আসানসোল, 5 সেপ্টেম্বর:ডিসেরগড়ে দামোদর নদের পাশেই মাজার শরিফ । পাশেই বহু বছর আগে গড়ে উঠেছিল একটি ফকির বস্তি । এখানকার বাসিন্দাদের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা ৷ তাই বস্তির ছেলেমেয়েদের কাছে শিক্ষা বিলাসিতা মাত্র । কিন্তু এই বস্তির শিশুদের জীবনে শিক্ষার আলো আনতে মাজার শরিফের সুফি সাহেব তৈরি করেছিলেন একটি স্কুল ৷ সুফি সাহেবের মৃত্যু হয়েছে । সেই স্কুল আজও চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক বিকাশ প্রসাদ । মাত্র এক টাকা বেতনে পড়ার সুযোগ মেলে এই স্কুলে ৷
মূলত ফকির বস্তির বাসিন্দাদের পেশা ছিল ভিক্ষে করা কিংবা মাজার শরিফে চাদর ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করা । কেউ কেউ ছাতা সারাইয়ের কাজ করতেন । কিন্তু গরিব পরিবারগুলিতে শিক্ষার আলোয় পৌঁছয়নি । পাশাপাশি ওই এলাকায় কোনও সরকারি স্কুলও ছিল না । ফলে ওই পরিবারগুলির শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আস্বাদ পায়নি । আর এটা অনুভব করেই 2008 সালে মাজার শরিফের সুফি সাহেব মাজারের পাশেই একটি স্কুল তৈরি করেছিলেন । যাতে ফকির বস্তির ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার আলোয় আসতে পারে ।
অন্যদিকে ওই এলাকাতেই ছাত্রছাত্রীদের বিনা পয়সায় গৃহ শিক্ষকতার পাঠ দিতেন এলাকার শিক্ষিত যুবক বিকাশ প্রসাদ । তাই তাঁকে ডেকে সুফি সাহেব ওই স্কুলের দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে আপার প্রাইমারি স্কুলের অনুমোদন পায় স্কুলটি ৷ বর্তমানে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয় ওই স্কুলে । সেখানে এলাকারই শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা ওই স্কুলে স্বল্প বেতনে কাজ করেন । ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয় মাত্র এক টাকা । পাশাপাশি কিছু সমাজসেবীর দানে ওই স্কুল কোনওরকম ভাবে চলছে ।