খুব শীঘ্রই ভারত একটি 5 ট্রিলিয়ন অর্থনীতির দেশ হতে চলেছে । অপর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা এবং মাশুলভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র সত্ত্বেও বিশ্বের আর কোনও বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এত তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি করতে পারেনি । 2022 সালে স্বাধীনতার 75 তম বর্ষে পদার্পণ করার মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছে ভারত । কিন্তু এর মধ্যেই ভারতীয় অর্থনীতির এই দশা চোখে পড়ার মতো প্রকট হয়ে উঠেছে । কারণ এখনও জনবসতি গড়ে তোলার জন্য পর্যাপ্ত আবাসন দেশে গড়ে ওঠেনি আবার অন্যদিকে নির্মাণ সম্পূর্ণ হলেও অবিক্রিত আবাসনের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, যা লগ্নিকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়ে চলেছে । ভারতে পর্যাপ্ত আবাসনের সমস্যা নতুন নয় ৷ সেই 1980 সাল থেকে আবাসন নীতিতে নানা ধরনের জরুরি বদল ঘটেছে, কিন্তু কোনও কিছুতেই সাফল্য আসেনি । বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে আবাসনের ঘাটতি 1.87 কোটি ইউনিট, যা 2030 সালে বেড়ে দাঁড়াবে 2 দশমিক 5 কোটি ইউনিটে । আরও বেশি আবাসন তৈরি করে এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব ৷ কিন্তু যে দিকে সবচেয়ে আগে নজর দিতে হবে, তা হল এই সত্য অনুধাবন করা যে দেশের আবাসন বাজার অতিমাত্রায় নিষ্ক্রিয় । সম্পত্তি বা মাশুলভিত্তিক বাজারেই এর প্রতিফলন সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং আইনকানুন ও নিয়মনীতিতে জরুরি বদল না আনা হলে দেশে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন থাকবেই না । অবৈধভাবে বসতির ভয়ে যেখানে বেশিরভাগ আবাসনই বন্ধ রাখা হয়, জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে চাহিদা বৃদ্ধি পায় । আর এ সবের জেরে আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে গিয়ে জমির প্রয়োজন এবং জমির দাম দুই'ই উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে । এর অর্থ হল , যে হারে জমি এবং আবাসনের দাম বেড়ে চলেছে, তার কারণের তালিকায় নানা জটিল বিষয় জড়িয়ে রয়েছে, যার দ্রুত সমাধান করতে হবে । যার সমাধান লুকিয়ে আছে রাজ্য সরকারগুলির কাছে । যতক্ষণ না তারা এ বিষয়ে কোনও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, ততক্ষণ ঝুঁকি রয়েই যাচ্ছে যে আবাসন প্রকল্পের মালিকরা আবাসন ভাড়া দেওয়ার বদলে তা খালি রাখতেই বেশি পছন্দ করবেন ।
ইশু কী
জনসংখ্যা বৃদ্ধির জেরে শহরের আকার যেভাবে বেড়েছে, তা আবাসনের ঘাটতির সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে । এর আরও একটি কারণ এটাও যে, বাড়ি ভাড়া আইন আদপে খুবই প্রাচীন এবং বর্তমান আর্থিক অবস্থার সঙ্গে এর কোনও মিল নেই । বাড়িভাড়া, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ, লিজ এবং ভাড়াটেদের বাড়ি ছাড়া করা সংক্রান্ত বেশিরভাগ আইনই 1980 সালের আগে পাস করা হয়েছিল । অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলাঙ্গানা-র ক্ষেত্রে অন্ধ্রপ্রদেশ বিল্ডিংস (লিজ, রেন্ট অ্যান্ড এভিকশন) কন্ট্রোল অ্যাক্ট 1960 সালে পাস হয়েছিল । পরে এই আইনে 2005 সালে সামান্য কিছু সংশোধন করা হয় । এর মধ্যে বেশিরভাগ আইনেই বাড়ির মালিকের তুলনায় ভাড়াটে পক্ষকে বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে । ভাড়াটে পক্ষকে