পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

'কাটমানি' দিতে অস্বীকার, রূপশ্রীর ফর্ম বাতিল কনের! - CUT MONEY ALLEGATION

সরকারি প্রকল্পে খুল্লমখুল্লা দালালরাজ চলছে। এমনটাই বলছেন স্থানীয়রা ৷ তাঁদের দাবি, রূপশ্রী প্রকল্পে সুবিধা পেতে 'কাটমানি' দেওয়া হয়নি বলেই কনে 25 হাজার টাকা পাননি ৷

CUT MONEY ALLEGATION
রূপশ্রীর ফর্মই বাতিল কনের (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 27, 2024, 8:08 PM IST

মালদা, 27 ডিসেম্বর: সবই হয়েছিল সরকারি নিয়ম মেনে ৷ বিয়ের 19 দিন আগে রূপশ্রী প্রকল্পের 25 হাজার টাকার জন্য ব্লক অফিসে আবেদন করেছিলেন কনে ৷ আবেদনের সমর্থনে জমা দিয়েছিলেন প্রশাসনের দাবি করা সমস্ত নথি ৷ নিয়ম মেনে বিয়ের সাতদিন আগে বাড়িতে এসেছিল সমীক্ষক দলও ৷ কিন্তু এতকিছুর পরও সরকারি প্রকল্পের টাকা মিলল না।

কনের মায়ের দাবি, তিনি সমীক্ষক দলের কথামতো তাঁদের 5 হাজার টাকা ঘুষ দেননি ৷ তাই মেয়ের বিয়েতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা প্রকল্পের সহায়তাও মেলেনি ৷ পুরো ঘটনা জানিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে, ঘটনার তদন্তে নেমেছে মহকুমা প্রশাসন ৷

রূপশ্রী ঘিরে বড় অভিযোগ মালদায় (ইটিভি ভারত)

রূপশ্রী আবেদনকারী শাহনাজ

চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ হাবিলুদ্দিন ৷ পেশায় শ্রমিক হাবিলুদ্দিন ভিনরাজ্যেই মূলত কাজ করেন ৷ স্ত্রী সালেমা বিবি ঘরের কাজ সামলান ৷ তাঁদের দুই ছেলে, এক মেয়ে ৷ সন্তানদের প্রত্যেককেই শিক্ষিত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন তাঁরা ৷ তবে অভাবের সংসারে মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে পারেননি ৷ তাই 18 বছর বয়স পেরতেই মেয়ে শাহনাজ খাতুনের বিয়ে দেওয়ার তোরজোর শুরু করেন ৷ পাত্রও মেলে ৷

স্থানীয় ধঞ্জনা গ্রামের নাসিমুল হকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন গত 10 নভেম্বর ৷ শুধু সামাজিক মতে নয়, সেদিন দু'জনের আইনি বিয়েও হয় ৷ নির্দিষ্ট দিনে মেয়ের বিয়ে দিয়ে ফের ভিনরাজ্যে কাজে চলে গিয়েছেন হাবিলুদ্দিন ৷ বিয়েতে সরকারি আর্থিক সহায়তা পেতে 1 নভেম্বর চাঁচল 1 নম্বর ব্লক অফিসে রূপশ্রী প্রকল্পে লিখিত আবেদন জানান শাহনাজ ৷ আবেদনপত্রে সমস্ত নথির সঙ্গে বিয়ের কার্ডও জমা দিয়েছিলেন তিনি ৷ এরপর শুরু হয় প্রশাসনিক কাজ ৷

অভিযোগকারী কী বলছেন?

সালেমা বিবি বলেন, "রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে মেয়ে নির্দিষ্ট সময়ে সব নিয়ম মেনে আবেদন করেছিল ৷ বিয়ের সাতদিন আগে ব্লক ও পঞ্চায়েত থেকে তিনজন আমাদের বাড়িতে সমীক্ষা করতে আসেন ৷ তাঁরা আমাকে বলেন, পাঁচ হাজার টাকা তাঁদের দিতে হবে ৷ তবে আমার কাজ হয়ে যাবে ৷ আমি 25 হাজার টাকা পেয়ে যাব ৷ আমি তাঁদের বলি, পাঁচ হাজার টাকা যদি দিয়েই দিই, তবে 20 হাজার টাকায় আমার কী হবে? মমতাদি মেয়েদের বিয়ের জন্য 25 হাজার টাকা দিচ্ছেন !"

তিনি আরও বলেন, "আমি তাদের টাকা দিইনি ৷ তাই এখনও পর্যন্ত আমরা মেয়ের বিয়ের টাকা পাইনি ৷ পরে জানতে পারি, আমার মেয়ের ফর্ম বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ৷ আমার মেয়ে কেন টাকা পেল না? আমরা গরিব মানুষ ৷ ঋণ নিয়ে মেয়ের বিয়ে দিতে হয়েছে ৷ টাকাটা পেলে আমাদের খুব কাজে লাগত ৷ আমরা চাই, টাকাটা আমাদের দেওয়া হোক ৷ গোটা ঘটনা জানিয়ে আমি মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷"

মহকুমাশাসকের মন্তব্য

চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় জানান, ওই অভিযোগপত্র পাওয়ার পর পুরো ঘটনা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি ৷ তদন্ত চলছে ৷ কোনও সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details