সিঙ্গুর (হুগলি), 18 অক্টোবর: একসময় ধর্মতলায় 26 দিনের অনশন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই অনশন মঞ্চে একদিনের জন্যও যাননি বলে শুক্রবার দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা ৷ শুক্রবার হুগলির সিঙ্গুরে প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটার স্মরণে এক মিছিল করা হয় বিজেপির তরফে ৷ সেই মিছিল থেকেই এই কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷
উল্লেখ্য, বাম আমলের শেষের দিকে হুগলির সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীকে গাড়ি তৈরির কারখানা গড়তে জমি দেওয়া হয় ৷ বিক্ষুব্ধ জমিদাতাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই নিয়ে ধর্মতলায় 26 দিন অনশন করেন তিনি ৷ যদিও অনেকে অভিযোগ করেন যে প্রকাশ্যে অনশন চালালেও গোপনে খাওয়া-দাওয়া করতেন মমতা ৷
ধর্মতলায় মমতার অনশন মঞ্চে একদিনও যাইনি, দাবি শুভেন্দুর (ইটিভি ভারত) সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তাররা যে অনশন-আন্দোলন শুরু করেছেন, তার প্রেক্ষিতে এই মমতার অনশনের প্রসঙ্গ বারবার উঠে আসছে ৷ আর সেই সময়ের কথা শুক্রবার উত্থাপন করলেন স্বয়ং বিরোধী দলনেতা ৷ যিনি তখন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিধায়ক ছিলেন ৷
এ দিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘একমাত্র তৃণমূলের বিধায়ক যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্যান্ডুইচ আর চকোলেট খাওয়া অনশনে যাইনি ৷ আমার দম আছে ৷ তাই আজ অকথিত তথ্য আপনাদের বললাম ৷ সিঙ্গুরে টাটার কারখানার বিরোধিতা করা, মুখ ফুটে বলতে পারিনি, দলের মধ্যেই ছিলাম, কিন্তু এই ধ্বংসযজ্ঞ শরিক হইনি ৷ 26 দিন ধর্মতলার অনশনে 30 জন বিধায়ক ছিলেন ৷ আমি একমাত্র বিধায়ক যে একদিনও যাইনি, একঘণ্টার জন্যও যাইনি ৷’’
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানা হয়নি ৷ সেই কারখানা চলে যায় গুজরাতের সানন্দে ৷ বাংলা ছাড়ার আগে পুরো দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়েই চাপিয়ে গিয়েছেন রতন টাটা ৷ তাই রতন টাটার প্রয়াণের পর সেই প্রসঙ্গ আরও একবার প্রাসঙ্গিক করতে শুক্রবার আসরে নেমেছিল বিজেপি ৷ তারা এ দিন সিঙ্গুরের গোপালনগর সাহানাপাড়া মোড় থেকে মিছিল করে ৷ বাঙালি হিসেবে রতন টাটার কাছে ক্ষমা চাইতেই এই কর্মসূচি বলে দাবি করেন শুভেন্দু ৷
সিঙ্গুরে প্রয়াত রতন টাটার স্মরণে মিছিল বিজেপির (নিজস্ব চিত্র) সেই কর্মসূচি থেকেই অনশন প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা জানান, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে হাতে পায়ে ধরে টাটা গোষ্ঠীকে এই রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য রাজি করানো হবে ৷ কারণ, সব শিল্পক্ষেত্রেই টাটাদের অবাধ বিচরণ রয়েছে ৷ তাছাড়া প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এপিজে আব্দুল কালামের পর সবাই রতন টাটাকে শ্রদ্ধা করেন ৷ সবাই ইতিবাচক কথা বলেন৷ কেউ নেতিবাচক কথা বলেন না ৷ রতন টাটা সত্যিকারের রাষ্ট্রবাদী ছিলেন বলেও শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন ৷
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, শিল্পায়ন ছাড়া রাজ্যের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান হতে পারে না ৷ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি সব শিল্প নিয়ে যাচ্ছ ৷ সাফল্য পাচ্ছে ৷ শিল্পায়ন হলে রাজ্যের রাজস্ব বাড়বে ৷ তখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্পে অর্থ বৃদ্ধি করা যাবে ৷