ETV Bharat / bharat

স্থগিত রাখুন কৃষি আইন, না হলে আমরা পদক্ষেপ করব : কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্ট - Supreme Court

নতুন তিনটি কৃষি আইন কি কিছুদিনের জন্য স্থগিত করে রাখে যেতে পারে? প্রশ্ন তুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। আরও একাধিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি কৃষি আইন নিয়ে যা চলছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এর দায় যে কারও পক্ষেই এড়ানো সম্ভব নয়, সেটাও এদিন শুনানিতে স্পষ্ট করে দেন প্রধান বিচারপতি।

Supreme court
কেন্দ্র কৃষি আইন আপাতত স্থগিত না করলে সুপ্রিম কোর্টই স্থগিতাদেশ দেবে, শুনানিতে জানালেন প্রধান বিচারপতি
author img

By

Published : Jan 11, 2021, 12:44 PM IST

Updated : Jan 11, 2021, 3:59 PM IST

দিল্লি, 11 জানুয়ারি : কৃষি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে কৃষি আইন নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে এখনই এই আইন কার্যকর না করার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে যে কেন্দ্র এই পরামর্শ না শুনলে তারাই এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ দেবে।

গতবছরের সেপ্টেম্বরে বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি কৃষি আইন পাশ করায়। কৃষক সংগঠনগুলি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, ওই আইন কৃষক বিরোধী। নভেম্বরের শেষে 40টি কৃষক সংগঠন ওই আইন প্রত্যাহারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। প্রায় মাস দেড়েক ধরে তারা অবস্থান বিক্ষোভ করছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনাও চলছে। যদিও সেই আলোচনায় কোনও সমাধানসূত্র এখনও বের হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার সেই মামলার শুনানি শুরু হয় প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির শুরুতেই একাধিক পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি কেন্দ্রের মোদি সরকারকে প্রশ্ন করেন, নতুন তিনটি কৃষি আইন কি কিছুদিনের জন্য স্থগিত করে রাখা যেতে পারে? আর তার পরই তিনি বলেন, "যদি কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইন কার্যকর করা থেকে বিরত হতে না চায়, তাহলে আমরাই স্থগিতাদেশ দেব।"

আরও পড়ুন : দৈনিক সংক্রমণ কমল 2 হাজার, 24 ঘণ্টায় মৃত 161

এই মন্তব্য করার আগে আরও একাধিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি কৃষি আইন নিয়ে যা চলছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রশ্ন তোলেন, "কী ধরনের সমঝোতা চলছে, তা আমরা জানি না।" আইনের বিরুদ্ধে বয়স্ক কৃষক ও মহিলারা নেমেছেন রাস্তায়, এটাও তাঁর পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। এর দায় যে কারও পক্ষেই এড়ানো সম্ভব নয়, সেটাও এদিন শুনানিতে স্পষ্ট করে দেন প্রধান বিচারপতি।

প্রধান বিচারপতি যখন কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন যে সরকার এই আইন আরও ভালো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আনতে পারত, তখন সরকারি তরফে অ্যাটর্নি জেনেরাল কে কে বেণুগোপাল পালটা আদালতের উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী নজির টেনে এনে তিনি জানিয়েছেন, আদলত এই আইন স্থগিত করতে পারে না। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন যে সংসদীয় দক্ষতা ছাড়া এই আইন পাশ হয়েছে এবং এই আইন মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে, এই দুটি বিষয় প্রমাণিত না হলে আদালত পাশ হয়ে যাওয়া কোনও আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিতে পারে না। পাশাপাশি অ্যাটর্নি জেনেরাল আগামী 26 জানুয়ারি কৃষকদের ট্রাক্টর মার্চের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। ওই দিন দিল্লিতে এটা করলে দেশের কাছে প্রজাতন্ত্র দিবসের যা গুরুত্ব তা খর্ব হবে বলে তিনি মনে করেন।

কৃষকদের পক্ষ থেকে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে একাধিক মামলা হয়েছে। ওই মামলাগুলির একটি পক্ষের আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে। তাঁর দাবি, কৃষকরা কোনওরকম হিংসা ছড়াতে চান না। তাঁদের অন্তত রামলীলা ময়দান পর্যন্ত যেতে দেওয়া উচিত। কৃষি আইন সংসদে ধ্বনি ভোটে পাশ হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে দুষ্মন্ত দাভের প্রশ্ন, কীভাবে সরকার এটা করতে পারল এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ আইনের ক্ষেত্রে? তাঁর দাবি, সরকারের উচিত ছিল সংসদে যৌথ অধিবেশন বসিয়ে এই আইন পাশ করানো। সরকার কেন এর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : আদালত কৃষি আইন রদ উপযুক্ত মনে করলে স্বাগত : হান্নান মোল্লা

