (ওভার দা কাউন্টার তথা OTC) ওষুধ খেতে বলা হয় । সাধারণত এক্ষেত্রে খুব কম সংখ্যক রোগীকেই হাসপাতালে ভরতি করতে হয় ।

কোরোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের 1 থেকে 14 দিনের মাথায় উপসর্গ দেখা দেয় । বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে, COVID-19 আক্রান্তদের মধ্যে 95 শতাংশেরই লক্ষণ দেখা গিয়েছে 11 দিনের মাথায় । 85 শতাংশ রোগীর কোনও জটিলতাই হয়নি । আর বাকি 15 শতাংশের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে । এই 15 শতাংশের মধ্যে আবার মাত্র পাঁচ শতাংশের ক্ষেত্রে ICU বা আপৎকালীন চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে । মানবহ দেহের ফুসফুসে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয় । যারা আগে থেকেই ডায়াবেটিস বা ক্যানসারের মতো রোগে ভুগছে, তাদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ তখনই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, যদি তা যথাসময়ে নির্ধারণ না করা হয় এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হয় । অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এম ভি রাও বলেন, "কোরোনা এবং ফ্লু-এর উপসর্গ এক । ফ্লু-এর ক্ষেত্রে রোগীদের 101 ডিগ্রির উপরে জ্বর আসতে পারে । কিন্তু, কোরোনার ক্ষেত্রে সাধারণত তা হয় না । আবার, COVID-19-এর প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ গ্রহণ করার ক্ষমতা কমে আসাও অন্যতম । আক্রান্তরা অল্পেই খুব ক্লান্ত হয়ে যান । আর যাঁদের ফুসফুস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা ক্যানসার আছে অথবা যাদের বয়স 10 বছরের নিচে, তাঁদের কোরোনা হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি । কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই অবিলম্বে তাদের চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত ।"

জনস্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের ডিরেক্টর ডা. জি শ্রীনিবাস রাও বলেন, "প্রতি মাসে তেলাঙ্গানায় অন্তত 15 থেকে 20 হাজার মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে । জুন থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে যায় । সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুত । সমাজ তথা তৃণমূল স্তরে কর্মীরা ফুসফুসে সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের সম্পর্কে ইতিমধ্যেই তথ্য সংগ্রহে নেমে পড়েছেন । কোরোনা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জেরে সার্জিকাল ফেস মাস্কের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে । এমনকী বায়ুবাহিত রোগ প্রতিরোধেও ফেস মাস্ক কার্যকরী । চলতি মাসে তেলাঙ্গানায় মাত্র 6 হাজার ফুসফুসে সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.