পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

অচলাবস্থা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে, দ্বৈরথে তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু ও ছাত্র সংগঠন - Deadlock in Kazi Nazrul University - DEADLOCK IN KAZI NAZRUL UNIVERSITY

Deadlock in Kazi Nazrul University: অচলাবস্থা এখনও চলছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ সেখানে তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে দ্বৈরথ শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে ৷ চিন্তায় পড়ুয়া ও অভিভাবকরা ৷

ETV BHARAT
অচলাবস্থা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে (নিজস্ব চিত্র)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 16, 2024, 7:03 PM IST

আসানসোল, 16 জুলাই: অচলাবস্থা অব্যাহত আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ গত সাতদিন ধরে সেখানে আন্দোলন চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ । বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের দফতরে তালা লাগিয়ে আন্দোলন চলছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । টিএমসিপি-র দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় যে সমস্ত মামলা চলছে তা চালানো যাবে না । আন্দোলনের সপ্তম দিনে টিএমসিপি-র এই আন্দোলনের বিরোধিতা করল সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সংগঠন ।

অচলাবস্থা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক-কর্মচারীরা মঙ্গলবার তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের এই আন্দোলনের বিরোধিতায় নামে এবং উপাচার্যের দফতরের তালা ভেঙে দেয় । এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে এই উত্তেজনায় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা । কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরাও ।

গত সাত দিন ধরে আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যাপক আন্দোলন চলছে । তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলন চলছে । অভিনব মুখোপাধ্যায় স্পষ্টত জানিয়েছিলেন, "কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা নিয়ে নিজেদের ক্ষমতা দখলের জন্য মামলা করা হচ্ছে হাইকোর্টে । এই টাকাকে নষ্ট করা হচ্ছে । মামলার খাতে নয়, ছাত্রছাত্রীদের উন্নতির জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য এই টাকা খরচ হোক ।"

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, কত টাকা খরচ করা হয়েছে মামলা খাতে, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা না-হলে এই আন্দোলন চলবে । সেইমতো তারা উপাচার্যের দফতরে তালা মেরে দেয় । তালা দিয়ে দেওয়া হয় রেজিস্ট্রারের দফতরেও । গত সাতদিন ধরে এই আন্দোলন চললেও উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি । অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাঁকে গেট থেকে ফিরিয়ে দেন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা ।

মঙ্গলবার এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে তৃণমূলেরই অশিক্ষক কর্মচারী সংগঠন । তৃণমূলে শিক্ষাবন্ধু সংগঠনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্লোগান দেওয়া হয় । আর সেই স্লোগান পালটা স্লোগানের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । এরপর কলেজের অশিক্ষক-কর্মচারীরা ভাইস চ্যান্সেলরের দফতরে যে তালা দেওয়া ছিল সেই তালা ভেঙে দেন । পাশাপাশি অশিক্ষক কর্মচারীদের এই আন্দোলনের পাশাপাশি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আন্দোলনের বিরোধিতা করেন অভিভাবকরাও ।

কলেজের অশিক্ষক কর্মচারী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "বহিরাগতদের এনে এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়কে চালাতে দেওয়া হচ্ছে না । যে সময় ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নেওয়ার সময় সেই সময় এই ধরনের আন্দোলন করে প্রশাসনিক কাজকর্ম ও সমস্ত কিছু স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে । এছাড়াও কলেজের অশিক্ষক-কর্মচারী এবং মহিলাদের হেনস্থা পর্যন্ত করা হয়েছে । এই জিনিস চলতে পারে না ।

অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "ছাত্রছাত্রীরা কেউই বহিরাগত নন । তাঁরা সবাই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় সঠিক অর্থে চলুক । কিন্তু যে টাকা মামলা খাতে খরচ করা হয়েছে, সেই টাকার হিসেব দিতে হবে । যতক্ষণ উপাচার্য শ্বেতপত্র প্রকাশ না-করেন এই আন্দোলন আমরা চালিয়ে যাব ।"

কী হবে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ, তা নিয়ে চিন্তিত পড়ুয়ারা এবং অভিভাবকরা ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details