নয়াদিল্লি, 3 অগস্ট: লোকসভায় বৃহস্পতিবার দিল্লি সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বিবেচনা ও পাশের জন্য পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সংসদে ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি (সংশোধন) বিল 2023-এর বিষয়ে আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের সংবিধানে এমন বিধান রয়েছে, যা কেন্দ্রকে দিল্লির জন্য আইন তৈরি করার অনুমতি দেয় । একই সঙ্গে এদিন আম আদমি পার্টি এবং দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও নাম না করে সংসদে দাঁড়িয়ে আক্রমণ শানান শাহ ৷
অমিত শাহ লোকসভায় বলেন, "এই অধ্যাদেশটি সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে নির্দেশ করে বলে , দিল্লির জাতীয় রাজধানী অঞ্চল সম্পর্কিত যে কোনও বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার সংসদের রয়েছে ৷" তাঁর আরও সংযোজন, "সংবিধানে এমন বিধান রয়েছে যা কেন্দ্রীয় সরকারকে দিল্লির জন্য আইন তৈরি করার অনুমতি দেয় ৷" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপ সরকারকেও এদিন তীব্র আক্রমণ করেন ৷ তাঁর দাবি, 2015 সালে রাজধানী দিল্লিতে একটি নতুন দল ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে দিল্লির প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঠিকঠাক কাজ করছিল ।
শাহের কথায়, "পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু, সর্দার প্যাটেল, রাজাজি, রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং ডক্টর আম্বেদকর দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন ৷" কেজরিওয়াল সরকারের উপর আক্রমণ করে সংসদে অমিত শাহ বলেন, "আম আদমি পার্টির লক্ষ্য মানুষের জন্য কাজ করা নয়, বরং কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করা ৷" তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাংলো সংস্কার নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে , সেই বিষয়টিকে তুলে ধরে আপ এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও নিশানা করেন । অমিত শাহ বলেন, "2015 সালে, একটি দল দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছিল যার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল লড়াই করা, সেবা করা নয় ৷ আধিকারিকদের ট্রান্সফার পোস্টিং করার অধিকার পাচ্ছে না, এটা সমস্যা নয় ৷ আসলে তাদের বাংলো নির্মাণের মতো একাধিক দুর্নীতি আড়াল করার জন্য ভিজিল্যান্স বিভাগের নিয়ন্ত্রণ পাওয়াই মূল উদ্দেশ্য ৷"
আরও পড়ুন: 370 ধারা কি সংবিধানে স্থায়ী ছিল, কপিল সিবালের কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট
বিরোধীদের কটাক্ষ করে শাহ বলেন, "তাদের জোট গঠনের পরও, নরেন্দ্র মোদি আবার পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হবেন ।" এদিন বিরোধী দলগুলির 'ইন্ডিয়া' জোটের উদ্দেশে অমিত শাহ জানান, যে দিল্লি সংক্রান্ত বিলটিকে তাদেরও সমর্থন করা উচিত ৷ যা দিল্লির পক্ষে ভাল হবে বলে সওয়াল করেন অমিত শাহ ৷ তিনি বলেন, "আমি বিরোধী সাংসদদের অনুরোধ করছি দিল্লি নিয়ে ভাবুন ৷ তাদের জোট নিয় নয় ৷" দিল্লি জাতীয় রাজধানী হওয়ায় সংবিধানে বিশেষ বিধান রয়েছে । এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মে মাসে দিল্লিতে পরিষেবাগুলির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নিয়ে আসে কেন্দ্র ৷"
দিল্লির আধিকারিক এবং সচিব পর্যায়ের অফিসারদের বদলি সংক্রান্ত ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে দিল্লি সরকারের ৷ এরপর অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় আধিকারিকদের ক্ষেত্রে বদলি বিষয়টি দিল্লি সরকারের হাতেই থাকবে ৷ সেই রায়ের পরই নতুন সংশোধনী বিল আনে কেন্দ্র ৷ অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিলের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির সমর্থন চেয়েছিলেন ৷ বিশেষ করে রাজ্যসভায় । ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স-এর দলগুলো অবশ্য এই বিলের বিরোধিতা করছে ।