হায়দরাবাদ, 24 অগস্ট:মহাকাশ গবেষণায় আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত ৷ শনিবার প্রথম ভারতের প্রথম পুনর্ব্যবহারযোগ্য হাইব্রিড রকেট Rhumi 1 মহাকাশে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে ৷ তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ের ইস্ট কোস্ট রোড বিচ ফ্রন্ট মার্টিন গ্রুপের সহযোগিতায় উৎক্ষেপণ করা হয়েছে ৷
পুনর্ব্যবহারযোগ্য হাইব্রিড রকেট Rhumi 1 এর উৎক্ষেপণ মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন মুকুট যোগ করল ৷ তামিলনাড়ুর স্টার্ট-আপ 'স্পেস জোন ইন্ডিয়া' ও মার্টিন গ্রুপ যৌথভাবে তৈরি করেছে এই পুনর্ব্যবহারযোগ্য হাইব্রিড রকেটটি ৷ প্রাক্তন ISRO বিজ্ঞানী ডক্টর মাইলসোয়ামি আন্নাদুরাই, যিনি চন্দ্রযান-1, চন্দ্রযান-2 এবং মঙ্গলযান মিশনে কাজ করেছেন, তিনি এই স্টার্ট-আপ সংস্থা স্পেস জোনের পরামর্শদাতার দায়িত্বে রয়েছেন ৷ ভারতীয় টাকায় 8 কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে মার্টিন গ্রুপ ৷
RHUMI 1
পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা বলতে কী বোঝায় ?
মহাকাশ গবেষণা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ ৷ এই পরিস্থিততে মহাকাশ কোম্পানিগুলো রকেটের সবচেয়ে ব্যয়বহুল অংশগুলোকে পুনরায় ব্যবহার করতে পারবে। RHUMI 1 রকেটের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উপরের অংশটি আবার তৈরি করতে হবে ৷ এটির নীচের অংশ পুনরায় ব্যবহার করা যাবে গবেষণার ক্ষেত্রে ৷ এতে খরচ বাঁচবে। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার এটি ৷
ভারতের প্রথম হাইব্রিড রকেট 2023 সালের ফেব্রুয়ারিতে চালু করা হয়েছিল । রুমি মিশনের মাধ্যমে আমরা 500 কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারি। এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কোণে কাজ করার সুবিধা। এটি শূন্য ডিগ্রি থেকে 120 ডিগ্রি পর্যন্ত কাজ করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে স্যাটেলাইটের সুনির্দিষ্ট গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
RHUMI 1: 3 কিউব স্যাটেলাইট
RHUMI 1, যার ওজন প্রায় 80 কেজি এবং 3.5 মিটার লম্বা ৷ স্টার্টআপ সংস্থা স্পেস জোন ইন্ডিয়ার ফাউন্ডার আনন্দ মেগালিঙ্গমের ছেলের নামে এই রকেটের নামকরণ করা হয়েছে। এটি একটি 'হাইব্রিড' রকেট ৷ এটি কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাধ্যমে উৎক্ষেপিত হয় ৷ এই কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদনের জন্য মোম এবং অক্সিডাইজার হিসাবে নাইট্রাস অক্সাইড ব্যবহার করা হয় জ্বালানী হিসেবে । রকেটের সবকিছুই পুনঃব্যবহারযোগ্য, সামনের অংশ ছাড়া সবকিছুই পুনঃব্যবহারযোগ্য৷ রকেটটি প্য়ারাসুট সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হবে ৷ এই রকেট 3টি কিউব স্যাটেলাইট এবং 50 পিকো স্যাটেলাইট বহন করতে পারবে ৷
এটি বায়ুমণ্ডলের কম্পন, অ্যাক্সিলোমিটার রিডিং, উচ্চতা, ওজন স্তর, বিষাক্ত পদার্থ এবং ফাইবারের প্রাকৃতি অনায়াসেই বুঝতে পারবে ৷ আবহাওয়ার গতি প্রকতি বুঝতে এবং প্রাকৃতির বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে ৷
কেন্দ্রের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী কে. রামমোহন নাইডু বলেন, "Rumi-1-এর সফল উৎক্ষেপণ ভারতের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, ভারতের জন্য গর্বিত মুহূর্ত এবং মহাকাশ গবেষণার সীমানা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতকে আন্তরিক অভিনন্দন ৷" বিশেষ করে মার্টিন গ্রুপের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তামিলনাড়ুর গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র শিল্প মন্ত্রী আনবরাসনও। তিনি বলেন, "আমি স্পেস জোন ইন্ডিয়া এবং প্রতিভাবান ছাত্রদের যাঁরা এই অসাধারণ মিশনে অবদান রেখেছেন সকলকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি ।"রকেট উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে উপস্থিতস্পেস জোন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ডাঃ আনন্দ মেগালিঙ্গম বলেছেন, "রুমি-1-এর সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আমাদের দলের কঠোর পরিশ্রম এবং উদ্ভাবনকে বাস্তবায়িত করতে দেখে আমি আনন্দিত ।"