কলকাতা, 20 অগস্ট: সুপ্রিম নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে চিকিৎসকরা কাজে ফিরুন । অনুরোধ তৃণমূল কংগ্রেসের । মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে করা এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই অনুরোধ করেন দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ও নেতা কুণাল ঘোষ । একই সঙ্গে আরজি করের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়েও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে তৃণমূল ।
এ দিন কুণাল ঘোষ জানান, চিকিৎসকরা আবার কাজে যোগ দিন । স্বাস্থ্য পরিষেবা আবার সচল হোক । সুপ্রিম কোর্ট যখন নিজে শুনানি করেছে, নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপের কথা বলেছে, বিচারপতিরা তাঁদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন । এরপরেও কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার অর্থ সুপ্রিম কোর্টকে অবমাননা করা । বহু চিকিৎসক এমন রয়েছেন যাঁরা উদয়াস্থ কাজ করছেন । বহু চিকিৎসক এমন রয়েছেন যাঁরা কাজ করার ইচ্ছা থাকলেও চাপে পড়ে যেতে পারছেন না । আবার অনেকেই আছেন কাজ করছেন না, কাজ করতে দিচ্ছেন না ৷
এটা কেন চলবে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ? কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অরাজকতা তৈরি হলে পুরো চাপটা রোগীদের ওপর এসে পড়বে । ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় চিকিৎসা না পেয়ে রোগীমৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে ।’’ সেই জায়গা থেকেই বিষয়টিকে বিবেচনার আবেদন করেছেন তিনি ৷
কুণাল আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যখন সারা দেশের চিকিৎসকদের সুরক্ষাকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে, সুপ্রিম কোর্টের থেকে আবেদন করা হয়েছে যে আপনারা এবার কাজে যোগ দিন । সেই সময় যদি সুপ্রিম কোর্টের এই আবেদন অমান্য করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে এর পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে ।’’
এ দিন একইভাবে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত কতিপয় চিকিৎসকের । সামগ্রিকভাবে রাজ্যের পুরো চিকিৎসক সমাজের এই দাবি নয় । চিকিৎসকরা কখনোই বলতে পারেন না, আমরা অসহায় মানুষের চিকিৎসা করব না । তার বদলে আমরা রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করব । আপনারা জাস্টিসের কথা বলছেন, জাস্টিসের জন্যই তো সুপ্রিম কোর্ট । সুপ্রিম কোর্ট এই জাস্টিস দিতেই একাধিক পদক্ষেপের কথা বলছে । তাহলে যাঁরা জাস্টিস চাইছেন, তাঁদের সুপ্রিম কোর্টের উপর বিশ্বাস নেই ।’’
আরজি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনকে কলকাতা পুলিশের উপর অনাস্থা বলে মনে করছে না তৃণমূল । এই প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে অবস্থা কিছুটা স্পর্শকাতর হয়ে রয়েছে । বেশ কিছু রাজনৈতিক দল তাদের গুন্ডা বদমাইশ নিয়ে আরজি করে সেদিন ভাঙচুর করেছিল । এভাবে এক জায়গায় জমায়েত হয়েছিল এত লোক । মহিলারা রাতে একত্রিত হয়েছিলেন রাতটা তাঁদের এই দাবিতে । শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা প্রতিবাদ করছিলেন । সেই সময় এত লোক এক জায়গায় হয়ে আরজিকরকেই টার্গেট করা এবং সেখানে ভাঙচুর করা, সেই ঘটনা তো সামনে এসেছে । এই অবস্থায় আমাদের মনে হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট এই ঘটনা দেখে একটা পদক্ষেপ করেছে, যাতে এই বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।’’
জয়প্রকাশ আরও বলেন, ‘‘এই অবস্থায় যতদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসছে, ততদিন যদি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা থাকে অসুবিধা কোথায় ! আসলে বিরোধীরা চাইছে পুলিশ গুলি চালাক । যাতে একে সামনে রেখে আরও একবার অস্থিরতা তৈরি করা যায় । এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট মনে করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা ভালো ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী আরজি করকে কিছুদিন পাহারা দিক । সেখানে আর যাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে না পারে, তাই এই পদক্ষেপ ।’’