মালদা, 16 অগস্ট:গঙ্গা ভাঙন আর বন্যার সাঁড়াশি আক্রমণে জর্জরিত মালদা জেলা ৷ গঙ্গার ভাঙনে বিপন্ন রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের কান্তটোলা ও শ্রীকান্তটোলা গ্রাম ৷ দু’টি গ্রামই অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে ৷ অন্যদিকে গঙ্গার জল বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিয়েছে মানিকচক ব্লকের ভূতনি চরের বিস্তীর্ণ এলাকা ৷ বানভাসি এক লাখেরও বেশি মানুষ ৷ গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শুক্রবার গঙ্গার জলস্তর চূড়ান্ত বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে ৷
মালদায় গঙ্গা ভাঙনে বিপজ্জনক পরিস্থিতি (ইটিভি ভারত) এই পরিস্থিতিতে রতুয়ার দুই বিপন্ন গ্রাম পরিদর্শন করলেন তৃণমূলের দুই বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি ও সমর মুখোপাধ্যায় ৷ এই বিপর্যয়ের দায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং এলাকার বিজেপি সাংসদের উপর চাপিয়েছেন রহিম সাহেব ৷ সাংসদকে এলাকায় বেঁধে রাখার নিদান দিয়েছেন ৷ পালটা রহিম সাহেব-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন সাংসদ খগেন মুর্মু ৷
নদীর বিপদ সীমায় বইছে ৷ ইতিমধ্যে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বিপন্ন দু'টি গ্রাম ৷ এদিনই কান্তটোলা ও শ্রীকান্তটোলা পরিদর্শনে যান মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি ও রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁরা যথাক্রমে তৃণমূলের মালদা জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যান ৷ এছাড়াও ছিলেন রতুয়া 1 নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অজয়কুমার সিনহা ৷
এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি বলেন, "এবার গঙ্গার ভাঙনে মহানন্দটোলার বেশ কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে কান্তটোলা ৷ শুধু রতুয়া 1 নম্বর ব্লকই নয়, মানিকচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর এলাকাতেও গঙ্গার আগ্রাসনে বহু গ্রাম বিপন্ন ৷ সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করছে ৷ মানুষকে ত্রাণ দিচ্ছে ৷ গঙ্গা ভাঙন জাতীয় বিপর্যয় ৷ এর সমস্ত দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ কেন্দ্রকে বারবার বলা হলেও তারা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না ৷ কেন্দ্র যদি ভাঙন রোধে কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তবে গোটা মালদা জেলাটাই শেষ হয়ে যাবে ৷ আশ্চর্যের বিষয়, এই এলাকার সাংসদ বিজেপির ৷ এখানকার মানুষ তাঁকে ভোট দিয়েছে ৷ অথচ তিনি একবারের জন্যও ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকায় আসেননি ৷ আমি এখানকার মানুষকে বলব, সাংসদ এখানে এলে তাঁকে যেন সবাই বেঁধে রাখেন ৷ কেন্দ্রের সহযোগিতা না আসা পর্যন্ত তাঁকে যেন ছাড়া না হয় ৷"
তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্যের বিরুদ্ধে সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, "উনি যেটা বলেছেন সেটা ওঁর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ৷ ওকেই বেঁধে রাখা উচিত ৷ রাজ্য সরকারের উচিত, ভাঙন রোধের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা ৷ এটা রাজ্যের দায়িত্ব, কেন্দ্রের নয় ৷ রাজ্য যদি সেই খরচ করতে না পারে তবে কেন্দ্রের সাহায্য নিতে পারে ৷ তার জন্য তাদের কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে ৷ কিন্তু এমন একটি চিঠিও রাজ্যের তরফে কেন্দ্রের কাছে যায়নি ৷ মমতা কেন্দ্রের অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখুন ৷ ওই চিঠির একটা জেরক্স পেলেই আমি নিজের দায়িত্বে কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসব ৷ কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রকে বরাদ্দ পকেটে ভরতেই আজ রহিম সাহেবরা ভাঙন এলাকায় গিয়েছেন ৷"