গোধরা, 16 অগস্ট: যাবজ্জীবন সাজা হলেও সময়ের আগেই ছাড়া পেয়ে গেলেন 11 জন ৷ গুজরাতে গোধরা কাণ্ডের পর বিলকিস বানোর পরিবারের সদস্যদের হত্যা এবং গর্ভবতী বিলকিসকে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল তারা ৷ দোষীদের মধ্যে একজন 15 বছরেরও বেশি সময় কারাবাসে কাটিয়েছে ৷ সে সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির জন্য আবেদন করে ৷ সোমবার তারা গোধরা সাব-জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসে (All 11 life imprisonment convicts of Bilkis Bano Gang rape released under Gujarat governments remission policy ) ৷
বিলকিস বানো
2002-এর ফেব্রুয়ারি ৷ গুজরাতে গোধরায় অযোধ্য়া থেকে ফেরা একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ঘটনা ঘটে ৷ এতে মারা যান 58 জন পুণ্যার্থী এবং করসেবক ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জ্বলে ওঠে গোটা রাজ্য ৷ 3 মার্চ, দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালায় ৷ সেই সময় বানো 5 মাসের গর্ভবতী ছিলেন ৷ তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় ৷ তাঁর পরিবারের 7 জন সদস্যকে হত্যা করা হয় ৷ পরিবারের অন্য 6 জন সদস্য পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন ৷ আদালতে এটাই জানানো হয়েছিল ৷ এই ঘটনায় 2004 সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় ৷
বিচার এবং মুক্তিপর্ব
প্রথমে আমেদাবাদে এর বিচারপর্ব শুরু হয় ৷ নির্যাতিতা বিলকিস বানো আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান যে, সিবিআই-এর জোগাড় করা তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে ৷ অগস্টের 2004 সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি মুম্বইয়ে স্থানান্তিরত করে দেয় ৷ বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার অভিযোগে 2008-এর 21 জানুয়ারি 11 জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ ঘোষণা করে ৷ বোম্বে হাইকোর্টও এই নির্দেশ বহাল রাখে এবং 7 জন দোষীকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয় ৷
11 জন দোষীর মধ্যে রাধেশ্যাম শাহ 15 বছর 4 মাস জেলে কাটিয়ে গুজরাত হাইকোর্টে তার কারাবাসের সময় কমানোর আবেদন জানায় ৷ আদালত পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টি মহারাষ্ট্রের কাছে পাঠায় ৷ এ বছরের 1 এপ্রিল শাহ সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির জন্য আবেদন করে ৷ 13 মে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এই অপরাধ গুজরাতে ঘটেছিল ৷ তাই গুজরাত সরকারকেই শাহের আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷
আরও পড়ুন: গুলবার্গ হত্যাকাণ্ডে ফের ক্লিনচিট মোদিকে, জাকিয়া জাফরির আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
সেই অনুযায়ী সুুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে 19 জুলাই, 1992-এর নীতি অনুযায়ী সময়ের আগে শাহের মুক্তির আবেদনটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় এবং দু'মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে বলে ৷ রাজ্য সরকার পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্রার (Panchmahals collector Sujal Mayatra) নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে ৷ তিনি বলেন, "কয়েক মাস আগে 11 জন দোষীর সাজা কমানো নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয় ৷ সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে কারাবাসের সময় হ্রাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ৷ এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয় এবং তাদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার ৷"
সোমবার রাধেশ্যাম শাহ ছাড়াও মুক্তি পেল যশওয়ান্তভাই নাই, গোবিন্দভাই নাই, শৈলেশ ভাট, বিপিন চন্দ্র যোশী, কেশরভাই ভোহানিয়া, প্রদীপ মোরধিয়া, বাকাভাই ভোহানিয়া, রাজুভাই সোনি, মিতেশ ভাট এবং রমেশ চন্দনা ৷
আরও পড়ুন: গুজরাত হিংসায় গণধর্ষিতাকে 2 সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