কলকাতা, 31 জুলাই: মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে একই বিষয়ে প্রস্তাব রাজ্য বিধানসভায় কেন ? বুধবার রাজ্য বিধানসভায় ফৌজদারি তিন নয়া আইন নিয়ে প্রস্তাব সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই প্রশ্নই তুলল বিজেপি।
এদিন এই প্রস্তাবের উপর রাজ্য বিধানসভায় ছিল প্রথম দিনের আলোচনা। প্রথম দিন এই বিষয় নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা হয়। শাসক ও বিরোধী মিলে প্রথম দিনেই আটজন এই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় বক্তব্য রাখেন। তৃণমূলের তরফ থেকে প্রস্তাব আনেন মলয় ঘটক। তিনি ছাড়াও বক্তব্য রেখেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিধায়ক অপূর্ব সরকার মহম্মদ আলী এবং পান্নালাল হালদার। বিজেপির তরফ থেকে এদিন বক্তব্য রাখেন অম্বিকা রায়, অরূপ কুমার দাস এবং শঙ্কর ঘোষ।
আর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় প্রশ্ন তোলেন, "কয়েক মাস আগেই রাজ্য বিধানসভায় একই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ৷ তারপরও আবার কী এমন প্রয়োজন হলো, যে কারণে এই প্রস্তাব আনতে হল ?" তিনি আরও বলেন, "বিধানসভার প্রস্তাব আমি ভালোভাবে পড়েছি ৷ কেন্দ্রের আনা তিন আইনকে এখানে ড্রাকোনিয়ান বলা হচ্ছে। এর কোনও ধারা নিয়ে তাদের আপত্তি কোথায়, কেন তারা সংশোধন চাইছেন, তা নিয়ে অবশ্য বিশেষ কিছু বলা নেই প্রস্তাবে।"
অন্যদিকে, কান্দির তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, "এমন সময় এই আইন সংসদে পাশ করা হয়েছে যখন বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এই অবস্থায় আরও বিচার-বিশ্লেষণ করে এই প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।" তাঁকে এও বলতে শোনা গিয়েছে, "শুধু নাম পরিবর্তনের জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷ বহু ক্ষেত্রে এই নয়া তিন আইন পুরনো আইন থেকে হুবহু টুকে দেওয়া হয়েছে।"
অন্যদিকে, এদিন বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ এই প্রস্তাব নিয়ে বলেন, "এই বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার আগে 18টি রাজ্য, ছ'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, 15টি হাইকোর্ট, পাঁচটি জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি, 22টি ল'ইউনিভার্সিটি, 142 জন সাংসদ এবং 270 জন বিধায়কের মতামত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এই রাজ্য কী মতামত দিয়েছে তা বিধানসভায় টেবিল করে যদি এই আলোচনা হতো, তা হলে আরও ভালো হতো।"
বিজেপির মুখ্যসচেতক আরও বলেন, "পুরনো এই আইনগুলি তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশদের হাত ধরে মূলত ভারতবাসীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। ব্রিটিশ শাসকরা শাস্তি দিতে চাইতো বলেই এর নাম হয়েছিল দণ্ডবিধি। ব্রিটিশ কলোনিয়াল হ্যাংওভার থেকে আমরা ভারতীয়দের মুক্তি দিতে চাই। তাই এই আইন আনা হয়েছে। আমরা আর সাম্প্রতিক সময় ব্রিটিশ শাসকদের অন্তর্ভুক্ত নই। সে কারণেই এই আইন।" একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, "যে আইন কার্যকর হয়েছে তা আলোচনার ভিত্তিক হয়েছে।"
এর পালটা রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভট্টাচার্য বলেন, "আগে যখন এই প্রস্তাব আনা হয়েছিল, তখন তা ছিল বিল। যেহেতু আইনে রূপান্তরিত হওয়ার পর এই নিয়ে সংশোধনী আনা যায়। সে কারণেই এই প্রস্তাব। এই প্রস্তাব থেকে নতুন সরকারের কাছে এই তিন আইন নিয়ে পর্যালোচনার আবেদন জানানো হয়েছে।"