কলকাতা, 4 জানুয়ারি: অনুষ্ঠান ছিল পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা তথা প্রাক্তন সভাপতি সোমেন মিত্রের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচনের ৷ সেখানেই দলের গত তিন দশকের সবচেয়ে বিবাদিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হলেন আরেক প্রবীণ নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য ৷ জানিয়ে দিলেন, সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়াকে দল থেকে বহিষ্কার করে ভুল করেছিল কংগ্রেস ৷ আজও সেই প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে !
নয়ের দশকের শেষে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সীতারাম কেশরী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন ৷ রাজ্যের সভাপতি হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দায়িত্ব এসে বর্তায় তৎকালীন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রের উপর ৷
শনিবারের অনুষ্ঠানে রাজ্য-রাজনীতির এই টানাপড়েনের ইতিহাস স্মরণ করে প্রদীপ বলেন, "আমার মনে আছে, যেদিন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে বহিষ্কার করা হয় সেদিন শ্রীরামপুর থেকে কলকাতায় ফিরছিলাম ৷ আমি তখন শ্রীরামপুরের সাংসদ ৷ সোমেন মিত্রের ফোন এল ৷ জানলাম, সীতারাম কেশরী ফোনে সোমেনকে বলেছেন, এটা করতেই হবে ৷ ওঁকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) তোমায় বহিষ্কার করতে হবে ৷ কারণ আমরা করেছি ৷ আমি সোমেনকে বলেছিলাম, তুমি করো না ৷ কিছুতেই করো না ৷ কিন্তু সোমেনর উপর এমন চাপ তৈরি হয়েছিল যে, তাঁকে করতে বাধ্য হতে হয়েছিল ৷ তার প্রায়শ্চিত্ত কংগ্রেস দলকে আজও করতে হচ্ছে ৷ জানি না, এই খাদ থেকে আমরা কবে এবং কীভাবে উঠে আসতে পারব !"
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের কাছে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রের মূর্তি উন্মোচন ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয় ৷ প্রদেশ কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রদীপ ভট্টাচার্য ৷ অনুষ্ঠান মঞ্চের কাছে থাকা স্থানীয় পার্টি অফিসে দাঁড়িয়ে হঠাৎ চিৎকার করে বলতে শুরু করলেন, "এটা কী হচ্ছে ? এটা কী নাটক হচ্ছে ? তামাশা হচ্ছে ?" উপস্থিত সকলের নজর সেদিকে ঘোরে ৷ সবাই দেখতে পান বক্তা প্রদীপ ভট্টাচার্য । এরপর আর কেউ কোনও মন্তব্য করেননি ৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কিছুটা থেমে ফের স্বভূমিকায় ফিরলেন শুভঙ্কর সরকার ৷