কোহিমা, 5 ডিসেম্বর : নাগাল্যান্ডে অশান্তি অব্যাহত ৷ সূত্রের দাবি, রবিবার বিকেলে অসম রাইফেলসের একটি ক্যাম্পে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা (Assam Rifles Camp vandalised by angry mob) ৷ ওই ক্যাম্পে রীতিমতো ভাঙচুর চালানো হয় ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় 144 ধারা জারি করা হয়েছে ৷ ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির 302, 307 এবং 34 ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশও দিয়েছে নাগাল্যান্ড সরকার ৷ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি ঘটনার তদন্ত চালাবেন ৷
গতকাল সন্ত্রাসদমন অভিযান চলাকালীন ‘ভুলবশত’ নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ যায় 13 জন নাগা গ্রামবাসীর (Nagaland Civilian Deaths) ৷ তারপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের পরিস্থিতি ৷ মনে করা হচ্ছে, এর জেরেই অসম রাইফেলসের ওই ক্যাম্পে হামলা চালানো হয় ৷ ঘটনাটি ঘটেছে নাগাল্যান্ডের মন জেলার কোনিয়াকে ৷ হামলায় অসম রাইফেলসের একটি কার্যালয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি সূত্রের ৷
শনিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় তদন্তের জন্য নাগাল্যান্ড সরকার পাঁচ সদস্যের সিট গঠন করেছে ৷ পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় 144 ধারা জারি করা হয়েছে ৷ একসঙ্গে পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েতে রাশ টানা হয়েছে ৷ পাশাপাশি বিনা প্রয়োজনে যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে হঠাৎই কোনিয়াকের ওই ক্যাম্পে হামলা শুরু হয় ৷ মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয় ভাঙচুর ৷ উন্মত্ত মানুষজন ছুটোছুটি শুরু করেন ৷ যাঁরা ভাঙচুরে সামিল ছিলেন, তাঁদের দাবি ছিল স্পষ্ট ৷ নিরাপত্তাবাহিনীর যে সদস্যরা নিরপরাধ 13 জন গ্রামবাসীকে গুলি করে খুন করেছেন, অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ মুহূর্তের মধ্যেই এই হামলার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় হামলার সময়কার ভিডিয়ো ৷ অথচ সূত্রের দাবি, অশান্তির আশঙ্কায় আগেই মন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন ৷ কিন্তু, তাতে জনরোষ কমেনি ৷
তবে অসম রাইফেলসের ক্যাম্পে হামলার এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা, সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্য এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি ৷ সংবাদমাধ্যমের তরফে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তাদের তরফে কোনও জবাব মেলেনি ৷ মুখে কুলুপ এঁটেছে মন জেলা প্রশাসনও ৷ যদিও তাদের দাবি, যে ঘটনায় 13 জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে, তাতে এক জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছে ৷ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে ৷
সেনাবাহিনীর তরফে এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করা হয়েছে ৷ তারা ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে ৷ কীভাবে বাহিনীর সদস্যরা এত ভয়ঙ্কর একটা ‘ভুল’ করলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ ইতিমধ্যে সেনার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতেই মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া মন জেলায় জঙ্গিদমন অভিযান চালানো হচ্ছিল ৷ যদিও সেই অভিযানে কীভাবে ‘ভুলবশত’ ভারতের 13 জন সাধারণ নাগরিককেই প্রাণ হারাতে হল, তার সদুত্তর এখনও মেলেনি ৷