আইনি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি আইনে রাখা হয়েছিল ৷ যা দেশভাগের পরবর্তীকালে দেশের বেশিরভাগ অংশে যে পরিস্থিতি ছিল, তা বিচার করে । সেই সময় দেশে শরণার্থীদের বহুল সমাগম, দেশের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা - এ সবের ফলে তহবিল অতিমাত্রায় সংকুচিত হয়ে পড়েছিল । আর তারই ফলে প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্পসংখ্যক ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছিল আর তাই বাড়ি ভাড়া ছিল আকাশছোঁয়া । ঠিক এই কারণেই সেই সময় সরকারের তরফেও বাড়িভাড়া, তার বৃদ্ধি, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় ঠিক কী ধরনের ঘরবাড়ি তৈরি করা হবে - প্রভৃতি নিয়ে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল । স্বাধীনতার আগে প্রথম চার দশকে এই সব কিছু হয়তো জরুরি ছিল কারণ সেইসময় একটা বাড়ি তৈরি করতে সারা জীবন লেগে যেত এবং মাথার উপর ছাদ তৈরিই ছিল জীবনের লক্ষ্য (প্রাচীন তেলুগু প্রবাদে যেমন আছে পেলিচেসি চোরু, ইল্লুকাট্টি চোরু) । স্বাধীনতার আগে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য জায়গার অভাব বা ঘরবাড়ির সংখ্যা কম হওয়ার একটি অন্যতম কারণ অর্থাভাবও । কিন্তু 1991 সালে যখন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি আগের তুলনায় বেশি উদ্যোগী হল, তখন যে আর্থিক সংস্কার সাধন করা হয়েছিল, তার ফলে এই অবস্থার পরিবর্তন হয় । তবে শুধু তাই নয়, এর জন্য 1998-99 সালে যশবন্ত সিনহার সাধারণ বাজেটও বহুলাংশে দায়ী ৷ যেখানে মানুষকে বাড়ি বানানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে করছাড় দেওয়া হয়েছিল । বর্তমানে ঘরবাড়ি নির্মাণে যে বৃদ্ধি হয়েছে, তা এরই ফসল । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আর্থিক অবস্থার বদল ঘটলেও আইন কানুনে সেই বদল আসেনি ।
বর্তমানে যে আইনি কাঠামো রয়েছে, তার অর্থ এই যে, মালিকদের কাছে যে একমাত্র পথ রয়েছে, তা হল লিজ দেওয়ার জন্য চুক্তিপত্র সই করা—যার ফলে নতুন করে সমস্যার মুখে পড়েছেন সমস্ত অংশীদাররা । ভারতে এই সমস্যা চিরাচরিত ৷ মালিকদের চুক্তি সাক্ষরের পরও তাতে যে নিয়মনীতি আছে তা বেশিরভাগই এড়িয়ে যান কিংবা যা করণীয়, তা করেন না । এমনকী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চুক্তিপত্র যথাযথভাবে মানার বদলে তার বিপরীতটা করার ঘটনাই ঘটে থাকে । দুর্ভাগ্যজনকভাবে, রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী নিয়ম হল 100 টাকার উপরে দেওয়া সব লিজ এবং এক বছরের বেশি মেয়াদে দেওয়া লিজ নথিবদ্ধ করতেই হবে ৷ যার অন্যথা হলে আদালনে আইনি লড়াইয়ে প্রমাণ হিসাবে গৃহীত হবে না । এই সমস্যা আরও বেড়েছে কারণ ভারতে অধিকাংশ লিজ বা আইনি চুক্তিপত্র নথিবদ্ধ করা হয় না । এরই সুবিধা নেন বেশ কিছু বিবেকহীন মনোপ্রবৃত্তির ভাড়াটে এবং কখনও বিবেকহীন মালিকরাও । এই সমস্যা বর্তমানে আরও প্রকট হয়ে উঠেছে কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধূর্ত ভাড়াটে বা মালিকপক্ষরা আদালতে মামলা দায়ের করেন ৷ সেই মামলার নিষ্পত্তি হতে যে দীর্ঘ সময় লাগে, তার ফায়দা তোলেন তাঁরা । আবার কখনও কখনও ভাড়াটে পক্ষ অন্য পক্ষের সম্পত্তির মালিকানার অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য আদালতকে ফাঁদ হিসাবে ব্যবহার করেন এবং আদালতের বাইরে মামলার নিষ্পত্তি টানতে মালিক পক্ষের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থও নেন ।
সমাধান
