কলকাতা, 19 নভেম্বর: আদিবাসী এলাকায় জমির দখল হয়ে যাচ্ছে ৷ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আইন করে আদিবাসীদের জমির অধিকার দেওয়ার পরেও বেআইনিভাবে এই দখলদারি চলছে । সোমবার নবান্নে আদিবাসী উপদেষ্টা মণ্ডলীর বৈঠকে অধিকাংশ প্রতিনিধিদের তরফ থেকে এই অভিযোগ পাওয়ার প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আদিবাসী এলাকায় জমি অধিকার একমাত্র আদিবাসীদের। তাঁদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বিধানসভায় বিল এনে আইন পাস করেছে ৷ এরপরেও জমি দখলের এই প্রবণতা যে কমছে না, আরও একবার এদিনের বৈঠকে অনেকের অভিযোগ থেকেই তা পরিষ্কার ৷ এদিন বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বার্তা দিয়েছেন, কোনও ভাবেই আদিবাসীদের জমি বেহাত হওয়া বরদাস্ত করবে না এই সরকার। এক্ষেত্রে এই অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিন এই বৈঠক থেকেই আদিবাসীদের ভাষা এবং সংস্কৃতির বিকাশে একটি কমিটি গঠনের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে রাজ্যের চার মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, বুলু চিক বড়াইক, জোৎস্না মান্ডি এবং সন্ধ্যা রানি টুডুকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা গুলিতে মানুষের উন্নয়নের জন্য কি কি কাজ করা যায় তা পর্যালোচনার জন্য। একইভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত জেলার জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি করে আদিবাসী এবং জনজাতিদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে কর্মসংস্থান এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে হোম-স্টে উপর বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেও এদিন বৈঠকের উপস্থিত প্রতিনিধিদের তরফ থেকে দাবি করা হয়, রাজ্য সরকার হোম-স্টে তৈরির বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিলেও বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ধরনের সরকারি প্রকল্পে আদিবাসীরা লাভবান হচ্ছেন না। বদলে বাইরের কিছু সুবিধাবাদী মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এই বিষয়ে যাতে আদিবাসীরা সুযোগ বেশি করে পায় সে বিষয়ে নজর দিতে। কারণ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ল্যামসের মাধ্যমে আদিবাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিক সাহায্য করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, এর ফলে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে একদিকে যেমন পর্যটনের বিকাশ হবে, একইসঙ্গে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
এদিন আদিবাসী উপদেষ্টা মণ্ডলীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক বিভাজন চাননি। আর সে কারণেই সমস্ত রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু বিজেপির দুই জন প্রতিনিধি খগেন মুর্মু এবং এবং দশরথ তিরকে আমন্ত্রিত হলেও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, মানুষের উন্নয়নের জন্য, আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সরকারের দরজা সবসময় খোলা। সেখানে কোন রং দেখা হবে না। এক্ষেত্রে যারা আসতে চান, তাদের সবাইকে স্বাগত।