হুগলি, 25 জানুয়ারি: 'বঙ্গকুল-লক্ষ্মী মোরে নিশার স্বপনে, কহিলা- 'হে বৎস, দেখি তোমার ভকতি, সুপ্রসন্ন তব প্রতি দেবী সরস্বতী! নিজ গৃহে ধন তব, তবে কি কারণে ভিখারী তুমি হে আজি, কহ ধন-পতি? কেন নিরানন্দ তুমি আনন্দ-সদনে?' মাতৃভাষাকে বাংলা সাহিত্যে যিনি অন্যরকম ব্যবহার শিখিয়েছিলেন তিনি অমৃতাক্ষর ছন্দের জন্মদাতা মাইকেল মধুসূদন দত্ত ৷ হুগলির উত্তরপাড়ার লাইব্রেরিতে জীবনের বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন মাইকেল ৷ তাঁর জন্মতিথিতে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রদশর্নী শালার ৷
উত্তরপাড়ার লাইব্রেরির টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট অর্পিতা চক্রবর্তী বলেন "এখানে রাজা জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের সক্ষতা সর্বজন বিদিত। মাইকেল মধুসূদন দত্ত জয় কৃষ্ণ লাইব্রেরীতে দু'বার এসেছেন 1869 ও 1873 সালে । প্রথমে একা আসাকালীন তিনমাস ছিলেন। দ্বিতীয়বার সস্ত্রীক তিনি ছয় সপ্তাহ ছিলেন। জীবনের অন্তিম দিনে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে কষ্টকর অধ্যায় কাটিয়ে ছিলেন তিনি।"
অর্পিতা জানান, উত্তরপাড়া লাইব্রেরী ও পৌরসভার উদ্যোগে মাইকেল মধুসূদন দত্তের দু'শত জন্মতিথি পালন করা হচ্ছে। কোনও তথ্য প্রমাণ না পাওয়া গেলেও উত্তরপাড়ায় থাকাকালীন বেশ কিছু কবিতা ও নাটক লিখেছেন বলা জানা যায়। ট্রাস্টি ও সরকারি অধিগ্রহণের সময় বেশ কিছু টালবাহানার জন্য অনেক কিছু তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে মাইকেল মধুসূদনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও বাসনপত্র স্বযত্নে রাখা আছে। তার অনুরাগীরা এলে তাঁদের দেখানো হয়।
বাংলা সাহিত্যে দিশা দেখিয়েছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সাহিত্যিকের জন্মদিনের দু'শত বছর পর তাঁকে ঘিরে উচ্ছাস অনেকটাই মলিন হয়ে গিয়েছে। সাহিত্যিক বাসুদেব ঘটক আক্ষেপ করে বলেন, "মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মদিনে সারা বাংলায় আলোড়ন পরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই রকম কিছু হয়নি। সেই সময় মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যকে আক্ষরিক অর্থে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। বাংলা কাব্যে অমৃতাক্ষর ছন্দের ব্যবহার অন্যান্য সাহিতিককে উদ্বুদ্ধ করছিল।" কিন্তু সেই সাহিত্যিককে নিয়ে বাংলায় কোনও উচ্ছাস নেই বলে আক্ষেপ বাসুদেব ঘটকের।