কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক, যাঁরা কর্মবিরতিতে রয়েছেন তাঁদের দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দেয় দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। কেন জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরা প্রয়োজন, সেই কারণ দর্শাতেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে সে রকম কয়েকটি পরিবারের সদস্যরাও এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
কোন্নগরের বিক্রম ভট্টাচার্য এবং রিষড়ার রাজিব দেব, এই দুজন চিকিৎসার অভাবে মারা যান। বিক্রম ভট্টাচার্যর মা কবিতা ভট্টাচার্য জানান যে, আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়েছিল তাঁর ছেলে। আর সেই আড়াই ঘণ্টা পরিবারের লোক হাসপাতালের এক বিভাগ থেকে আর এক বিভাগে দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
দেগঙ্গার 38 বছর বয়সী সফিকুল ইসলামের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলেই দাবি করেছে তাঁর পরিবার। তাঁর পরিবারের সদস্য জানান যে, পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন সফিকুল ইসলাম। এরপর তাঁকে গ্রামীণ হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখান থেকে তাঁকে ফেরানো হয় এই বলে যে, গ্রামীণ হাসপতালে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাঁকে শহরের হাসপতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর শহর কলকাতায় সারা রাত এক সরকারি হাসপাতাল থেকে আর একটি হাসপতালে ছোটাছুটি চলে। সর্বত্রই শুনতে হয় ধর্মঘট চলছে কিংবা চিকিৎসক নেই। অবশেষে পরেরদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে অনেক খরচ করে ভর্তি করেও শেষ রক্ষা হয়নি। মারা যান সফিকুল ইসলাম।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তনী, চিকিৎসক সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, "আমি আমার সহপাঠীদের একটাই অনুরোধ করব যে, আপনারা কাজে ফিরে আসুন ৷ কারণ, বিনা চিকিৎসায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন ।" তিনি জানান, জুনিয়র চিকিৎসকরা যে হাউজ স্টাফশিপ করেন, সেই জন্য তারা সরকারের থেকে একটা মোটা স্টাইপেন্ড পান। এছাড়াও তিনি দাবি করেন যে, জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেছেন যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার জুনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন আর 93 হাজারের কিছু বেশি সিনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন। আসলে এটা ঠিক তথ্য নয় ৷ কারণ, অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করা থাকলেও এদের মধ্যে অনেকেই প্রাইভেট চিকিৎসা করেন ৷ কেউ আবার মারা গিয়েছেন। চিকিৎসক সিদ্ধার্থ গুপ্তর দাবি, জুনিয়র চিকিৎসকরা যে দাবি করছেন সেটা সর্বইব ভাবে সত্য নয় ।