এ নিয়ে সন্দেহ খুব কম যে কর্মসূচি প্রণেতা এবং আদালত, দু'য়েই ধীরে ধীরে হলেও বদল আসছে এবং তাঁরা বর্তমানে পরিবর্তিত আর্থিক পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন । 10-15 বছর আগেও ছবিটা এমন ছিল না । এখন আদালতগুলি ভাড়াটে পক্ষকে আর আগের মতো সামগ্রিক নিরাপত্তা প্রদান করে না । বরং ব্যবসার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করার স্বার্থে আরও বৃহত্তর প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে 2019 সালে কেন্দ্র সরকার গণআলোচনার জন্য ‘মডেল টেনেন্সি অ্যাক্ট, 2019’ (যার পরে নামকরণ হয় মডেল অ্যাক্ট) প্রকাশ করে । এই কেন্দ্রীয় ‘মডেল অ্যাক্ট’-এর উপর নির্ভর করে আইন পাস করতে রাজ্য সরকারগুলির পক্ষে বেশ সুবিধাজনক হয়েছে । প্রাচীন, অপ্রাসঙ্গিক সব আইনের তুলনায় এই মডেল অ্যাক্ট বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে ।
মডেল অ্যাক্টের মুখ্য বৈশিষ্ট্য হল, সমস্ত ভাড়াটেদের লিখিতভাবে সমস্ত নথিপত্র পূরণ এবং সইসাবুদ করতে হবে, আর তারপর তা বাধ্যতামূলকভাবে ‘রেন্ট অথরিটি’র কাছে নথিবদ্ধ করতে হবে, চুক্তিপত্র তৈরির দু’মাসের মধ্যে । যদি দু’পক্ষের কেউ এগিয়ে না আসে, ভাড়াটে পক্ষের সঙ্গে যুক্ত দ্বিতীয় পক্ষ চুক্তিপত্রের কপি পেশ করতে পারে - আর এই পদক্ষেপ আগের তুলনায় বড় পরিবর্তন । উভয় পক্ষই চুক্তিপত্র পেশ করলে একটি ইউনিক নম্বর আসবে । যদি দু’ই পক্ষের কোনও একটি রেন্ট অথরিটির কাছে কপি পেশ করে, তাহলে তাকেই প্রমাণ হিসাবে ধরে নেওয়া হবে ।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে, একবার এই চুক্তিপত্র রিনিউয়াল হওয়ার আগেই মেয়াদে উত্তীর্ণ হয়ে গেলে, তাকে একই নিয়মনীতি এবং শর্ত মেনে প্রতি মাসে রিনিউয়াল করতে হবে । মাত্র ছয় মাসের জন্য তা প্রযোজ্য থাকবে । ছয় মাস পর দু’মাসের জন্য মাসিক হারের তুলনায় দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ পাবে মালিক পক্ষ । দু’মাস পর এই অঙ্কই বেড়ে হবে চার গুণ । চুক্তিপত্র অনুযায়ী দু’মাস এই ভাড়া না পেলে মালিক পক্ষ ভাড়াটেকে ঘরছাড়া করতে পারবেন ।
ভাড়াটে পক্ষের জন্যও সুযোগসুবিধা রয়েছে । মডেল অ্যাক্টে স্পষ্টভাবে মালিক এবং ভাড়াটে, দু’পক্ষেরই দায়িত্বের কথা বলা আছে ৷ মালিক পক্ষ ভাড়াটের কাছ থেকে দু’মাসের বেশি সিকিউরিটি ডিপোজিট চাইতে পারবেন না । অনেক বড় বড় শহরে মালিক পক্ষ ভাড়াটেদের কাছ থেকে সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসাবে 6 থেকে 10 মাসের ভাড়া চান । চুক্তিপত্র স্থায়ী থাকাকালীন ভাড়াটেকে ঘরছাড়া করা যাবে না । ব্যতিক্রম কেবলমাত্র চুক্তিপত্রে বর্ণিত শর্তাবলী । আরও একটি জরুরি বিষয় হল চুক্তিপত্র যতদিন কার্যকরী আছে, ততদিন তা সংস্কার করা যাবে না ।
আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে চুক্তিপত্রের বৈধতা রক্ষা ছাড়া প্রথমবার স্পষ্টভাবে (প্রথমবার) ঘোষণা করে একজন 'প্রপার্টি ম্যানেজার'-এর প্রয়োজনীয়তার কথা । প্রপার্টি ম্যানেজারকে স্বীকৃতি দেন জমির মালিক । প্রপার্টি ম্যানেজার আবাসন চত্বরের নজরদারি করেন এবং ভাড়াটে পক্ষের সঙ্গে মালিক পক্ষের কথাবার্তার সময়, মালিক পক্ষের হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন । বাড়িভাড়ার চুক্তিপত্রের সঙ্গে প্রপার্টি ম্যানেজার ঘোষণা করে দেওয়া সম্ভব । প্রপার্টি ম্যানেজার ছাড়া অন্য কেউ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা চালাতে পারবেন না এবং মালিক পক্ষের সর্বোচ্চ সুবিধার্থে সম্পত্তির দেখভাল