ETV Bharat / state

গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের জের, অনিশ্চয়তার পথে ডুয়ার্সের রানি জয়ন্তীর পর্যটন শিল্প - JAYANTI TOURISM INDUSTRY

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বক্সা এলাকায় প্রায় 70 থেকে 80টি হোমস্টে আছে । গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ কার্যকর হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ।

Jayanti
অনিশ্চয়তার পথে জয়ন্তীর পর্যটন শিল্প (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 5 hours ago

আলিপুরদুয়ার, 21 ডিসেম্বর: অনিশ্চয়তার পথে ডুয়ার্সের রানি জয়ন্তীর পর্যটন শিল্প । বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর ও বাফার এলাকার জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ায় থাকা রিসর্ট, হোটেল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধের নির্দেশ দেয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল ৷ তার উপর আর কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রইল না ৷ তাই ওই নির্দেশ এবার কার্যকর হওয়ার পথে ৷ যার ফলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ।

শীতে ভরা পর্যটনের মরশুম ৷ এইসময় পর্যটক শূন্য জয়ন্তী । গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে কার্যকর করার ফলে মাথায় হাত পড়েছে স্থানীয়দের । সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা ।

হোমস্টে বন্ধের নির্দেশ ফের শোরগোল জয়ন্তীতে (ইটিভি ভারত)

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাউন্ডারির মধ্যে কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাখা চলবে না । পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা মামলায় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দিয়েছিল ৷ সেই নির্দেশের উপরে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ৷ তবে তা বহাল থাকল না । আর এরপরেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ার বাফার এলাকায় থাকা পর্যটন নির্ভর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করার বিষয়ে তৎপরতা শুরু করে দিল বন দফতর ।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের দাখিল করা একটি মামলায় 2022 সালের 20 মে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর ও বাফার এলাকায় থাকা রিসর্ট, হোটেল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কলকাতার ইস্টার্ন জোনাল বেঞ্চ । কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে 29 জুলাই 2022 সালে একটি স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ । দীর্ঘদিন ধরে ওই মামলার শুনানির পর গত 4 ডিসেম্বর শুনানি হয় ৷ ওই মামলায় আর নতুন করে স্থগিতাদেশ জারি করেনি কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ ।

Jayanti
বন্ধের পথে জয়ন্তীর প্রায় 70 থেকে 80টি হোমস্টে (নিজস্ব ছবি)

বক্সা এলাকায় প্রায় 70 থেকে 80টি হোম স্টে আছে । যাদের রুটি রুজি বলতে হোমস্টে ৷ ফলে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ কার্যকর হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মত স্থানীয়দের । বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়া এলাকার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নোটিশ বিলি করে বন দফতর । অবিলম্বে কমার্শিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এ দিন ফের নতুন করে উচ্ছেদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে । স্থানীয় বাসিন্দা তথা হোমস্টের মালিক লাল সিং ভুজেল বলেন, "আমরা 5-6 পুরুষ ধরে জঙ্গলের মধ্যেই আছি । হোমস্টে কখনও কমার্শিয়াল হতে পারে না ৷ সরকারও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্ব হওয়ার জন্য হোমস্টেকে গুরুত্ব দিচ্ছে ।"

Jayanti
ডুয়ার্সের রানি জয়ন্তী (নিজস্ব ছবি)

তাঁর কথায়, "আমাদের পূর্বপুরুষরাই বন জঙ্গল রক্ষা করেছে । আজ বাঘের জন্য ঢাকঢোল পেটাচ্ছে । টাইগারই নেই তো টাইগার রিভার্জ কেন? এটাই আমরা প্রশ্ন তুলছি । এখানের মানুষদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । আমরা জঙ্গলে ব্যবসা করছি না । আমরা হোমস্টে চালাচ্ছি । রিসর্ট নয় আমাদের । আমার বাড়িতে কে থাকবে কে থাকবে না সেটা অন্য কেউ ঠিক করে দেবে । বন বিভাগ উঠে পড়ে লেগেছে । সবাই চুপ হয়ে আছে । আজ থেকে 20 বছর আগে এই এলাকায় গাছ চুরি হয়েছে । পর্যটন করার পর এসব বন্ধ হয়েছে । আমাদের মামলার শুনানি চলছে আগামী 23 ডিসেম্বর ফের শুনানি আছে । আমরা আমাদের বেঁচে থাকার অধিকারের লড়াই নিয়ে রাস্তায় নামব ।"

ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি পার্থসারথি রায়ের বক্তব্য, "মহামান্য হাইকোর্টের বিচারাধীন বিষয় । মামলা এখনও চলছে । বন দফতর গ্রিন ট্রাইব্যুনালের রায়কে সামনে রেখে নোটিশ জারি করছে । সব রকম কমার্শিয়াল অ্যাক্টিভিটি বন্ধ মানে পান দোকান পর্যন্ত বন্ধ থাকবে । জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ার মানুষের কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে । হাইকোর্টের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে আমাদের বিষয়টি ভাবার জন্য । আমরা আগামীতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি ।"

