জুনাগড়, 9 নভেম্বর: জুনাগড় নবাবি শাসন থেকে মুক্ত হয় 1947 সালে 9 নভেম্বর । এর পর জুনাগড়ের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হত যে তারা ভারতে যোগ দিতে চায় নাকি পাকিস্তানে । এই সমস্যার সমাধান করেছিলেন ভারতের লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল । তিনি জুনাগড়ের জনগণের জন্য একটি গণভোটের আয়োজন করেন যাতে ভবিষ্যতে কোনও বিরোধ সৃষ্টি না হয় । আর সেটাই ছিল ভারতে প্রথম কোনও ভোট ৷
1947 সালের এই দিনে জুনাগড় নবাবি শাসন থেকে মুক্ত হয়: 1947 সালের 15 অগস্ট ভারত স্বাধীন হয় ৷ এই দিনে জুনাগড়ের নবাব জুনাগড়কে পাকিস্তানের সঙ্গে এক করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন । নবাবের এই ঘোষণার পর সর্দার প্যাটেল এবং আরজি সরকারের সৈন্যরা জুনাগড়ের মুক্তির জন্য একটি আন্দোলন শুরু করে । ওই আন্দোলনে শমলদাস গান্ধি ও সর্দার প্যাটেলের নেতৃত্বে আরজি সরকারের যোদ্ধারা সাফল্য পান । এই সাফল্যের ফলস্বরূপ জুনাগড় 1947 সালের 9 নভেম্বর স্বাধীন হয় ।
গণভোটের প্রস্তুতি: জুনাগড়ের জনগণের গণভোট পরিচালনার জন্য 1948 সালের 20 ফেব্রুয়ারি একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । জুনাগড়ের পাশাপাশি মঙ্গরোল, মানভাদর, বাটোয়া, সর্দারগড় এবং বাবরিয়াওয়াদের মানুষও ভোট দেন । এই ভোটের জন্য নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয় সিবি নাগরেকরকে৷ বিভিন্ন স্থানে পোলিং বুথ তৈরি করা হয় । যেখানে একটি বিশেষ ধরনের ভোটকেন্দ্রও তৈরি করা হয় ৷
ভোট দেওয়ার জন্য নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা ভোট কেন্দ্র করা হয় । এছাড়াও পরদা ও বোরকা পরা মহিলাদের জন্য আলাদা ভোট কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয় । এই ভোটকেন্দ্রে ভারতের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য লাল রঙের ব্যালট বাক্স এবং পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল সবুজ রঙের ব্যালট বাক্স । শুধু ভারত থেকে নয়, বিদেশ থেকেও সাংবাদিকরা এই ভোটের রিপোর্ট করতে এসেছিলেন ।
গণভোটের ফলাফল: ভোটগণনা করা হয়েছিল 1948 সালের 24 ফেব্রুয়ারি । এই ভোটে ভারত পায় মোট 2 লক্ষ 22 হাজার 182 ভোট এবং পাকিস্তানের পক্ষে পড়ে 130 ভোট । এই ভোটে জুনাগড়ের মানুষ বিপুল সংখ্যায় ভারতের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ।
আরও পড়ুন: বহু যুগ ধরে সামাজিক দূরত্ব মেনে পুজো জুনাগড়ের শিব মন্দিরে