মহদিপুর, 24 মে : কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে অবশেষে ঘরে ফিরছেন ওঁরা ৷ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দেশের মাটিতে পা রাখবেন ৷ নাসিরুদ্দিন, মানিক, ফতেমারা তাই ঘরে ফেরার আনন্দে সকাল সকাল চলে এসেছিলেন মহদিপুর সীমান্তে ৷ তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে এখনও এদেশে আটকে রয়েছেন অনেকে ৷ আবার বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসা করাতে এদেশে আসতে পারছেন না ৷
গত বছর প্রথম লকডাউনে দু’দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ প্রথম দফায় করোনার প্রকোপ কমলে বেশ কয়েকমাস পর দেশে ফিরতে পেরেছিলেন প্রতিবেশী দেশের নাগরিকরা ৷ এখন ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে ৷ প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের সব রাজ্যেই লকডাউন চলছে ৷ পশ্চিমবঙ্গেও জারি রয়েছে কড়া বিধিনিষেধ ৷ এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, যেসব বাংলাদেশি নাগরিক এদেশে এসে লকডাউনে আটকে পড়েছেন, তাঁরা দেশে ফিরে যেতে পারেন ৷ তবে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ সরকারও ৷ তাই সে দেশের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরকারি অনুমতিপত্র ছাড়া কাউকে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ফেরানো যাবে না ৷
এদিকে বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পরেছেন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বাসিন্দা মহম্মদ নাসিরুদ্দিন ৷ চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরও লকডাউনে বেড়াজালে দেশে ফিরতে পারেননি তিনি ৷ এদিকে সঙ্গে থাকা টাকা পয়সাও প্রায় শেষ ৷ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে নিজের দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি পেয়ে তিনি বলেন, “চিকিৎসা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দেশে ফিরতে পারছিলাম না ৷ বহু কষ্টে নিজের দেশের সরকারের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পেয়েছি ৷ আজ ঘরে ফিরে যাচ্ছি ৷ আমার মত অনেকেই এদেশে আটকে রয়েছেন ৷ তবে আরও বড় সমস্যা হল, বাংলাদেশের অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে পারছেন না ৷ কবে করোনার ঝামেলা মিটবে জানি না ৷”
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত নিম্নচাপ, আগামী 24 ঘণ্টায় অতি শক্তিশালী হবে যশ : মৌসম ভবন
আরও এক বাংলাদেশি মহম্মদ মানিক রতন পরিবারের এক সদস্যের চিকিৎসার জন্য ভারতে এসে আটকে পড়েছেন ৷ বাংলাদেশের ঠাকুরগঞ্জ জেলায় বাড়ি তাঁর ৷ লকডাউনের জেরে সীমান্তে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় ঘরে ফিরতে পারেননি ৷ তিনি বলেন, “কুড়ি দিন আগে চিকিৎসার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকায় ঘরে ফিরতে পারছিলাম না ৷ শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশের সরকারের ছাড়পত্র পেয়েছি ৷ আজ ঘরে ফিরতে পারব ৷ এভাবে সীমান্ত বন্ধ হয়ে গেলে খুব অসুবিধে ৷ অনেকে চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পড়েছেন ৷ অনেকে আবার চিকিৎসা করাতে ভারতে আসতে পারছেন না ৷"
যদিও সীমান্তে নাগরিক পারাপার নিয়ে মহদিপুর সীমান্তে থাকা ভারতীয় শুল্ক দফতরের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