সওয়াল-জবাব চলাকালীন প্রধান বিচারপতি জানান, কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে ঠিকমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। তাই আজই আদালত কিছু একটা পদক্ষেপ করবে। এই আইন কিছু সময়ের জন্য কি স্থগিত করে রাখা যেতে পারে, সেই প্রশ্ন আবারও কেন্দ্রের কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। তিনি এক আবেদনকারীর উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেন যে আদালত একটি কমিটি গড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। আর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আইন কার্যকর করার বিষয়টি স্থগিত রাখার বিষয়েও ভাবছে।

দিল্লি, 11 জানুয়ারি : কৃষি আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে কৃষি আইন নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে এখনই এই আইন কার্যকর না করার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে যে কেন্দ্র এই পরামর্শ না শুনলে তারাই এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ দেবে।

গতবছরের সেপ্টেম্বরে বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি কৃষি আইন পাশ করায়। কৃষক সংগঠনগুলি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, ওই আইন কৃষক বিরোধী। নভেম্বরের শেষে 40টি কৃষক সংগঠন ওই আইন প্রত্যাহারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। প্রায় মাস দেড়েক ধরে তারা অবস্থান বিক্ষোভ করছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনাও চলছে। যদিও সেই আলোচনায় কোনও সমাধানসূত্র এখনও বের হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার সেই মামলার শুনানি শুরু হয় প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির শুরুতেই একাধিক পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি কেন্দ্রের মোদি সরকারকে প্রশ্ন করেন, নতুন তিনটি কৃষি আইন কি কিছুদিনের জন্য স্থগিত করে রাখা যেতে পারে? আর তার পরই তিনি বলেন, "যদি কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইন কার্যকর করা থেকে বিরত হতে না চায়, তাহলে আমরাই স্থগিতাদেশ দেব।"

আরও পড়ুন : দৈনিক সংক্রমণ কমল 2 হাজার, 24 ঘণ্টায় মৃত 161

এই মন্তব্য করার আগে আরও একাধিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি কৃষি আইন নিয়ে যা চলছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রশ্ন তোলেন, "কী ধরনের সমঝোতা চলছে, তা আমরা জানি না।" আইনের বিরুদ্ধে বয়স্ক কৃষক ও মহিলারা নেমেছেন রাস্তায়, এটাও তাঁর পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। এর দায় যে কারও পক্ষেই এড়ানো সম্ভব নয়, সেটাও এদিন শুনানিতে স্পষ্ট করে দেন প্রধান বিচারপতি।

প্রধান বিচারপতি যখন কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন যে সরকার এই আইন আরও ভালো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আনতে পারত, তখন সরকারি তরফে অ্যাটর্নি জেনেরাল কে কে বেণুগোপাল পালটা আদালতের উদ্দেশ্যেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী নজির টেনে এনে তিনি জানিয়েছেন, আদলত এই আইন স্থগিত করতে পারে না। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন যে সংসদীয় দক্ষতা ছাড়া এই আইন পাশ হয়েছে এবং এই আইন মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে, এই দুটি বিষয় প্রমাণিত না হলে আদালত পাশ হয়ে যাওয়া কোনও আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিতে পারে না। পাশাপাশি অ্যাটর্নি জেনেরাল আগামী 26 জানুয়ারি কৃষকদের ট্রাক্টর মার্চের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। ওই দিন দিল্লিতে এটা করলে দেশের কাছে প্রজাতন্ত্র দিবসের যা গুরুত্ব তা খর্ব হবে বলে তিনি মনে করেন।

কৃষকদের পক্ষ থেকে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে একাধিক মামলা হয়েছে। ওই মামলাগুলির একটি পক্ষের আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে। তাঁর দাবি, কৃষকরা কোনওরকম হিংসা ছড়াতে চান না। তাঁদের অন্তত রামলীলা ময়দান পর্যন্ত যেতে দেওয়া উচিত। কৃষি আইন সংসদে ধ্বনি ভোটে পাশ হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে দুষ্মন্ত দাভের প্রশ্ন, কীভাবে সরকার এটা করতে পারল এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ আইনের ক্ষেত্রে? তাঁর দাবি, সরকারের উচিত ছিল সংসদে যৌথ অধিবেশন বসিয়ে এই আইন পাশ করানো। সরকার কেন এর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : আদালত কৃষি আইন রদ উপযুক্ত মনে করলে স্বাগত : হান্নান মোল্লা

সওয়াল-জবাব চলাকালীন প্রধান বিচারপতি জানান, কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে ঠিকমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। তাই আজই আদালত কিছু একটা পদক্ষেপ করবে। এই আইন কিছু সময়ের জন্য কি স্থগিত করে রাখা যেতে পারে, সেই প্রশ্ন আবারও কেন্দ্রের কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। তিনি এক আবেদনকারীর উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেন যে আদালত একটি কমিটি গড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। আর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আইন কার্যকর করার বিষয়টি স্থগিত রাখার বিষয়েও ভাবছে।

Last Updated : Jan 11, 2021, 3:59 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.