করা প্রপার্টি ম্যানেজারের পেশা এবং দায়িত্বের মধ্যে পড়ে । পেশাদার বাড়িভাড়া সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এগুলিই দরকারি বিষয় । যদিও বর্তমানে যে সংস্থাগুলি কাজ করছে, তাদের কাজ করা তথা ব্যবসা চালানোর সেই সক্রিয়তা নেই । সব মিলিয়ে, এর সামগ্রিক আর্থিক প্রভাবে যে সব ব্যক্তির কাছে অতিরিক্ত অর্থ আছে, তাঁরা সেই অর্থ আবাসন এবং বাণিজ্যক ব্যবহারের জন্য জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে লগ্নি করতে পারেন । এর থেকে বাড়িভাড়া বাবদ তাঁরা আয় করতে পারবেন ।
আইনি পরিকাঠামোর আওতায় বিচার করলে বোঝা যাবে যে, ইতিমধ্যেই এতে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে ৷ কারণ বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত আদালত এবং ট্রাইবুন্যালগুলি 1908 সালের কোড অফ সিভিল প্রসিডিওরে বর্ণিত বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় । তবে যতক্ষণ তারা বিচারের সাধারণ নিয়মনীতি মেনে চলছে, ততক্ষণ তারা নিজেদের নীতি নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে পারে । বর্তমানে এই ধরনের মামলা যেভাবে বিচার করা হয়, তার থেকে ভিন্ন পথে চলা মডেল অ্যাক্ট অনুযায়ী রেন্ট ট্রাইব্যুনাল দ্রুত মামলার বিচার করে এবং কোনও আবেদন পাওয়ার পর তার বিচারের জন্য 60 দিনের বেশি সময় নিতে পারে না । এর অর্থ হল, বর্তমানে মামলার বিচারে যে দেরী হয়, তা মডেল অ্যাক্টের ক্ষেত্রে হবে না । মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে । অর্থাৎ বর্তমান অবস্থায় যেমন ভাড়াটের ঘরছাড়া করার মামলায় এক থেকে 10 বছর সময় লেগে যেতে পারে, সেখানেই মডেল অ্যাক্ট যদি রাজ্য বিধানসভাগুলিতে পাস হয়ে যায়, তাহলে চুক্তিপত্রে বর্ণিত শর্তাবলী অনুযায়ী, ভাড়া ও ভাড়াটে সংক্রান্ত মামলাগুলির নিষ্পত্তি দায়রা আদালতগুলিতে এক বছরেরও কম সময়ে হতে পারে । এইভাবে এর ফলে শুধুমাত্র যে বিবেকহীন মালিক ও ভাড়াটেদের সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হবে, তাই নয়, বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহারও নিয়ন্ত্রিত হবে আবার দ্রুত বিচারও মিলবে ।
প্রভাব
মডেল অ্যাক্টের সবচেয়ে বড় গুরুত্ব নিহিত রয়েছে লিখিত চুক্তিপত্রের বৈধতায় ৷ সম্পত্তির নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির মধ্যেও । যদিও এটা এখনও বোঝা যায়নি যে, মডেল রেন্ট অ্যাক্ট-এর জেরে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন রাজ্য সরকারগুলিই । যার কারণ এই সরল সত্য যে সমস্ত চুক্তিপত্র লিখিত এবং নথিবদ্ধ হতে হবে । যেহেতু রাজ্যগুলিতে গড়ে 5 শতাংশেরও কম চুক্তিপত্র নথিবদ্ধ থাকে, তাই রাজ্য সরকারগুলি রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধি ও ভাড়া দেওয়া সম্পত্তির আয়তনের উপর নির্ভরশীল স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে লাভ করে । এই প্রবণতা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অধিকাংশ রাজ্যগুলিরই প্রয়োজন । আর এটা তখনই হতে পারে যদি চুক্তিপত্র যাঁরা নথিবদ্ধ করেন না, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয় । যেহেতু এই ব্যবস্থা সব ধরনের বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তাই এর ফলে নতুন বিধি অনুসারে জমির মালিক যে নিরাপত্তা পাবেন, তার জেরে এবং সব মামলার যে দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, তার ফলে ভবিষ্যতে আরও বেশি জমি ফাঁকা পাওয়া যাবে ।