পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বাংলা এখন 'ধ্রুপদী' ভাষা, আপ্লুত বিশ্বভারতী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা - Classical Language Bengali - CLASSICAL LANGUAGE BENGALI

যদিও বিশ্বভারতীর অধ্যাপকরা মনে করছেন, বাংলা ভাষার এই স্বীকৃতি আগেই পাওয়া উচিত ছিল ৷ অন্যদিকে, এই স্বীকৃতিতে গর্বিত বোধ করছেন ওপার বাংলার অধ্যাপকরা ৷

Classical Language Bengali
'ধ্রুপদী' ভাষার স্বীকৃতিতে খুশি বাংলার অধ্যাপকরা (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 6, 2024, 10:07 PM IST

বোলপুর, 6 অক্টোবর: বাংলা ভাষাকে ভারত সরকার 'ধ্রুপদী' ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ায় আপ্লুত বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা ৷ দুই বাংলার মত, স্বীকৃতি পাওয়াটাই যথেষ্ট নয় ।

বাংলা ভাষার গরিমাকে ধরে রাখতে, আরও বেশি চর্চা ও সমৃদ্ধ করতে হবে ৷ বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের অবশ্য দাবি, আরও আগেই এই স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল ।

খুশি অধ্যাপক মহল (ইটিভি ভারত)

ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ তাঁর 'বাংলা' ভাষা মর্যাদা পাওয়া প্রসঙ্গে ইটিভি ভারতকে মতামত দিলেন দুই বাংলার দুই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা ।

বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে বলেন, "অত্যন্ত আত্মশ্লাঘার বিষয়। একজন বাঙালি হিসেবে গর্বেরও বিষয় যে ভারতে বাংলা ভাষাকে 'ধ্রুপদী' ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে । তবে আমি মনে করি বাংলা ভাষার সুদীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। ঋদ্ধ অগ্রগমণ রয়েছে । ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে বাংলা ভাষার যে স্বীকৃতি তাতে বাংলাদেশের একজন মানুষ হিসাবে আমাকে আনন্দিত করে । বাংলা ভাষা পড়ি ও পড়াই, তাই এই সংবাদ অত্যন্ত আনন্দের ।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (নিজস্ব ছবি)

বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপিকা হোসনে আরা বলেন, "নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষা ভারতে 'ধ্রুপদী' ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলার অধ্যাপক হিসেবে খুবই খুশি ৷ ভারতবর্ষের ভাষা সমূহের মধ্যে বাংলা ভাষা খুবই প্রাচীন। এর হাজার বছরের সংস্কৃতি আছে । লিখিত রূপ আছে । বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন হিসাবে চর্যাপদ রয়েছে । মধ্যযুগ থেকে শুরু হয়ে আধুনিককালেও বাংলা ভাষা নিজের বিশেষত্বের ছাপ রেখেছে । তাই ভারতে বাংলা ভাষাকে 'ধ্রুপদী' ভাষার মর্যাদা দেওয়া আনন্দদায়ক ৷"

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (নিজস্ব ছবি)

তবে বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অভ্র বসুর কথায়, "প্রথম কথা হল বাংলা ভাষার গুরুত্বটা ধ্রুপদী ভাষা হল কী হল না, তার উপর নির্ভর করে না ৷ রবীন্দ্রনাথের মতো কবি বাংলায় লিখেছেন ৷ তবে যে নিরিখে অন্যান্য ভাষাগুলো স্বীকৃতি পেয়েছে, সেই নিরিখে আরও আগেই বাংলা ভাষাও স্বীকৃতি পেতে পারত বা পাওয়া উচিতই ছিল ।"

বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তথা বিভাগীয় প্রধান মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমার অনুমতি মিশ্র ধরনের । বাংলা ভাষা যে স্বীকৃতি পেল, তা অনেক আগেই পাওয়া উচিত ছিল বলে আমার মনে হয় ৷ তবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আমি খুশি ৷ তবে এই স্বীকৃতি পাওয়াটাই কি বাংলা ভাষার ভবিষ্যতের জন্য যথেষ্ট? ভারতে হিন্দির মতো প্রভাবশালী ভাষাগুলির চাপ সইতে হয় প্রাদেশিক ভাষাগুলিকে । কাম্য হচ্ছে, প্রাদেশিক ভাষাগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিকাশ লাভ করুক ৷ বাংলা ভারতের ক্ষেত্রে একটা প্রাদেশিক ভাষা । কিন্তু, বাংলাদেশের এটি রাষ্ট্রভাষা । তাই বাংলা ভাষার যদি সঠিক চর্চা করতে হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ ভাষাচুক্তির দরকার আছে বলে মনে করি ।"

প্রসঙ্গত, 2004 সাল থেকে ভারতবর্ষে 'ধ্রুপদী' ভাষার স্বীকৃতির কাজ শুরু হয় ৷ প্রথম তামিল ভাষাকে 'ধ্রুপদী' ভাষার তকমা দেওয়া হয় ৷ পরবর্তীতে কী কী মাপকাঠিতে 'ধ্রুপদী' ভাষার তকমা দেওয়া হবে, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে 2005 সালে বেশ কিছু নিয়মাবলির বদল করা হয় ৷ 2008 সালে তেলেগু ও কন্নড় ভাষাকে 'ধ্রুপদী' ভাষা হিসাবে বেছে নেওয়া হয় ৷ 2013 সালে মালায়লাম ও 2014 সালে ওড়িয়া ভাষা 'ধ্রুপদী' ভাষার তকমা পায় । অর্থাৎ, ভারতবর্ষে এই 5টি ভাষা ছিল 'ধ্রুপদী' ভাষা ৷ এবার বাংলা-সহ মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, অসমিয়া ভাষাকে 'ধ্রুপদী' ভাষার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details