হায়দরাবাদ: বর্ষার মরশুমেআবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে বৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷ প্রাণহানির ঘটনা এড়াতে দুর্যোগের সময় বাইরে বেরতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ৷ প্রশ্ন হল বর্ষাকালে বৃষ্টি হবেই ৷ বৃষ্টি হলে বজ্রপাত হয় কী করে ? বজ্রপাত কীভাবে মাটিতে পড়ে ৷
কীভাবে বিদ্যুৎ তৈরি হয়: মেঘের ঘর্ষণে যে ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক ডিসচার্জ তৈরি হয় সেটি বিদ্যুৎ ৷ মেঘে-মেঘে সংঘর্ষের কারণে মেঘের মধ্যে থাকা জলের ফোঁটা এবং বরফের স্ফটিকগুলি একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষের হয় ৷ তার ফলে বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়।
বৃষ্টিতে বজ্রপাতের ভূমিকা: বজ্রপাতের ক্ষেত্রে বৃষ্টির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টি যত বেশি হবে বজ্রপাতের সম্ভাবনা তত বেশি।
বরফ কণা ও জলের সংঘর্ষ: বরফ ও জলের মিশ্রণে মেঘের সৃষ্টি হয় ৷ তাই মেঘের মধ্যে থাকা বরফের কণা ও জলের কণার সংঘর্ষের কারণে ইলেকট্রন কণা উৎপন্ন করে। যার কারণে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ আলাদা হয়ে যায়। বিদ্যুৎ চমকায় ৷
বৈদ্যুতিক চার্জ সৃষ্টি হয় : মেঘের উপরের অংশ ধনাত্মক (প্লাস) শক্তি এবং নীচের অংশ ঋণাত্মক (মাইনাস) শক্তি উৎপন্ন করে। যখন এই দুটি অংশ একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, তখন তাদের থেকে একটি বৈদ্যুতিক চার্জ নির্গত হয়, যা একটি স্পার্ক সৃষ্টি করে, যাকে বজ্রপাত বলা হয়।
লিডার স্ট্রোক কী: মেঘের মধ্যে বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ু অণুর যে সংযোগ তৈরি হয় । সেটিকে লিডার স্ট্রোকও বলা হয়। মেঘ এবং মাটির মধ্যে এই চার্জ তৈরি হয় ।
বজ্রপাত কীভাবে মাটিতে আঘাত করে: লিডার স্ট্রোক যখন মাটিতে পৌঁছায়, স্ট্রোক বজ্রপাতের রাস্তা তৈরি হয়। এটি রিটার্ন স্ট্রোক নামে পরিচিত। আমরা এই স্ট্রোককে বিদ্যুৎ হিসাবে দেখি। রিটার্ন স্ট্রোক 50 হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পৌঁছাতে পারে, যার উত্তাপ সূর্যের পৃষ্ঠের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ৷ তাই বজ্রপাত কোথাও পড়লে উত্তাপের কারণে বস্তুটি ঝলসে যায় ৷
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
বর্ষাকালে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি সাধারণ হলেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্য়ুর ঘটনা খুবই মর্মান্তিক ৷ সতর্কতা জারি করে বাইরে বেরতে বারণ করা হলেও প্রয়োজনে বাইরে বেরতেই হয় ৷ এই পরিস্থিতিতে তড়িতাহত হওয়ার থেকে কীভাবে রক্ষা পাবেন ৷ একটু সচেতনতা অবলম্বন করলে বজ্রপাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।
আবহাওয়ার দিকে নজর রাখুন: দেশের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের জারি করা আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞপ্তিরর উপর নজর রাখুন ৷ বৃষ্টির সময় নাগরিকদের সতর্কতা জারি করে। এছাড়াও আপনি আবহাওয়া সম্পর্কিত খবর দেখতে পারেন। আবহাওয়া অধি-দফতরের দেওয়া পূর্বাভাস ও সতর্কতার দিকেও নজর রাখতে হবে।
নিরাপদ স্থান খোঁজা জরুরি: জরুরি কারণে বৃষ্টির সময় বাড়ি থেকে বেরতে হলে রাস্তায় অবশ্য়ই সাবধান থাকতে হবে ৷ বজ্রপাত ও ঝলকানিতে কখনই আতঙ্কিত না-হওয়া দরকার। দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে ৷ উল্লেখ্য, বৃষ্টিতে গাছের নীচে দাঁড়ানো উচিত নয়।
বিদ্যুৎ-এর পরিবাহক জিনিসগুলি ছোঁয়া এড়িয়ে চলুন: বৈদ্যুতিক পরিবাহী বস্তু যেমন ধাতব বেড়া, বৈদ্যুতিক খুঁটি এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও, মোবাইল ফোন থাকলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া ভালো ৷ কারণ মোবাইল ফোন থেকে নির্গত বৈদ্যুতিক তরঙ্গ বজ্রপাতকে আকর্ষণ করতে পারে, ফলে তড়িৎতাহতের সম্ভাবনা বেশি থাকে ৷