খড়গপুর, 10 ডিসেম্বর:বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বললেই মাথায় আসে হুইল চেয়ার ৷ তাতে বসেই গোটা বিশ্বে নিজের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন তিনি ৷ বিস্ফোরণের তত্ত্ব, ব্ল্যাক হোল আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স-সহ স্থান-কালের এককতা আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ওই বিজ্ঞানী ৷ ঠিক তেমনই এক বিস্ময় বালকের খোঁজ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে ৷
তাঁর নাম তুহিন দে ৷ বয়স 25 বছর ৷ বিশেষভাবে সক্ষম তুহিনের কাছে সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে এসেছিল 50 লক্ষ টাকার চাকরির প্রস্তাব । তবে তুহিন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি । কারণ তাঁর লক্ষ্য যে আরও বড় ৷ তিনি আইআইটি খড়গপুর থেকে এমটেক এবং পিএইচডি করতে চান । সেই দিকেই বর্তমানে ধ্যান-জ্ঞান তুহিনের ৷
হুইল চেয়ারে বসে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন
তবে তুহিন দে'র পড়াশোনা থেকে 25 বছরের জীবনের সফরটা মোটেও সহজ ছিল না ৷ খড়গপুরের মালঞ্চের বাসিন্দা এই বিশেষভাবে সক্ষম যুবক ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তুহিনের হাতে-পায়ে তেমন জোর নেই ৷ জন্মের মাত্র চার দিনের মধ্যেই তাঁর ধরা পড়ে বিরল মাংসপেশির রোগ । তিনি আর্থ্রোগ্রিপোসিস মাল্টিপ্লেক্স কনজেনিটাল নামক রোগে আক্রান্ত ৷ আর তাতে দু'পায়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো সামর্থ্য হারান তুহিন । শুধু তাই নয়, প্রায় অবশ হতে বসা শরীরে হাত দিয়েও কোনও কিছু করার মতো শক্তি নেই তাঁর ৷ তাই বড় হওয়ার পর হুইল চেয়ারই একমাত্র সম্বল হয়ে ওঠে তুহিনের ।
ছোটবেলায় একাধিক জায়গায় চিকিৎসা হয় তুহিন দে'র ৷ তবে কোনও চিকিৎসকই তাঁকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারেননি । কিন্তু মনের জোর প্রবল তুহিনের ৷ সেই মনের জোরেই তো 'বিশ্বজয়' করার তাগিদ অনুভব করেন তিনি । ছেলের একাগ্রতা এবং ইচ্ছেকে প্রাধান্য দেন বাবা সমীরণ দে ও মা সুজাতা দে ৷ হাল ছাড়েননি মেদিনীপুরের পেশায় ব্যবসায়ী সমীরণ ও তাঁর গৃহবধূ স্ত্রীও । তাঁরা একমাত্র ছেলে তুহিনের এই 'অসম' লড়াইয়ে 'মেরুদণ্ড' হয়ে দাঁড়ান ৷
অক্ষমতাকে শক্তি করেন যুবক