নয়াদিল্লি, 18 ডিসেম্বর: অধিবেশনে ব্যাঘাত ঘটানোয় রাজ্যসভা থেকে 45 সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল সোমবার ৷ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের রণদীপ সুরজেওয়ালা ও জয়রাম রমেশ ৷ এই সাংসদদের সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনের শেষ পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷ এর আগে এ দিনই লোকসভার 33 জন সাংসদকেও সাসপেন্ড করা হয় ৷ ফলে এ দিন দুই কক্ষের অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার আগে পর্যন্ত সব মিলিয়ে 78 জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷
এর আগে সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে বিরোধী সাংসদরা লোকসভা ও রাজ্যসভায় হইহট্টগোল করেন ৷ স্লোগান দেন ৷ এর ফলে রাজ্যসভা তিন মুলতুবি করা হয় ৷ তার পর বিকেল সাড়ে 4টের সময় অধিবেশন শুরু হয় ৷ তখনও বিরোধীরা স্লোগান দিতে থাকেন ৷ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় সাংসদদের নিজ নিজ আসনে ফিরে যেতে বলেন ৷
তার পরও কেউ তাঁর নির্দেশ শোনেননি ৷ তখন ধনকড় জানান, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে নিজের চেম্বারে আসার অনুরোধ করেছিলেন ৷ কিন্তু তাঁর সেই অনুরোধ রাখা হয়নি ৷ এর পরই তিনি 45 জন সাংসদকে সাসপেন্ড করেন ৷ তার পর এ দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভা ৷ যে 45 জন সাসপেন্ড হয়েছেন তাঁদের মধ্যে 11 জনের সাসপেনশনের মেয়াদ আবার প্রিভিলেজ কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে ৷
এ দিন রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদদের উদ্দেশ্য়ে চেয়ারম্যান ধনকড় বলেন, "আমি সদস্যদের তাদের আসন গ্রহণ করার জন্য আবেদন করছি । আপনরা আপনাদের আসন ছাড়া (অন্য কোথাও থেকে) কথা বলতে পারবেন না । এটা আমাদের জন্য একটি বিরক্তিকর দিন ছিল ।" পরে ধনকড় আরও বলেন, "এটা ভারতের বিরুদ্ধে অপরাধের চেয়ে কম নয় । আমরা বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছি । এটা হতে দেওয়া যাবে না ।"
সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ইস্যুতে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন এবং স্লোগান দেওয়ার জন্য এ দিন লোকসভা থেকেও কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী, টিআর বালু এবং সৌগত রায়-সহ 33 জন বিরোধী সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয় ৷ এর মধ্যে 30 জন সাংসদকে পুরো শীতকালীন অধিবেশনে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷ এই তালিকায় ডিএমকে-র 10, তৃণমূল কংগ্রেসের 9, কংগ্রেসের 8 এবং আইইউএমল, জেডিইউ ও আরএসপি-র একজন করে সাংসদ রয়েছেন ৷ বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে প্রিভিলেজ কমিটি রিপোর্ট জমা না দেওয়ায়, তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷
তার পর রাজ্যসভাতেও একই ঘটনা ঘটে ৷ বিরোধীরা অবশ্য নিজেদের দাবিতে অনড় ৷ তারা সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ইস্যুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি থেকে যে সরছে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে ৷ এর আগে গত সপ্তাহে লোকসভা থেকে 13 জন ও রাজ্যসভা থেকে একজন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয় ৷ ফলে সব মিলিয়ে সংসদের দুই কক্ষ থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের সংখ্যা দাঁড়াল 92 ৷ লোকসভায় 46 জন ও রাজ্যসভায় 46 জন ৷ অন্যদিকে এ দিন রাজ্যসভায় পুদুচেরি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় মহিলাদের সংরক্ষণ আইন কার্যকর করার জন্য দু’টি বিল পাশ করা হয় ৷
আরও পড়ুন: