কলকাতা, 23 ফেব্রুয়ারি: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ৷ গত বছরের 9 অগস্ট উদ্ধার হয় চিকিৎসক-পড়ুয়ার নিথর দেহ ৷ জানা যায়, ধর্ষণ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে ৷ তারপর উত্তাল হয়েছে রাজ্য ৷ প্রতিবাদ রাজ্য-দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে ৷ খুন-ধর্ষণে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের শাস্তিও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ৷ তারমধ্যেই বিস্ফোরক মৃত চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা-মা ৷
তাঁদের অভিযোগ, মেয়ের নির্মম ধর্ষণ-হত্যার পর কেটে গিয়েছে ছ’মাস ৷ তারপরেও মেয়ের ‘মৃত্যু সনদ’ (ডেথ সার্টিফিকেট) পাননি তাঁরা ৷ সার্টিফিকেট চাইলেই একে ওপরের ঘাড়ে দায় আরজি কর কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা পুরনিগম ৷ কেএমসি জানাচ্ছে, মৃত্যুর স্থান আরজি কর হাসপাতাল ৷ ফলে ওই সার্টিফিকেট দেওয়ার দায়ও তাদের ৷ অন্যদিকে আরজি কর কর্তৃপক্ষ বলছে, যদি কোনও রোগী হাসপাতাল প্রাঙ্গণের মধ্যে মারা যান বা তাঁকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়, তাহলে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষকেই ডেথ সার্টিফিকেট দিতে হবে । এই টানাপোড়েনেই মেয়ের মৃত্যুর ছ’মাস কেটে গেলেও ডেথ সার্টিফিকেট পাননি তাঁরা ৷
শুধু তাই নয়, আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন মৃত চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাবা-মা ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও ডেথ সার্টিফিকেট হাতে না-পেলেও আদালতের নথিতে তাঁর উল্লেখ রয়েছে ৷ আরজি কর হাসপাতালের এই মেডিক্যাল অফিসারের বক্তব্য অনুযায়ী ডেথ সার্টিফিকেটের উল্লেখ রয়েছে ৷ আদালতের নথিতে ডেথ সার্টিফিকেটের উল্লেখ থাকলেও তাঁদের কেন হাতে তার কোনও কপি দেওয়া হয়নি ?
প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদা আদালত ৷ 9 অগস্টের ঘটনার 5 মাস 11 দিনের মাথায় সোমবার এই সাজা ঘোষণা করেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ৷ তিনি জানান, যেহেতু এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ নয়, সেজন্য সঞ্জয়কে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়নি ৷ তাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হচ্ছে ৷ অর্থাৎ যতদিন সে বেঁচে থাকবে, ততদিন তাকে কারাগারে থাকতে হবে ৷ পাশাপাশি 17 লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 64 (ধর্ষণ) নম্বর ধারা, 66 (ধর্ষণের পর মৃত্যু) নম্বর ধারা এবং 103 (1) (খুন) নম্বর ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ।