তিরুঅনন্তপুরম (কেরালা), 31 অক্টোবর: কুসংস্কারের (Superstition) বশবর্তী হয়ে প্রেমিককে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রেমিকার বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে কেরালার (Kerala) তিরুঅনন্তপুরমের কাছে পারাসালাতে ৷ বছর 22 এর ওই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ দিন কয়েক আগে কেরালার পাতানমতিত্তা এলাকায় এই ধরনের একটি ‘মানব বলি’র (Human Sacrifice) ঘটনা সামনে এসেছিল ৷ তার পর ফের এই ধরনের ঘটনা ঘটায়, বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অনেকে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম গ্রীসমা ৷ তিনি তামিলনাড়ুর রামবর্মনচিরার বাসিন্দা ৷ ওই এলাকা কেরালার সীমানার কাছেই অবস্থিত ৷ শারোন রাজ নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল ৷ শারোনের বাড়ি কেরালার তিরুঅনন্তপুরমের কাছে পারাসালাতে ৷ ওই এলাকা আবার তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) সীমানার কাছে অবস্থিত ৷
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রীসমা ও তাঁর পরিবারের ‘বিশ্বাস’ ছিল যে তাঁর প্রথম স্বামী বেশিদিন বাঁচবে না ৷ এদিকে পরিবারের তরফে এক সেনা জওয়ানের সঙ্গে তাঁর বিয়ের ঠিক করা হয় ৷ এর পরই খুনের ছক কষা হয় ৷
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শারোন বহুবার গ্রীসমার বাড়িতে গিয়েছেন ৷ গোপনে তাঁরা চার্চে বিয়েও করেন ৷ গ্রীসমার পরিবারের বিশ্বাস ছিল, প্রথম স্বামী হিসেবে শারোনকে মেরে ফেললে গ্রীসমার হবু-স্বামীর কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না ৷
সেই কারণেই গ্রীসমা প্রথমে শারোনকে বিয়ে করেন ৷ তার পর তাঁকে ফলের রসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে মেরে ফেলেন ৷ পুলিশের দাবি, ঘটনাটি ঘটেছে গত 14 সেপ্টেম্বর ৷ তিনি সেদিন গ্রীসমার বাড়িতে গিয়েছিলেন রের্কড বুক আনতে ৷ পরে বাড়ি ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাঁর মৃত্যু হয় ৷
পুলিশ জানতে পেরেছে, সেদিন গ্রীসমা ও শারোন জুস চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল ৷ সেই জুসের মধ্যে বিষ মেশানো ছিল ৷ এই নিয়ে কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা ৷ তবে পরিবারের দাবি, এটা একদিনের ঘটনা নয় ৷ প্রতিবারই বিষাক্ত জুস খাওয়ানো হত তাঁকে ৷ তাই প্রতিবারই গ্রীসমার বাড়ি থেকে ফিরে পেটে ব্যথার কথা বলত শারোন ৷ তাই ছেলের মৃত্যুতে গ্রীসমা ও তাঁর পরিবারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে শারোনের পরিবার ৷
শারোনের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে পুলিশ গ্রীসমাকে আটক করে ৷ তার পর তাঁকে প্রায় আট ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় ৷ পুলিশের দাবি, শেষে জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেন তিনি ৷ শারোনকে বেশ কয়েকবার কপার সালফেট মেশানো জুস খাইয়েছেন বলে জানান ৷ পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে ৷
আরও পড়ুন: খুনের পর শরীরের বিভিন্ন অংশ সেবনও করে অভিযুক্তরা, কোচির ঘটনায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে