লাদাখ, 6 জুলাই : অবশেষে পিছু হটল চিন ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে দুই কিলোমিটার পিছনে সরে গেছে চিনের সেনাবাহিনী ৷ ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, কর্পস কমান্ডার স্তরে বৈঠকের পর তাঁবু, গাড়ি এবং বাহিনী সরিয়ে নিয়েছে চিন। তবে গালওয়ান নদীর পার্শ্ববর্তী দুর্গম এলাকায় এখনও অস্ত্রবাহী গাড়ি মোতায়েন রেখেছে চিন। ভারতীয় সেনা সেদিকে নজর রেখেছে।
15 জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিন সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হন 20 জন ভারতীয় জওয়ান ৷ অন্যদিকে ভারতের তরফে চিন সেনারও 43 জন জওয়ানের হতাহতের কথা বলা হলেও, চিন তা স্বীকার করেনি। 15 জুনের ঘটনার পর LAC জুড়ে অস্থায়ী শিবির তৈরি করে চিন সেনা ৷ জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফেও উপত্যকায় অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা হয় ৷ দুই তরফে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ৷ সীমান্তে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে 3 জুলাই প্রধানমন্ত্রী লে-তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেখা করতে যান ৷ সেখানে সেনা হাসপাতাল পরিদর্শন করে চিনের আগ্রাসী আচরণের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, “ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, সম্প্রসারণবাদীরা হয় হেরে গিয়েছে, না হয় পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।”
পরিস্থিতির সুরাহা করতে সম্প্রতি দুই দেশের সেনাবাহিনীর কমান্ডার স্তরে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে ৷ সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গালওয়ান উপত্যকার সীমান্তরেখা থেকে দুই দেশের সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ৷ সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি সীমান্ত থেকে তাদের গাড়ি, তাঁবুসহ সেনাবাহিনী দুই কিমি পিছিয়ে নিয়ে গিয়েছে ৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে সরাসরি ঘটনাস্থান পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে ৷ তাঁবু ও কিছু সংখ্যক সেনাবাহিনী সরানো হলেও LAC-তে এখনও অস্ত্রসজ্জিত চিনা সেনাবাহিনীর গাড়ি উপস্থিত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ সম্পূর্ণ বিষয়টির উপর নজর রাখছে ভারতীয় সেনা ৷
30 জুনের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গালওয়ান, প্যাংগং ও উষ্ণ প্রস্রবণ অঞ্চল থেকে দুই দেশের সেনাবাহিনীকেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ৷ এর পরবর্তী স্তরে ‘‘ডেপথ এরিয়া’’ যেমন ডেপসাং সমতলভূমি থেকে সেনাবাহিনী সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ৷
15 জুনের সংঘর্ষের পর 19 জুন চিনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, গালওয়ান উপত্যকা ভারত-চিন সীমান্তের চিনের LAC-র পশ্চিমভাগে অবস্থিত ৷ ফলে, গালওয়ান উপত্যকাকে চিন তাদের নিজেদের অংশ বলে দাবি করতে পারে, সেই জল্পনা শুরু হয় ৷