ওড়িশা, 2 মার্চ: জীবনযাপন অত্যন্ত সাধারণ ৷ তবে নিজের কাজের মাধ্যমেই পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছেন কমলা পূজারি ৷ কাজ না বলে লড়াই বলাই ভালো ৷ তবে এটি আর পাঁচটা কাজের থেকে বেশ আলাদা ৷ সেই কাজই তাকে এনে দিয়েছে পদ্মশ্রী পুরস্কার ৷ কে এই কমলা ?
কৃষিপদ্ধতি ও তার ইতিহাস সংরক্ষণে অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে গ্রহণ করেছেন পদ্মশ্রী পুরস্কার ৷ বহু বছর ধরে তাঁর কাজ হল বিভিন্ন চাষের জমি থেকে নানা ধরনের বীজ সংগ্রহ ও তার সংরক্ষণ করা ৷ বিগত 10-20 বছর ধরে তিনি রোজ নতুন বীজের খোজে বের হন৷ এখনও অবধি সংগ্রহ করেছেন 300-র বেশি বীজ ৷
কী করেন এই বীজ সংগ্রহ করে? কমলার সংগ্রহ করা বীজ কাজে লাগে কৃষিবিজ্ঞানের নানা গবেষণায় ৷ এই কাজে সাহায্য করার জন্য নিজের জমিও তুলে দিয়েছেন স্বামীনাথন ফাউন্ডেশনের হাতে ৷ তার এই কাজের অনুপ্রেরণা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কমলা বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকার চাষের জমি থেকে আমি বীজ সংগ্রহ করি ৷ সেই বীজগুলিকে এনে ভালো করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করি ভবিষ্যতে ব্যবহার করার জন্য ৷ বিগত 10-20 বছর ধরে আমি বীজ সংগ্রহ করি, এইভাবে প্রায় 300-র বেশি বীজ সংগ্রহ করতে পেরেছি ৷’’
স্বামীনাথন ফাউন্ডেশনের গবেষক প্রশান্ত কুমার পারিদা কমলার অবদান সম্পর্কে বলেন, ‘‘যখন কোরাপুটে এই ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়, তখন কমলাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ৷ গবেষণার জন্য তিনি আমাদের বিভিন্ন বীজের খোঁজ ও নমুনা দেওয়া ছাড়াও নিজের জমিও দান করেছেন ৷’’
কোরাপুটের প্রাক্তন কালেক্টর গদাধর পারিদা বলেন,‘‘ তিনি আমাদের কৃষি পদ্ধতি সংরক্ষণের জন্য দুর্দান্ত প্রচেষ্টা করেছেন ৷ এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে পূর্বপুরুষদের কৃষিপদ্ধতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং আমাদের কৃষির ইতিহাস কতটা উজ্বল ছিল, সেই সম্পর্কে ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করবে ৷ তার এই প্রচেষ্টা সমগ্র বিশ্বের কাছে স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ৷’’
পদ্মশ্রীপ্রাপক কমলার কাছে বীজ সংগ্রহটাই আসল ৷ জলবায়ু সংরক্ষণ কিংবা পরিবেশ দূষণের জন্য ''সামিট'' বোঝেন না তিনি ৷ শুধু জানেন, প্রকৃতি বাঁচলে বাঁচব আমরাও ৷