মাইসুরু (কর্নাটক), 23 ফেব্রুয়ারি : একটি লোক বাঁশের ডগায় বসে আছে ৷ পরনে শুধুই অন্তর্বাস ৷ আর নিচে তাঁকে ঘিরে প্রচুর মানুষের ভিড় ৷ তিনি বাঁশের ডগায় বসে নিচে বেছে বেছে লোকেদের নাম নিয়ে গালিগালাজ করছেন ৷ প্রথমে দেখে তাঁকে পাগল মনে হলেও এটাই কর্নাটকের মাইসুরু জেলার নানজাগুড় তালুকের গোলুর গ্রামে হওয়া মেলার রীতি ৷
বাঁশের উপর বসে থাকা মানুষটি পাগল নন ৷ আসলে তিনি গ্রামেরই একজন পুরোহিত ৷ গোলুর গ্রামে হওয়া এই মেলায় গেলে এমনই ছবি চোখে পড়বে ৷ মেলার রীতি অনুযায়ী, ওই গ্রামের পুরোহিত বাঁশের উপর চড়ে গ্রামের গ্রামের মধ্যে যারা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে রয়েছে, তাদের গালিগালাজ করে ৷ কিন্তু, ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে কেউ কোনওরকম রাগ বা ক্ষোভপ্রকাশ করতে পারে না ৷
গ্রামের এই মেলা ঘিরে রয়েছে বহু বছরের ইতিহাস ৷ গ্রামের প্রধান দেবতাকে ঘিরে যে উৎসব হয়, তার পরের দিনই এই মেলাটি হয় ৷ গ্রামের পুরুষরা শাড়ি পরে রং ভরতি হাঁড়ি নিয়ে নাচ করেন এবং মেলায় উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে রং ছোড়েন ৷
গ্রামের পুরোহিত থালাপ্পার পরিবারের সদস্য মহেশ ৷ তিনি এই মেলায় বাঁশে চড়েন ও তাঁর পরনের জামা কাপড় খুলে ফেলেন ৷ পরনে থাকে শুধুই অন্তর্বাস ৷ গ্রামের মধ্যে যারা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে রয়েছেন, তাঁদের নাম ধরে ধরে গালি দেন, বকাবকি করেন ৷ এরকম প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে ৷
গ্রামের রীতি অনুযায়ী, যাদের নাম ধরে ধরে পুরোহিত মেলাতে গালি দেন, তাঁদের নিজেদের আচরণ শুধরে নিতে হয় ৷ এছাড়া, গ্রামবাসীদের বিশ্বাস যারা পুরোহিতকে ওই অবস্থায় দেখলে যাঁদের সন্তান হয়নি, তাঁরা সন্তান লাভ করবেন ৷ তাঁদের আরও বিশ্বাস, অবিবাহিত মেয়েরা এই মেলায় অংশ নিলে তাঁদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাবে ৷ আমিষ খাবার খাওয়া এই মেলায় বারণ ৷ পাশাপাশি সাতটি গ্রামের মানুষজনও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন ৷