দিল্লি, 24 জুন : চিনের বিদেশমন্ত্রক ও প্রতিরক্ষামন্ত্রক । দুই দিক থেকেই দিল্লির উপর চাপ বাড়াচ্ছে বেজিং । 15 জুনের রাতে গালওয়ানের সীমান্ত সংঘর্ষের জন্য ভারতকেই দায়ি করছে চিন । ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও দেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশ নাকি চিনের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে উসকানি দিচ্ছে । দিল্লির বিরুদ্ধে এবার এই অভিযোগ তুলল বেজিং।
লাদাখের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে দুই দেশের কূটনৈতিকস্তরে । 22 জুন ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিকস্তরে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা হয় । বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল, দুই দেশের মধ্যে যে সংঘর্ষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করা এবং যে মতানৈক্যগুলি রয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা । এরপরই আজ চিনের বিদেশমন্ত্রক ও প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে অভিযোগ করা হয়, দিল্লি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং সীমান্ত সংঘর্ষে উসকানি দিয়েছে ।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় 75তম ভিকট্রি ডে প্যারেডে অংশ নিতে তিনদিনের সফরে মস্কোয় গেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং । ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও । এই সফর প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর আন্তর্জাতিক নিয়মের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছিলেন । বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম সব দেশের মেনে চলা উচিত ৷ কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এস জয়শংকরের ওই মন্তব্যের প্রক্ষিতেই চিন আন্তর্জাতিক নিয়মের কথা বলেছে ।
15 জুনের রাতে গালওয়ানে সীমান্ত সংঘর্ষে শহিদ হন ভারতীয় সেনার 20 জন জওয়ান । অন্যদিকে চিনের অনেক জওয়ানও নিহত হয় সেই সংঘর্ষে । এরপর শান্তি পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে দ্বিপাক্ষিকস্তরে আলোচনাও হয় । কিন্তু, তারপরেও চিনের তরফে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের কথা শুনতে চাইছে না ভারত । চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজ়িয়ন আজ এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "পরিস্থিতি নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তা কাটানো এবং সকলকে সত্যিটা জানানো দরকার । ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও সেখানকার সংবাদমাধ্যমের একাংশ সীমান্ত সংঘর্ষে উসকানি দিয়েছে।"
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিং সম্প্রতি বলেছিলেন, ভারতীয় সেনার যে ক'জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন, চিনে তার দ্বিগুণ জওয়ান মারা গেছে । গতকালই ভি কে সিংয়ের এই মন্তব্যকে ভুয়ো খবর বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজ়িয়ন । বিবৃতিতে ঝাও লিজ়িয়ন অভিযোগ করেন, 6 জুন ভারতের জওয়ানরা রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পার করে চিনের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে । আর এতেই সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়া হয় । এরপর চিনের সেনাও ঘটনার পালটা প্রতিক্রিয়া দেয় ।"