এই বিষয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিন্ড ডিরেক্টর দেবাশিস সেন শর্মা বলেন, "আদালতের নির্দেশ বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না । আইন অনুযায়ী আমরা কাজ করছি ।"

আলিপুরদুয়ার, 21 ডিসেম্বর: অনিশ্চয়তার পথে ডুয়ার্সের রানি জয়ন্তীর পর্যটন শিল্প । বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর ও বাফার এলাকার জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ায় থাকা রিসর্ট, হোটেল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধের নির্দেশ দেয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল ৷ তার উপর আর কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রইল না ৷ তাই ওই নির্দেশ এবার কার্যকর হওয়ার পথে ৷ যার ফলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ।

শীতে ভরা পর্যটনের মরশুম ৷ এইসময় পর্যটক শূন্য জয়ন্তী । গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে কার্যকর করার ফলে মাথায় হাত পড়েছে স্থানীয়দের । সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা ।

হোমস্টে বন্ধের নির্দেশ ফের শোরগোল জয়ন্তীতে (ইটিভি ভারত)

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাউন্ডারির মধ্যে কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাখা চলবে না । পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা মামলায় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দিয়েছিল ৷ সেই নির্দেশের উপরে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ৷ তবে তা বহাল থাকল না । আর এরপরেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ার বাফার এলাকায় থাকা পর্যটন নির্ভর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করার বিষয়ে তৎপরতা শুরু করে দিল বন দফতর ।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের দাখিল করা একটি মামলায় 2022 সালের 20 মে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর ও বাফার এলাকায় থাকা রিসর্ট, হোটেল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কলকাতার ইস্টার্ন জোনাল বেঞ্চ । কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে 29 জুলাই 2022 সালে একটি স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ । দীর্ঘদিন ধরে ওই মামলার শুনানির পর গত 4 ডিসেম্বর শুনানি হয় ৷ ওই মামলায় আর নতুন করে স্থগিতাদেশ জারি করেনি কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ ।

Jayanti
বন্ধের পথে জয়ন্তীর প্রায় 70 থেকে 80টি হোমস্টে (নিজস্ব ছবি)

বক্সা এলাকায় প্রায় 70 থেকে 80টি হোম স্টে আছে । যাদের রুটি রুজি বলতে হোমস্টে ৷ ফলে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ কার্যকর হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মত স্থানীয়দের । বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়া এলাকার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নোটিশ বিলি করে বন দফতর । অবিলম্বে কমার্শিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এ দিন ফের নতুন করে উচ্ছেদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে । স্থানীয় বাসিন্দা তথা হোমস্টের মালিক লাল সিং ভুজেল বলেন, "আমরা 5-6 পুরুষ ধরে জঙ্গলের মধ্যেই আছি । হোমস্টে কখনও কমার্শিয়াল হতে পারে না ৷ সরকারও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্ব হওয়ার জন্য হোমস্টেকে গুরুত্ব দিচ্ছে ।"

Jayanti
ডুয়ার্সের রানি জয়ন্তী (নিজস্ব ছবি)

তাঁর কথায়, "আমাদের পূর্বপুরুষরাই বন জঙ্গল রক্ষা করেছে । আজ বাঘের জন্য ঢাকঢোল পেটাচ্ছে । টাইগারই নেই তো টাইগার রিভার্জ কেন? এটাই আমরা প্রশ্ন তুলছি । এখানের মানুষদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । আমরা জঙ্গলে ব্যবসা করছি না । আমরা হোমস্টে চালাচ্ছি । রিসর্ট নয় আমাদের । আমার বাড়িতে কে থাকবে কে থাকবে না সেটা অন্য কেউ ঠিক করে দেবে । বন বিভাগ উঠে পড়ে লেগেছে । সবাই চুপ হয়ে আছে । আজ থেকে 20 বছর আগে এই এলাকায় গাছ চুরি হয়েছে । পর্যটন করার পর এসব বন্ধ হয়েছে । আমাদের মামলার শুনানি চলছে আগামী 23 ডিসেম্বর ফের শুনানি আছে । আমরা আমাদের বেঁচে থাকার অধিকারের লড়াই নিয়ে রাস্তায় নামব ।"

ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি পার্থসারথি রায়ের বক্তব্য, "মহামান্য হাইকোর্টের বিচারাধীন বিষয় । মামলা এখনও চলছে । বন দফতর গ্রিন ট্রাইব্যুনালের রায়কে সামনে রেখে নোটিশ জারি করছে । সব রকম কমার্শিয়াল অ্যাক্টিভিটি বন্ধ মানে পান দোকান পর্যন্ত বন্ধ থাকবে । জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ার মানুষের কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে । হাইকোর্টের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে আমাদের বিষয়টি ভাবার জন্য । আমরা আগামীতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি ।"

এই বিষয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিন্ড ডিরেক্টর দেবাশিস সেন শর্মা বলেন, "আদালতের নির্দেশ বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না । আইন অনুযায়ী আমরা কাজ করছি ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.