দক্ষিণেশ্বর, 6 ডিসেম্বর: স্কুল প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে চরম পদক্ষেপ নিলেন এক শিক্ষিকা। বাড়িতেই গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে তাঁর দেহ ৷ তার আগে অবশ্য তিনি সোশাল মিডিয়ায় নিজের বক্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার বরানগরে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিক্ষিকার নাম জসবীর কৌর (58)। যদিও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি স্কুল কর্তৃপক্ষের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষিকা জসবীরের বাড়ি দক্ষিণেশ্বর থানার বরানগর মাতৃমন্দির লেনে। তিনি ডানলপ ব্রিজ সংলগ্ন খালসা মডেল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের কিন্ডারগার্টেন বিভাগে শিক্ষকতা করতেন। 2003 সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ওই স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগ দেন ৷ শেষ পাঁচ বছর ধরে স্কুলের নতুন পরিচালন কমিটি ও প্রিন্সিপালের বিভিন্ন অনিয়ম প্রকাশ্যে আসে। জসবীর সে সব নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। শিক্ষিকাদের মধ্যে জসবীর ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়তে থাকেন।
বৃহস্পতিবার রাতে সে সব নিয়ে ওই শিক্ষিকা সোশাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করেন। ওই ভিডিয়োয় তিনি জানান, স্কুলে বিভিন্নভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের চাপে ক্রমশ তাঁকে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছিল। সুবিচারের জন্য তিনি অনেকের কাছেই আবেদন করেছেন। কিন্তু, তাতে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি।
ভিডিয়ো বার্তায় জসবীর আরও জানান, স্কুলের পরিচালন কমিটি নানা অছিলায় বাড়তি টাকা নেওয়া শুরু করেছিল অভিভাবকদের কাছ থেকে। তার প্রতিবাদও করেছিলেন তিনি। তাঁর সেই প্রতিবাদ ভালোভাবে নেয়নি স্কুল পরিচালন কমিটি। অভিযোগ, তাঁকে ডেকে বারবার হেনস্থা করা হচ্ছিল। লাগাতার হেনস্থায় স্কুলে ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়েছিলেন জসবীর।
ভিডিয়ো বার্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ তুলে ধরে চরম সিদ্ধান্ত নেন ওই শিক্ষিকা। বৃহস্পতিবার রাতে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশ। পরে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। মৃত্যুর আগে শিক্ষিকার পোস্ট করা একের পর এক ভিডিয়ো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং পরিচালন কমিটির সদস্যদের পুলিশ ডেকে পাঠাতে পারে বলে খবর সূত্রের।